পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়াকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। গণপরিবহন ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দেশের গণপরিবহনগুলো অরক্ষিত। বাস মালিকরা ভাইরাসটি প্রতিরোধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বরং তারা উদাসীন। যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমলেও এখনও গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কোথাও জীবাণুনাশক স্প্রে করতে দেখা যায়নি। ফলে গণপরিবহন ব্যবহারকারীদের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সচেতনতা বৃদ্ধিতে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কিছু লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু তা রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভ‚মিকা রাখবে না বলে মনে করছেন গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কারও হাঁচি বা কাশিতে থাকা জীবাণু শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শ লেগেছে এমন কোনও বস্তু স্পর্শের মাধ্যমেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির দুই মিটারের মধ্যে থাকা অন্য ব্যক্তিকেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। করোনার সংক্রমণ রোধে গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এ অবস্থায় গণপরিবহন ব্যবহার না করা ভালো। কারণ গণপরিবহনে মানুষের সমাগম বেশি। মানুষের সমাগম থেকে এই রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণপরিবহন জীবাণুমুক্ত করার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও দেশে সেই ব্যবস্থা নেই। গত কয়েকদিন নগরীর বেশ কয়েকটি বাস টার্মিনাল ঘুরে কোথাও করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক প্রতিরোধক ব্যবস্থাও চোখে পড়েনি। যাত্রীদের মধ্যেও সচেতনতা দেখা যায়নি। তবে কেউ কেউ শুধু মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন। পরিবহনগুলো তাদের আসনের বাইরেও দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন করছে। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি বাসে যাত্রী চলাচলে সতর্ক করা হচ্ছে। প্রতিটি বাস মালিককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের এখন প্রতিটি বাস জীবাণুমুক্ত করে যাত্রী পরিবহন করতে বলা হবে। প্রয়োজনে আন্তঃজেলা যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত দুদিন সকাল-বিকেল নগরীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, কোনও পরিবহনই মালিক সমিতির নির্দেশনা মানছে না। অনেক পরিবহন শ্রমিক সমিতি নির্দেশনার বিষয়ে জানেই না। এছাড়া টার্মিনাল ও বাস কাউন্টারগুলোতে ব্যবহৃত পাবলিক টয়লেটগুলোতেও জীবাণুনাশক কোনও স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে না। জানতে চাইলে অনাবিল পরিবহনের চালক আশরাফ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন শতশত যাত্রী পরিবহন করি। কয়জনকে আমরা সচেতন করবো। কতবার বাস পরিষ্কার করবো? মালিকরা তো আমাদের এমন বরাদ্দ দেয় না। তাছাড়া হ্যান্ড স্যানিটাইজারও বাজারে পাওয়া যায় না। এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান নামে একজন আইনজীবী বলেন, আমরা শুধু মিডিয়ায় সরকারের মন্ত্রী ও পরিবহন মালিকদের বিভিন্ন ঘোষণা দেখতে পাই। কিন্তু সেসব বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। মালিক সমিতি যেসব ঘোষণা দিয়েছে, কোনও মালিকই তা পালন করেন না। সরকারও উদাসীন। কিন্তু গণপরিবহন পরিহার করার কোনও উপায় নেই, ঝুঁকি নিয়েই ব্যবহার করতে হচ্ছে।
পরিবহন মালিকরা দাবি করছেন, আন্তঃজেলা দ‚রপাল্লার রুটে চলাচলকারী এসি-ননএসি বাসে যাত্রী ওঠানোর আগে ও নামানোর পরে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করা, এসি বাসের যাত্রীদের ব্যবহৃত কম্বল ও সিটকভার প্রতিদিন পরিবর্তন করে পরিষ্কার করা, চালক- হেলপারদের সেফটি ইউনিফরম ব্যবহার করা, প্রতিটি ট্রিপ শেষে তাদের সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত-মুখ পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাস্তবে এসি বাসগুলোকে কম্বল দেয়া ছাড়া অন্য কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার করেন। তাদের পক্ষে গণপরিবহনে যাতায়াত বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিনিয়ত গণপরিবহনগুলোতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা আবশ্যক। প্রতিটি নির্দিষ্ট বাস স্টপেজ থেকে গণপরিবহনে যাত্রী ওঠানোর সময় থার্মাল স্ক্যানার মেশিন দ্বারা স্ক্যানিং করে যাত্রী ওঠানো উচিত। প্রতিটি ট্রিপ শেষে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত পরিবহন জীবাণুনাশক স্প্রে দ্বারা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ভাইরাস প্রতিরোধে রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলে যাত্রীর হেলমেট ব্যবহার আপাতত বন্ধ রাখা যেতে পারে। কিন্তু সবকিছুতেই ঢিলেমি। অবশ্য ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ দাবি করে বলেন, আমরা প্রতিটি টার্মিনালে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছি। পরিবহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য মালিকদের নির্দেশ দিয়েছি। সরকার যদি পরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে আমরা সেই সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন করবো। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহন ব্যবহার সংক্রান্ত বিশেষ সতর্কতা প্রচারের পাশাপাশি গণপরিবহনকে জীবাণুমুক্ত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। বাস টার্মিনাল ও বাস স্টপেজ, রেলস্টেশন, লঞ্চ-টার্মিনাল ও লঞ্চ ঘাটের পাশাপাশি আকাশপথের সব যাত্রীদের জন্য থার্মাল স্ক্যানার বসিয়ে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।