Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

করোনার প্রভাবে ফাঁকা ঢাকা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনার প্রভাবে রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। যানজট নেই, ব্যস্ত মোড়ে মানুষের জটলাও নেই। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যাও কম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গতকাল মঙ্গলবার ছিল ছুটির দিন। অফিস-আদালত ছিল বন্ধ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের না হওয়ায় রাজধানীর চিত্র ছিল একেবারে অন্যরকম। মতিঝিলের ফুটপাতের এক ব্যবসায়ির ভাষায়, এ যেন ঈদের ছুটির ঢাকা।

সকাল থেকেই রাজধানীর ব্যস্ত এলাকা শাহবাগ, মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, বাংলামোটর, কাকরাইল ছিল অনেকটাই ফাঁকা। রাস্তার মোড়ে মোড়ে যানজট ছিল না। যানবাহন চলেছে হাতেগোনা। বাস ও মিনিবাসগুলো যাত্রী সঙ্কটে একই স্থানে দাঁড়িয়ে থেকেছে অনেকক্ষণ। দুপুরে গুলিস্তান এলাকার জিরো পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তা ও ফুটপাত অনেকটাই ফাঁকা। গুলিস্তান এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু বিক্রেতা থাকলেও ত্রেতা ছিল না বললেই চলে। গুলিস্তানে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার যেখানে নেমেছে সেখানে প্রতিদিন যানজট লেগে থাকলেও গতকাল ছিল ভিন্নরুপ। একটা দুটো করে বাস আসছে। সেগুলোতে যাত্রীও হাতে গোনা। পুরো গুলিস্তানজুড়ে ছিল না কোনো কোলাহল। পল্টন এলাকাতেও লোক সমাগম চোখে পড়েনি। পল্টন মোড়ে গাড়ি চলাচল করেছে খুবই কম। সে কারণে ট্রাফিক পুলিশের প্রয়োজন পড়েনি। ট্রাফিক পুলিশরা পুলিশ বক্সে অলস সময় কাটিয়েছেন।

কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারগুলোতে কোনো মানুষ নেই। সব কাউন্টার ফাঁকা পড়ে আছে। অথচ প্রতিদিন কাউন্টারগুলোতে দীর্ঘ সারি লেগেই থাকে। স্টেশনের প্লাটফরমে হাতে গোনা কিছু যাত্রী দেখা গেছে। স্টেশনের একজন কর্মচারি জানান, সকালের ট্রেনগুলোতে কিছু যাত্রী ছিল। বেলা ১০টার পর থেকে স্টেশন অনেকটাই ফাঁকা। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে যাত্রী কম হয়েছে বলে জানান স্টেশনের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে যাওয়ার প্রবনতা থাকলেও ঢাকায় মানুষ খুব কম আসছে। অর্থাৎ ঢাকামুখি ট্রেনগুলো ফাঁকাই আসছে।

মহাখালী বাস টার্মিনালের এক নেতা জানান, সকাল থেকে উত্তরাঞ্চলের দূরপাল্লার বাসগুলোতে বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, করোনা আতঙ্কে অনেকেই পরিবার পরিজনকে গ্রামের বাড়িতে পাঠাচ্ছেন। সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনালেও সকালে দূরপাল্লার বাসগুলোতে যাত্রীদের ভিড় ছিল বলে জানান বাস মালিকরা।
যাত্রাবাড়ী থেকে গাজীপুর রুটে চলাচলকারি বলাকা পরিবহনের চালক রুস্তম আলী বলেন, ছুটির দিন বলে যাত্রী কম। তবে করোনাভাইরাস আতঙ্কে যাত্রী সংখ্যা একেবারে কমে গেছে। আর যাত্রী নেই বলে রাস্তায় গাড়িও বেশি নামেনি। মতিঝিল শাপলা চত্বরে সাইফুল নামে এক যাত্রী জানান, তিনি উত্তরা থেকে বাসে মতিঝিল এসেছেন। রাস্তায় যানজট ছিল না, গাড়ির সংখ্যা ছিল খুবই কম। তার মতে, এমতবস্থায় উত্তরা থেকে আধা ঘণ্টায় মতিঝিল আসা যায়। তবে বাসটি যাত্রী তোলার জন্য বিভিন্ন স্থানে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকায় বেশি সময় লেগেছে।
ধানমন্ডির বাসিন্দা সানোয়ার হোসেন বলেন, স্কুল-কলেজ ছুটি থাকায় রাস্তায় যানবাহনের চাপ কম। ছুটি থাকাতে মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছে কম। সবচেয়ে বড় কথা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে তাতে মানুষ অনেকটাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মূলত সেই আতঙ্ক থেকে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়নি। সব মিলে ঢাকার চিত্রটাই বদলে গেছে। ঢাকাকে অচেনা মনে হচ্ছে।



 

Show all comments
  • Jewel Howlader ১৮ মার্চ, ২০২০, ২:৫৮ এএম says : 0
    কোনো প্রবাসী হোম কোয়ান্টায়নের নিয়ম অনুসরণ না করলে, তার উপর আইনের ব্যাবস্তা নেওয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • MH Sumon ১৮ মার্চ, ২০২০, ২:৫৯ এএম says : 0
    দেশে জনসমাগম নেই। কিন্তু গার্মেন্টস, টেক্সটাইল গুলোতে শত শত শ্রমিক, কর্মচারি কাজ করতেছে এক সাথে
    Total Reply(0) Reply
  • Munia Afroz ১৮ মার্চ, ২০২০, ৩:০৩ এএম says : 0
    আল্লাহ তুমি সবাইকে হেফাজত করো।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ ১৮ মার্চ, ২০২০, ৩:০৬ এএম says : 0
    আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • রাসেল ১৮ মার্চ, ২০২০, ৩:০৬ এএম says : 0
    বিমান বন্দর একদম বন্ধ করে দেয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ