পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনাভাইরাসের প্রভাবে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯টি পোশাক কারখানার বিভিন্ন পরিমাণে অর্ডার স্থগিত বা বাতিল হয়েছে। এর ফলে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলারের পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত হয়েছে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ পরিস্থিতিতে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (২৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ভয়াবহ অবস্থা চলছে আমাদের। বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন মহাদেশ থেকে সব ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ আপাতত বাতিল বা স্থগিত করছে। বলছে স্থগিত, কিন্তু আমাদের জন্য স্থগিত করা কিংবা বাতিল করা একই কথা। কাজেই সবকিছু মিলিয়ে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯টি কারখানা আমাদের ওয়েব পোর্টালে এন্ট্রি করেছে। এতে ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ আপাতত বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ।
রুবানা হক বলেন, ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করতে আমরা একটি ওয়েব পোর্টাল করেছি। সেখানে প্রায় ৪ হাজার কারখানার মধ্যে ১ হাজার ৮৯টি কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে এন্ট্রি দিয়েছে। এটা বাড়তে বাড়তে কোন অবস্থায় যায়, আমরা এখন সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি। এ পরিস্থিতি দেশের পোশাক খাতের জন্যে খুবই উদ্বেগের। এর আগে গতকাল রোববার সংগঠনটি জানায়, তাদের দেড় বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানিয়েছেন, বিশ্বের স্বনামধন্য প্রায় সব বায়ারই ক্রয়াদেশ বাতিল করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তৈরি পোশাক খাতের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ ও আমেরিকা। সেখানে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানকার ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল কিংবা স্থগিত করতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে না এলে ক্রয়াদেশ বাতিলের পরিমাণ বাড়বে।
তারা বলছেন, একদিকে ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন করে ক্রয়াদেশও আসছে না। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম এই খাতটি। এই অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে থাকলে অনেক কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন দেয়াও সম্ভব হবে না। তা হলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। এদিকে সরকার, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের বড় একটি অংশ এখনই কারখানা বন্ধের পক্ষে নয়। অন্য একটি পক্ষ অবশ্য শ্রমিকের সুরক্ষায় গার্মেন্টস বন্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু বলেন, আমরা গার্মেন্টস চালু রাখার পক্ষে। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা মনে করি, কারখানা বন্ধ করে দিলেই সমাধান হবে না। বরং বন্ধ করে দিলে তা আরও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি মনে করেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানা বন্ধ করা উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।