Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার শুরুতে গুরুত্ব দেয়নি

ইন্টারনেট লাইভে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২০, ১২:৩৮ এএম

সরকার দুর্ভাগ্যজনকভাবে করোনাভাইরাসের বিষয়টা নিয়ে অবজ্ঞা করেছে, অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়। সারা বিশ্বেই এই দুর্যোগ আসছে। সেজন্য আমরা নির্দিষ্টভাবে কাউকে দোষারোপ করতে চাইনা। সরকারের যে দায়িত্বশীলতার প্রয়োজন রয়েছে সেটা আমাদেরকে প্রচন্ডভাবে ব্যাথিত করেছে। এমন দায়িত্বহীনতা নিঃসন্দেহে একটা অপরাধের পর্যায়ে পরে। তাদের মন্ত্রীরা এমন এমন উক্তি করেছেন যা মানুষের এই আতঙ্কের মধ্যেও একটা উষ্মা ও ক্ষেদের সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তারা তিন মাস আগে থেকে প্রস্তুত ছিলেন, যার কোনো নজীর আমরা দেখতে পারছি না।সরকার এই পর্যন্ত বলছে ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। পরীক্ষা করার জায়গা তো শুধুমাত্র একটা- আইইডিসিআর। সেই জায়গায় পরীক্ষা হচ্ছে, সবাই পরীক্ষা করতেও পারছেন না। যার ফলে কতজন রোগী ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন, কত জন এর দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন সেটার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান আমরা পাচ্ছি না।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক ও গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ইন্টারনেটে লাইফ স¤প্রচারে করোনাভাইরাস সংক্রামণের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে এসব কথা বলেন।
দেরিতে হলেও সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের চিকিৎসা এবং জনগণকে আইসোলেটেড করে রাখার যে ব্যাপারটা আছে- একজন থেকে আরেকজনকে আইসোলেটেড করে রাখা- এ ব্যাপারটাকে সরকারের গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিলো। যদিও তারা (সরকার) দেয়া শুরু করেছেন। এটা দেরিতে হলেও আমি মনে করি যে, বুঝতে পেরেছেন। বিলম্বে হলেও সরকার যে কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেটা তারা করেছেন। এখন এটাকে যেন নিবিড়ভাবে পরিচালনা করা হয় সেটা তাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বাংলাদেশ একটা ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এই দেশে এই ধরনের ছোঁয়াচে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে দেশে এবং বিশ্বে, এটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়। তাহলে এটা একটা ভয়াবহ রকমের বিপর্যয়ের সম্মুখিন হতে হবে।
নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং জন হককিন্সের প্রকাশিত মেডিকেল রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা একটা আতঙ্কসৃষ্টিকারী একটা রিপোর্ট। বলা হচ্ছে যে, প্রায় ৫ লাখ লোক আক্রান্ত এবং বহু মানুষ এখানে মারা যাবে। আমরা প্রথম থেকে বলছিলাম যে, এই বিষয়গুলোকে নজর দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবার জন্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা তো তারা গুরুত্ব দেননি।
বিদেশ থেকে আসা ৬ লাখ প্রবাসী গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ায় ভাইরাসের সংক্রামণের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের উদাসীনতা ও প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসার হাসপাতালের সংখ্যা বৃদ্ধি, চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণ, তাদের বিশেষ পোষাক ও পর্যাপ্ত কিট সরবারহের দাবিও জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে, অতি দ্রুততার সঙ্গে সরকার যদি হাসপাতালগুলোকে ইক্যুপট করে। প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালে যদি চিকিৎসক-নার্সদের পোষাক প্রদান করে, টেস্টিং মেটেরিয়াল দেয়া যায়, কিটস সরবারহ করা যায় তাহলে অন্ততঃ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে। আমরা মনে করি প্রত্যেকটি হাসপাতালে একেকটা টিম থাকা দরকার যে টিমের কাজ হবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেয়ার কাজটুকু করা। করোনাভাইরাসের কারণে গামেন্টর্স শিল্প রক্ষায় মালিক-শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থাগ্রহণ এবং প্রান্তিক মানুষের জন্য ভাতা প্রদানে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আমাদের তরফ থেকে যতটা সম্ভব অথোরেটির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে যেন সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ রাখা হয় তার জন্য আমরা কথা বলেছি এবং তারা আমাদেরকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে সেটা তারা করছেন। তার পরিবারের থেকে আবেদন করা হয়েছে যে, সম্পূর্ণভাবে মানবিক কারণে তাকে চিকিৎসার জন্য মুক্ত করা হোক। আমরা যেটা পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছি যে, তাকে দ্রুত মুক্ত করা হোক।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, করোনাভাইরাসের এই সময়ে সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। এই সময়ে তাদেরকে কর্মচ্যূত করা অমানবিক ও অনৈতিকও বটে। আমরা আশা করব যে, গণমাধ্যমের যারা মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় আছেন তারা এই বিষয়টাকে অবশ্যই বিবেচনা করে এখন যাতে কেউ কর্মচ্যূত না হয় সেটা বিশেষভাবে দেখবেন।
এসময় বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা জানান করোনাভাইরাস সংক্রামণের ব্যাপকতার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতা দিবসের সকল কর্মসূচি বাতিল করেছে বিএনপি।তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যে যেই অবস্থায় আছে, নিজেদেরকে সাবধান রেখে জনগনের মধ্যে সচেতনতার কাজ করবেন এবং দলের কর্মীরা যেন নিয়ম মেনে চলেন, সাবধানে থাকেন-সেই বিষয়গুলো নিশ্চিত করবেন। এসময় উপস্থিথ ছিলেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন নসু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ