পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইতালি থেকে আসা ৬০ বছর বয়সী এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তার লাশ গোসল ও জানাজা ছাড়াই দাফন করা হয়। মৌলভীবাজারে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক নারী মারা গেছেন। ধারণা করা হয় তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইতালি থেকে আসা ৬০ বছর বয়সী এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। গত রোববার রাত ১১টার দিকে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে আব্দুল খালেক নামে ওই প্রবাসীর মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকতে পারেন।
এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভৈরব উপজেলা প্রশাসন মৃত ব্যক্তির চারপাশের ১০টি বসত ঘর ও দুটি বেসরকারি হাসপাতাল লকডাউন করেছেন। মৃত ব্যক্তির বাড়ির চারপাশে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও ঘটনার রাতে দুটি হাসপাতালে থাকা কর্মরতদের হাসপাতালের ভেতরেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দেড় যুগ আগে খালেক ইতালিতে যান। তার দুই ছেলে বর্তমানে ইতালিতেই বসবাস করছেন। ইতালিতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় তিনি নিজ বাড়ি ভৈরবে ফিরে আসেন গত ২৮ ফেব্রæয়ারি ২০২০। ইতালি থেকে তার বাড়ি আসার তথ্যটি উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির নজর এড়িয়ে যায়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই তিনি এলাকায় স্বাভাবিক চলাফেরা করছিলেন।
প্রতিবেশীরা আতঙ্কিত থাকলেও চক্ষু লজ্জায় কেউ কিছু বলেনি তাকে। গত শনিবার থেকে ওই প্রবাসীর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে রাত ৯টার দিকে প্রথমে শহরের ল²ীপুরস্থ আবেদীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ইউসুফ মেমোরিয়াল হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক রাতেই ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুবনা ফারজানা, ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
গতকাল দুপুরে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) হিমাদ্রী খীসার উপস্থিতিতে পুলিশ প্রহরায় ইতালি প্রবাসী মরহুম আব্দুল খালেকের লাশ গোসল ও জানাজা ছাড়াই ভৈরব পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, মৃত প্রবাসী খালেক আমাদের তালিকার বাইরে ছিলেন। তিনি নিজেই হোম কোয়ারান্টাইনে ছিলেন। তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জেনেছি ওই ব্যক্তির জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। নমুনা সংগ্রহের জন্য রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। তারা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরিক্ষার পর জানা যাবে প্রবাসী খালেক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা। তবে নিয়ম মেনেই লাশ দাফন করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর মৃত্যু হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। প্রায় ১ মাস পূর্বে রেজিয়া বেগম (৬০) নামের এই নারী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসেন। শহরের কাশিনাথ রোডের এম.আর.ভিলা নামীয় বাসায় বসবাস করতেন।
জানা যায়, গত ২২মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে রেজিয়া বেগমকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সদর হাসপাতাল থেকে আত্মীয়স্বজন শহরের লাইফলাইন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ কাশিনাথ রোডের বাসায় নিয়ে গোছল শেষে কাপনের কাপড় পড়িয়ে রাত ৯টার দিকে একটি ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়।
গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার ভাদগাঁও গ্রামে স্বামীর বাড়ি নেয়া হয়। ওখানে দূপুর ২টায় গাড়িতে রাখা অবস্থায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় একই উপজেলার গিয়াস নগরে। সেখানে বিকেল ৩ টায় ২য় জানাজা শেষে মাদরাসার পাশে লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনার পর শহরের কাশিনাথ রোডের ৫টি বাসাকে প্রশাসন হোম কোয়ারেন্টাইনে আওতায় নিয়ে আসে। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ মিলে ৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
মৃত্যুবরণকারী প্রবাসী রেজিয়া বেগমের আত্মীয়রা জানান, প্রায় ১মাস পূর্বে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন। হার্টের সমস্যার কারণে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এর অগেও একবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়। এ ঘটনার পর সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল টিম তার বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে।
এবিষয়ে জানতে সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদ আহমদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।