পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রফতানিমুখী উৎপাদন খাতকে আগামী এক বছরের জন্য ঋণের সুদ মওকুফ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স। এছাড়া শিল্প-কারখানার মালিকরা যেন যথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে পারেন, সেজন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে কাজে লাগিয়ে এক শতাংশ সুদে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানাগুলোর জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনেরও পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান পুনঅর্থায়ন তহবিলের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘স্বল্প সুদের এমএসএমই অর্থায়ন সুবিধা’ তৈরি করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। এছাড়া অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত রক্ষায় বাণিজ্যিক ভাড়া, বিদুৎ বিল, গ্যাস ও পানির ব্যবহার এবং লাইসেন্স নবায়নের ওপর আগামী এক বছর পর্যন্ত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
ডিসিসিআই মনে করে, বেসরকারি খাতের আর্থিক ব্যয় ভার লাঘবে আমদানি, খাদ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র, মেডিক্যাল সরঞ্জাম এবং রফতানিমুখী উৎপাদনশীল শিল্পের ওপর থেকে আগামী এক বছরের জন্য অগ্রিম কর (এটি) এবং ভ্যাট মওকুফ করতে পারে। পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যক্তি শ্রেণির কর আদায়ে ও করপোরেট কর হারে কিছুটা ছাড় প্রদানের বিষয়টি ভাবতে পারে।
আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য রক্ষার্থে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বৃদ্ধি করে এর মধ্যে অসহায়, প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ, শ্রমজীবী, চাকরি হারানো মানুষ, অতি ক্ষুদ্র ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত যা এসএমই খাতের জন্য প্রধান সাপ্লাই চেইন হিসেবে কাজ করে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানায় ঢাকা চেম্বার। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী বাজার ব্যবস্থাপনা, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করার সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া ও জনসাধারণে কাছে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় নিশ্চিত করতে ডিসিসিআই আহ্বান জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, শিল্পোৎপাদন, আন্তর্জাতিক পণ্যের সাপ্লাই চেইন, বেসামরিক বিমান পরিবহন, পর্যটন ব্যবসা, খুচরা ও পাইকারি ক্রয়-বিক্রয়, আমদানি, রফতানি, পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ হ্রাসসহ বেকারত্ব বাড়িয়ে অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই তৈরি পোশাক শিল্প, চামড়া, ওষুধ, পর্যটন, যোগাযোগ ও পরিবহন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন খাত হুমকির মুখে পড়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়।
ঢাকা চেম্বার বলছে, বৈশ্বিক মন্দার মুখে বাংলাদেশের প্রধান বাজার যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডাতে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশই লক-ডাউন ঘোষণা করায় বড় বড় বিপনীবিতান ও অনলাইন বাণিজ্য নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। এতে করে বাংলাদেশের সামগ্রিক রফতানি প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসছে। ফলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানি, রফতানি সঙ্কুচিত হয়ে আসাতে স্থানীয় ও রফতানিমুখী শিল্প কল-কারখানা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের মধ্যে সর্ববৃহৎ রফতানি পণ্য তৈরি পোষাক শিল্প দুই বিলিয়নেরও বেশি মার্কিন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃজিজাতপণ্যসহ অন্যান্য সম্ভাবনাময় রফতানি খাতও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাণ সঞ্চারি বেসরকারি খাতকে অর্থনীতির স্বার্থেই সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।