Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সঙ্কট নেই তবুও চড়া নিত্যপণ্যের দাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

কমছে না নিত্যপণ্যের দাম। বাজারে চাল, ডাল, ডিম, আলু, তেল ও পেঁয়াজের কোনো সঙ্কট নেই। তারপরও বাড়ছে দাম। কারণ করোনাভাইরাস আতঙ্কে অনেকে নিত্যপণ্য কিনে মজুদ করছেন। বাজারে নিত্যপণ্যের চাহিদা বেশি হওয়ায় এ সুযোগে দাম বাড়িয়েছে একদল অসাধু ব্যবসায়ী। এতে বিপাকে পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তাই আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের অধিক পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত তিন চার দিনের তুলনায় বাজারে ক্রেতা অনেক কম। তবুও দাম কমছে না। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত। পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। তেলের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। এছাড়া ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। অন্যান্য পণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী। দোকানদাররা বলেন, করোনা আতঙ্কে মানুষ বেশি কেনাকাটা করে মজুদ করছে। তাই চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে। তবে বাজারে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ রয়েছে। চাহিদা একটু কমলেই দাম কমে যাবে।

শান্তিনগর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে চাল, ডাল, আলু, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় দুই-তিন গুণ বেশি কিনছে। চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়ছে। পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় চাল কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেশি দরে কিনতে হয়েছে। পেঁয়াজের দাম গত তিনদিন ধরে চড়া। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আর আজকে আড়ত থেকে কিনতে হয়েছে ৪৫ টাকা, এরপর লেবার ও পরিবহন খরচ তো রয়েছেই। এখনতো বাজারে আগের মতো ক্রেতা নেই। তাহলে দাম কমছে না কেন? এর জবাবে মোদি দোকানী বলেন, ক্রেতা কমে গেলে জিনিসপত্রের দাম এমনি কমে যাবে।

এদিকে চাল, ডাল, আলু, ভোজ্যতেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যৌক্তিক ও ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে রাজধনীর বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালাচ্ছে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। দাম বেশি নেয়ায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হয়েছে।

পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গতকাল পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। তিন চারটি আড়তে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। এর ফলে শ্যাম বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক কমে যায়।
অভিযানের আগে শ্যামবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল পাইকারিতে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকা দরে। এরপর সেটা বিক্রি হয় ৩৫/৩৬ টাকা কেজি দরে। চালের বাজারেও ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযান চলছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আশা করছে আগামী দু’একদিনের মধ্যে বাজার আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

এদিকে চাল, ডাল, আলু, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে সীমিত আয়ের মানুষ। রাজধানীর মতিঝিলের এক অফিসের সিকিউরিটি গার্ড জানান, গত সপ্তাহে চাল কিনেছি ৩৮ টাকা কেজি। আর গতকাল সেই চাল কিনলাম ৪৫ টাকা। ৪০ টাকার পেঁয়াজ কিনেছি ৫০ টাকা দিয়ে। এভাবে সব জিনিসপত্রের দামই বেড়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে অনেকে বেশি বেশি কিনে রাখছে। যাদের কাছে টাকা আছে তারা বেশি কিনছে। কিন্তু আমরা কি করব? আমাদের আয় তো সীমিত। মাস শেষ না হলে বেতন পাই না। ধনীরা বেশি কিনে মজুদ করায় দাম বাড়ছে। এর মাশুল গুনতে হচ্ছে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার জনসমাগম এড়িয়ে চলার কথা বলছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেশের সবস্থানে চলমান ও অনুষ্ঠেয় বাণিজ্য মেলা বন্ধ ঘোষণা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের অফিসে না এসে ঘরে বসেই কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শপিং মল কিংবা দোকানপাট বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় বিত্তবানরা নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য দ্রব্য বেশি পরিমাণে কিনে মজুদ করতে শুরু করেছে। এতে করে রাজধানীর কাঁচাবাজারসহ সুপার শপগুলোতে ঈদের চেয়েও বেশি কেনাকাটার হিড়িক পড়েছে। এমন পরিস্থিতি দেখে প্রধানমন্ত্রী শনিবার তার এক বক্তব্যে প্রয়োজনের বেশি পণ্য না কেনার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।



 

Show all comments
  • Md khokhon khan ২৩ মার্চ, ২০২০, ৯:৪৭ এএম says : 0
    Er birudde sorkar kothor law jari koruk
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ