বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ওরা ঘরে বসে নেই। ওরা ফেরিওয়ালা। মানুষের কাছেই ছুটছেন এখন। কেউ নিজেদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে সযত্নে তৈরি করা হ্যান্ডস্যানিটাইজার নিয়ে পথচারীর হাত জীবাণুমুক্ত করছেন। আরও সরবরাহ দিচ্ছেন পাড়া মহল্লার স্বেচ্ছাসেবকী ও সামাজিক সংগঠন সমিতগুলোর হাতে। কেউ দিচ্ছেন ছোট ছোট সাবান কিংবা মাস্ক।
আবার অনেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনগণকে সজাগ ও সচেতন করতে সড়ক, মোড়ে মোড়ে, অলিগলি পথঘাট ঘুরে ঘুরে প্রচার চালাচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে লেখা জনসচেতনতার তাগিদ দেওয়া কথাগুলো চমৎকার বুদ্ধিতে তুলে ধরছেন। মানুষের তা নজর কাড়ছে বেশ।
করোনার বৈশ্বিক মহামারী দুর্যোগ যখন বাংলাদেশকেও তাড়া করছে ঠিক তখনই মানবিক সেবা সাহায্যে আশার ফেরিওয়ালা যেন চট্টগ্রামের এই তরুণদল। ওরা ছাত্র-ছাত্রী, তরুণ, যুবক। তারাই দেখিয়ে চলেছে, ঘোর অন্ধকারের বিপরীতে আশার আলো।
এ যেন অন্যরকম যুদ্ধ। কবির ভাষায়- এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়! কিংবা তারুণ্য মানে না ডর ভয়, পরাজয় পরাভব।
আজ সোমবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর জামাল খান, আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, কাজীর দেউড়ী, জুবিলী রোডসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা গেল আশা ও ভরসা জাগানিয়া তরুণদলের ওইসব কাজের ব্যস্ততা। এটাই যেন মানবিক বাংলাদেশ।
জামাল খান সড়কে এ ধরনের জনসচেতনতা ও সেবায় হ্যান্ডস্যানিটাইজার হাতে আরমান হোসেন, মো. ইশরাক, দীপু দেব, আলেয়া ইকবালের সঙ্গে কথা বলি। নিজেও হাত জীবাণুমুক্ত করি। জানলাম ওরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ভার্সিটির শিক্ষার্থী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো বন্ধই। শুধুই ঘরে বসে থাকা? না। দেশের মানুষ যতটা না করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত তার চেয়ে বেশি অভাব জনসচেতনতার।
তারা জানান, এই মুহূর্তে পরিবার-পরিজনের ঝুঁকি ঠেকাতে করণীয়গুলো আমরা মানুষের চোখে আঙুল দিয়েই বুঝিয়ে দিচ্ছি। সাড়াও পাচ্ছি। যেমন- মানুষকে বলছি সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। দরকার হলে বারেবারে করুন। পরিবারের সদস্যদের এ ব্যাপারে উৎসাহ দিন।
অবশ্য এর পেছনে আমাদের শিক্ষকগণ উৎসাহ ও সাহস যুগিয়েছেন। স্থানীয় সমাজসেবকগণ এসব উপকরণ পেতে সহযোগিতা দিয়েছেন। বললেন তরুণরা।
আবার তাদের বেশিরভাগ শহরে পাড়াভিত্তিক এবং ক্যাম্পাসভিত্তিক বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত। তাই দলবদ্ধভাবে সৃজনশীল কাজপাগল ওরা।
এ ধরনের মানবিক ও সেবামূলক কাজে করোনায় জনসচেতনতার যুদ্ধজয় করতে এগিয়ে এসেছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবক তরুণ যুবক। নিজদের ল্যাব ব্যবহার করে ইতোমধ্যে হ্যান্ডস্যানিটাইজার তৈরি করে ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করেছেন চুয়েট, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষার্থীরা। নেপথ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের ভিসি, প্রো ভিসি, অধ্যক্ষ ও বিজ্ঞান বিভাগের প্রধানগণসহ শিক্ষকবৃন্দের উৎসাহ সুফল দিয়েছে।
তবে একথাও ঠিক, ৭০ লাখ চট্টগ্রাম নগরবাসীর ৪১টি ওয়ার্ড হিসাব অনুযায়ী এই প্রচেষ্টা এখনও অপ্রতুল।
করোনাভাইরাস মহামারীর কবল থেকে সুরক্ষা পেতে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্য নিয় চট্টগ্রামে মাঠে তৎপর থাকা সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। দেশের প্রয়োজনে নিজেদের শ্রমকে কাজে লাগিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করতেন চান তারা।
চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে আসছে৷ যার মধ্যে রয়েছে- যুব রেড ক্রিসেন্ট, ইউনিসেফ ব্লু ফোর্স, সন্ধানী এবং সিটিজি ব্লাড ব্যাংকের মতো সংগঠন।
আবার অনেকে বন্ধু বান্ধব, সমমনা তরুণদল। ওদের মাঝে নেই কোন ভেদাভেদ। একটাই প্রত্যয় যেন ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জনগণ। করোনায় আর নয় আরেকটিও করুণ মৃত্যু।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ইনকিলাবকে বলেন, তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের এসব মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আরও বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজন। কারণ করোনায় জনসচেতনতার এখনও অভাব আছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা কাজে লাগিয়ে আমাদের এই বৈশ্বিক মহামারী থেকে সুরক্ষা পেতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।