বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অবশেষে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সোনাইমুড়ী উপজেলার উত্তর হিরাপুর এলাকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সোহরাব হোসেন পিয়াস (১৪) হত্যার চাঞ্চল্যকর রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি পুলিশ। ঘটনায় মাহফুজ আলম প্রকাশ মাহবুব (৪৫) এক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিআইডি নোয়াখালী শাখার সহকারি পুলিশ সুপার মো অহিদুর রহমান পিপিএম এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃত মাহফুজ আলম মাহবুব মুরাদপুর গ্রামের আহম্মদ উল্যার নতুন বাড়ীর মৃত আহম্মদ উল্যার ছেলে।
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার অন্য আসামীরা হলো,তাজুল ইসলাম, ফখরুল, নূর নবী সোহাগ, সাইফুল, সাদ্দাম, জামাল হোসেন, নূরুল ইসলাম ও সোহাগ হোসেন। এদের মধ্যে ফখরুল ও সাদ্দাম বর্তমানে দেশের বাহিরে ও সাইফুল প্রতিপক্ষের হামলা নিহত হয়েছে এবং অপর আসামীরা পলাতক।
সিআইডি জানান, ২০১৪ সালের ৮জুলাই রমজান মাসে স্কুলছাত্র সোহরাব হোসেন পিয়াস তারাবির নামাজ শেষে বাড়ী ফেরার পথে তাদের পুকুর পাড়ে একটি চার্জার টর্চ লাইট পেয়ে বাড়ীতে নিয়ে আসে। পরে মামলার প্রধান আসামী তাজুল ইসলাম ওই লাইটি নিজের দাবী করে পিয়াস তা ওদের ঘর থেকে চুরি করেছে বলে তাজুল বলে। ওইদিন তিনতেড়ি বাজারে এ নিয়ে শালিসি বৈঠক হয়। শালিসে লাইটটি তাজুলের বলে প্রমাণিত হয় এবং একই সাথে তাজুল পিয়াসদের পুকুরে মাছ চুরি করতে গিয়ে লাইটটি ফেলে এসেছে বলেও প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাজুল প্রকাশ্যে পিয়াসকে হত্যার হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, এর সূত্র ধরে ওই বছরের পহেলা আগস্ট মামলার অপর আট আসামীকে নিয়ে পিয়াসকে হত্যার পরিকল্পনা করে তাজুল। ওইদিন সন্ধ্যায় পিয়াসের এক সমবয়সী কিশোরকে দিয়ে তাকে বাড়ী থেকে ডেকে মোরগ ব্যাপারীর কবরস্থানে নিয়ে যায় তাজুল। পরে কবরস্থানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিয়াসের পুষাঙ্গ কর্তন, ডান চোখ উঠিয়ে, কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত গরম কিছু দিয়ে পুড়িয়ে গলায় রশি পেচিয়ে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পিয়াসের লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে শাহজাহান নামের এক ব্যক্তির ভিটি বাড়ীতে পেলে যায় মাহবুবসহ হত্যাকারিরা। পরে বস্তাবন্ধি লাশটি পুলিশ উদ্ধার করে এবং ঘটনায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে ৩আগস্ট সোনাইমুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করে নিহতের বাবা নুরুল ইসলাম বাবুল। ঘটনায় কয়েকজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হলেও কোন কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় নোয়াখালী ডিবি পুলিশকে। কিন্তু ডিবিও দীর্ঘসময় ধরে কোন রহস্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয়।
পরে ২০১৫সালের ২৫ মে মামলাটির তদন্ত দেওয়া হয় সিআইডিকে। দীর্ঘ ৫বছর তদন্ত শেষে ২০২০সালের ১৭মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে কৌশল অভলম্বন করে সিআইডি। পাত্রী দেখার উদ্দেশ্যে মিষ্টি, পান নিয়ে একটি সিএনজি যোগে মুরাদপুর গ্রামের অভিযান চালিয়ে আসামী মাহফুজ আলম মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে। পরে বুধবার গ্রেপ্তারকৃত মাহবুবকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালত নোয়াখালীতে হাজির করলে বিজ্ঞ হাকিম মোহাম্মদ সাঈদীন নাহী ১৬৪ ধারায় মাহবুবের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি গ্রহণ করেন। মাহবুব তার জবানবন্ধিতে ঘটনা স্বীকার করে এবং বিবরণ প্রদান করে। মামলার অপর আসমীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান সিআইডির এ কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।