পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দুর্যোগের মতো পরিস্থিতি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সেনাবাহিনী প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। গতকাল সোমবার বিকেলে করোনাভাইরাস নিয়ে সচিবালয়ে জরুরি ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা বলেন।
এদিকে আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা পর্যালোচনায় বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে বেসামরিক সহায়তায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিমান, নৌবাহিনীর সদস্যরাও থাকবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও সতর্কতামূলক বিষয় হিসেবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনী।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে তারা জেলা ও বিভাগীয় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতি এবং তা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সেনাবাহিনীর প্রধান এবং অন্যন্যা উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্ট সবার সাথে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে সভা ও আলোচনা করেছেন। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী এসব ব্যবস্থা গ্রহনের দশটি নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজ মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে তারা জেলা ও বিভাগীয় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বিশেষ করে বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কেউ নির্ধারিত কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক সময় পালনে ত্রুটি/অবহেলার করছে কিনা তা পর্যালোচনা করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা এজন্য স্থানীয় আর্মি কমান্ডারের কাছে সেনাবাহিনী কর্তৃক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য আইনানুসারে অনুরোধ জানাবে। এর আগে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করায় এসময়ের মধ্যে পুলিশ ও হাসপাতাল ছাড়া সব ধরনের সরকারি সেবা বন্ধ থাকবে। ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি, এর সঙ্গে ২৭-২৮ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। এর সঙ্গে ২৯ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। ৩-৪ এপ্রিল আবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। তবে ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার সব খোলা থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, তথ্যসচিব, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (পিআইও) সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিব জানান, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে তাঁদের পৃথকভাবে বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ দফার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ১০ সিদ্ধান্তের মধ্য রয়েছে গণপরিবহন চলাচল সীমিত রাখা, সব রকম সামাজিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে নিম্ন আয়ের কোনো ব্যক্তি শহরে জীবনযাপনে অক্ষম হলে সরকার তাঁকে ঘরে ফেরা কর্মস‚চির অধীনে নিজ গ্রাম বা ঘরে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকেরা ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে দেওয়া হয়। উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। বেসরকারি অফিসও বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে হাসপাতাল, জরুরি সেবা, কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান। এছাড়া গণপরিবহন সীমিত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু থাকবে। দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। কায়কাউস বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যা যা করার সবই করছে সরকার। প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে সংশ্লিষ্ট জেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসে দেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ছয়জন। সবমিলিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচজন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলেও জানান আইইডিসিআর পরিচালক।
২০০৭ সালে দেশের প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি এবং বন্যা পরিস্থিতির অবনতি কয়েকশ ঘরবাড়ি ও দোকানপাট পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়। বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলোও রয়েছে হুমকির মুখে। বানভাসি মানুষ সহায়-সম্বল হারিয়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে উঠেছে। সড়ক তলিয়ে এবং সেতু ধসে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। উপদ্রুত এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে নামানো হয়।
চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েন প্রস্তুতি-প্রক্রিয়া শুরু
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, আজ মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে সেনা মোতায়েনের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিদর্শন প্রক্রিয়া শুরু করেছে সেনাবাহিনী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনা মোতায়েনের এ সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে। আজ থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট টিম পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।