ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন
॥ দুই ॥
পরিবার একজন শিশুকে সমাজের কাছে পরিচিতি করে তোলে। শিশুর আচরণের উপর পরিবারের সাংস্কৃতিক ধারণার প্রভাব সুস্পষ্ট। পরিবারের আর্থসামজিক অবস্থান, সমাজিক শ্রেণি, পারিবারিক কাঠামো ইত্যাদি শিশুর আচরণ অনুধ্যানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে পরিবারের প্রভাব সম্পর্কে বিগত দশকগুলোতে অনেক লেখালেখি হয়েছে। সব লেখক, গবেষক স্বীকার করেছেন যে, পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া শিশুর বিকাশে সুষ্ঠুধারা ও সন্তোষকজনক অগ্রগতি অর্জন সম্ভব নয়। পারিবারিক নিয়ম, শৃঙ্খলা, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সহানুভূতি ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমেই একজন শিশু সমাজে প্রত্যাশিত আচরণ করতে শেখে। পরিবারই সমাজকে শিশুর কাছে পরিচিত করে তোলে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, শুধুমাত্র সাধারণ ও পারিবারিক সমস্যা নয়, শিক্ষার্থীর একান্ত ব্যক্তিগত সমস্যা ও তার শিক্ষাজীবনকে ব্যাহত করতে পারে। তাকে অমনযোগী হতে, স্কুল পালাতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। একটি গল্পের মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপন করা যাক। দশ বছর বয়সের একটি ছেলে, নাম রবিন। মাকে খুব ভালোবাসে, প্রতিদিন স্কুলে যায়, কিন্তু পূর্ণ সময় স্কুলে থাকে না। পাঠে অমনোযোগ, সুযোগ পেলে প্রথম সুযোগেই স্কুল থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। তার এ অপরাধের জন্য শিক্ষক তাকে প্রায়ই বকাঝকা করে শাস্তি দেয়। তারপরেও শিক্ষকের শাস্তির ভয় উপেক্ষা করে সে সুযোগ পেলেই বাড়িতে ছুটে যায়। ছেলেটির স্কুল থেকে পালিয়ে বাড়িতে আসার পিছনে কি কারণ থাকতে পারে? সাধারণভাবে মনে হতে পারে যে, সে স্কুল ও লেখাপড়া পছন্দ করে না। অথবা তার বাবা-মা স্কুলের বিরুদ্ধে বলে তার মন বিষিয়ে তুলেছে। এও হতে পারে যে স্কুলের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সে অপারগ বা অনিচ্ছুক। উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তরে এই গবেষণা করে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা থেকে দেখা গেছে যে রবিনের মা-বাবার মধ্যে প্রায়ই প্রচ- ঝগড়া হতো। ঝগড়ার এক পর্যায়ে তার মা জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার হুমকি দিত এবং মাঝে মাঝে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতো। দু’ একদিন রবিনের মা তার বাবাকে এও বলেছেন যে তিনি এ বাড়ি থেকে চিরদিনের জন্য চলে যাবেন। প্রতিনিয়ত এই ধরনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে রবিনের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে সে স্কুলে গেলে এই ফাঁকে তার মা বাড়ি থেকে চলে যেতে পারে। এর ফলে স্কুল থেকে ফিরে সে আর মাকে পাবে না। ক্লাস রুমে বসে তার শুধু দুশ্চিন্তা হতো সে তার মা বুঝি চলে গেল। তাই ক্লাসে মনোযোগ দেয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তার দুশ্চিন্তা যখন খুব বেড়ে যেত তখনই সে পালানোর রাস্তা খুঁজতো এবং প্রথম সুযোগেই বাড়িতে চলে আসতো। রবিন নামক ছেলেটির ঘটনা হতে এ কথা সুস্পষ্ট ভাবে বলা যায় যে, ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও সুষ্ঠু বিকাশের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের সান্নিধ্য ও ভালোবাসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকদের অবশ্যই শিক্ষার্থীর এ ধরনের ব্যক্তিগত সমস্যা বিবেচনায় নিয়েই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। প্রতিটি সমাজেরই নিজস্ব জীবনযাপন প্রণালী বিশ্বাস-অবিশ্বাস, নৈতিকথা, লোকাচার, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ গ্রহণীয় ও বর্জনীয় বিষয় এবং নিজস্ব ধ্যানধারণা রয়েছে। সমাজের প্রচলিত নিয়মকানুন মেনে চলা এবং অন্যকে তা অনুশীলন করতে উদ্বুদ্ধ করার কাজটি মূলত শুরু হয় পরিবার থেকেই। আমাদের সমাজে পারিবারিক মূল্যবোধ, অভিভাবকদের প্রতিশ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তাদের প্রতি অনুগত থাকা, পারিবারিক ঐতিহ্য ভঙ্গ না করার যে সংস্কৃতি চালু রয়েছে তার পিছনে বড় অবদান কিন্তু পরিবারের। পরিবারের মধ্যে ছেলেমেয়েরা অন্যের সম্পদ, অধিকার ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শেখে, আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখে। অসৎসঙ্গ ত্যাগ করতে এবং পরিবার ও দেশের প্রতি অনুগত হতে শেখে, তাই দেশজ সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধশীল করে তুলতে পরিবারে রয়েছে বিরাট ভূমিকা। বিদ্যালয় নিঃসন্দেহে এ ধরনের শিক্ষাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু পরিবার থেকে যদি শিক্ষাটি আগেই শুরু হয় তা হলে তা এগিয়ে নিতে বিদ্যালয়ের পক্ষে অনেক সহজ হয়। তাছাড়া নৈতিকতা শিক্ষার মতো বিষয়টি শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে পরিবারই মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে এবং স্কুলের বাইরে দীর্ঘদিন পরিবার এই দায়িত্ব পালন করে থাকে। যে সমস্ত পরিবার ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধ প্রকট সেসব পরিবারের ছেলেমেয়েদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ একভাবে হবে, আবার যেসব পরিবারে ধর্মীয় মূল্যবোধ দৃঢ় নয় বা ধর্মীয় অনুভূতি অনুপস্থিত সেখানে কার ছেলেমেয়েরা সম্পূর্ণ ভিন্ন মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠবে। শিক্ষার্থীর পরিবারের আর্থসামাজিক শ্রেণিগত অবস্থান তার আচরণ ও শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম। উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা সাধারণত প্রাইভেট ও ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে বেশি উৎসাহী হয়ে থাকে। অন্যদিকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েরা সাধারণত বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েরা সরকারি অথবা বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রকৃতিগত পার্থক্যের ফলে প্রত্যেক শ্রেণির ছেলেমেয়েরা ভিন্ন ভিন্ন মানসিক গঠন নিয়ে গড়ে ওঠে। উচ্চবিত্ত শ্রেণির লোকেরা তাদের পারিবারিক সুনাম, অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর বেশি জোর দেয় এবং তাদের ছেলেমেয়েদেরকে ওই ধরনের মানসিকতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলে। পক্ষান্তরে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, স্বনির্ভরতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, পেশাগত সফলতা ব্যক্তিগত উন্নতি ইত্যাদির জন্য শিক্ষাকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে চায়। অন্য দিকে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ, যেমন- দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক, দিনমজুর কৃষক, ক্ষুদে ব্যবসায়ী ইত্যাদি শ্রেণির মানুষ তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ন্যূনতম স্তরের শিক্ষা গ্রহণের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়। এই ভাবে পরিবার থেকে শিক্ষাকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করার যে প্রবণতা বিভিন্ন অর্থনৈতিক শ্রেণির মধ্যে লক্ষ্য করা যায় তার প্রভাব ছেলেমেয়েদের ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সার্বিক শিক্ষা বিকাশের উপর পড়ে। দুটি প্রধান কারণে পরিবারের আর্থসামাজিক অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। প্রথমত: ছেলেমেয়েদের আচরণ বোঝার ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের আর্থসামাজিক শ্রেণি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত: শিক্ষাক্রম প্রণয়নের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণির চাহিদার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া। স্কুলে যাওয়ার পূর্বেই ছেলেমেয়েদের আচরণে তাদের বিশ্বাসে, অনুভূতিতে ও মনোভাবে একটি নির্দিষ্ট ধারা সৃষ্টি হয়। তাই স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিত্বকারী ছেলেমেয়েরা একই ক্লাসে ভর্তি হয়ে এক সাথে লেখাপড়া শুরু করলে তাদের মধ্যে আচরণগত পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যা সুষ্ঠুভাবে ক্লাস পরিচালনায় সমস্যা সৃষ্টি করে। এজন্যই শিক্ষার্থীদের শ্রেণিগত অবস্থান সম্পর্কে ধারণা থাকা একজন শিক্ষকের জন্য খুব প্রয়োজন। শিক্ষার প্রতি ছেলেমেয়েদের মনোভাব কেমন হবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে শিক্ষার প্রতি পরিবারের বিশেষ করে অভিভাবকদের মনোভাব কেমন তার উপর। মধ্যবিত্ত সমাজের জন্য জীবনে সফলতা লাভের ক্ষেত্রে শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে নিম্নবিত্তরা সফলতা লাভের ক্ষেত্রে অর্থকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করে। স্কুলে শিক্ষার্থীদের দলীয় আচরণ বোঝার ক্ষেত্রে ও তাদের শ্রেণিগত অবস্থান সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিম্নবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েরা স্কুলের সহঃশিক্ষামূলক কার্যক্রম এবং স্কুলের বাইরে সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে চায় না যার ফলে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব, বন্ধুত্ব, ও অন্যান্য প্রত্যাশিত সামাজিক আচরণের বিকাশ খুব কম হয়। আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণির আশা-আকাক্সক্ষা ও প্রয়োজনীয়তার উপর বেশি জোর দেওয়া হয় এবং বলা যায় যে এ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা নি¤œবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তাদেরকে শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে ততটা সহায়ক নয়। শিক্ষার সাথে জড়িত কর্মকর্তা এমন কি যারা সরাসরি শিক্ষাদান কার্যক্রমের সাথে জড়িত সেই শিক্ষকগণ ও মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে আগত তাই তারাও শিক্ষার্থীদের সমস্যা চিহ্নিত করণ ও সমাধানের ক্ষেত্রে তাদের শ্রেণিগত দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে আসতে পারে না। নি¤œবিত্ত পরিবারের কাছে শিক্ষার চেয়ে পেটের খোরাক জোগানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে হলেও পারিবারিক আয় বৃদ্ধির জন্য ছেলেমেয়েদের কাজে লাগায়। নি¤œবিত্ত সমাজের এই যে পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গি এটা তাদের সন্তানদের শিক্ষা বিকাশের ক্ষেত্রে মারাত্মক বাধার সৃষ্টি করে। তাই স্কুলের প্রতি ন্যূনতম অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হলেই নি¤œবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ড্রপআউট হয়ে যায়। এজন্য শিক্ষার্থীর প্রেষণা সৃষ্টিতে বিদ্যালয়ের যথাযথ ভূমিকা পালনের বিষয়টি অতীব গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের “ঝরে পড়া” ঠেকানো এবং তাদেরকে লেখাপড়ায় মনোযোগী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানা এবং সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন। জেমস ডেভী তার গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির সাথে তাদের পারিবারিক, আর্থসামাজিক অবস্থার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ডেভির মতে, পরিবারের আর্থিক সংগতি ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার ইচ্ছা এবং শিক্ষার প্রতি পরিবারের মনোভাব এই তিনটি উপাদানের পারস্পরিক ক্রিয়ার প্রভাব শিক্ষার্থীর উপর পড়ে। এই প্রভাব নেতিবাচক হলে সে ক্ষেত্রে তার শিক্ষার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। শিশুর জীবন বিকাশের সব ক্ষেত্রেই পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবার থেকেই শিশু সব ধরনের পারিবারিক সম্পর্ক সম্বন্ধে প্রথম অবগত হয়। শিশুর মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি কেমন হবে অন্যের প্রতি সে কিরূপ মনোভাব পোষণ করবে এবং কিভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে তা অনেকাংশেই শিশুর পারিবারিক কাঠামো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। পরিবারে বাবা ও মায়ের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে শিশুরা নারী ও পুরুষের ভূমিকা এবং নিজের লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্কে অবগত হয়। একক পরিবারের ক্ষেত্রে বাবা ও মায়ের মধ্যে যদি ভালোবাসা ও শৃঙ্খলা বোধের সম্মিলন ঘটে তা হলে পরিবারে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই ধরনের পরিবার হতে শিশু যে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা লাভ করে তা পরবর্তীতে তার সামাজিকি করণের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তবে ডিভোর্স বা অন্য কোন কারণে সৃষ্ট একক অভিভাবক পরিবারের ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে। বাবা-মায়ের ডিভোর্সের ফলে ছেলেমেয়েদের মধ্যে রাগ, ভয়, অপরাধবোধ, হীনমন্যতা, হতাশা ইত্যাদি প্রবণতা দেখা দেয়। ছেলেরা অনেক সময়ই আক্রমণাত্মক মনোভাব পোষণ করে। কর্তৃপক্ষের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হয়। জীবন, মানবিক সম্পর্ক সম্বন্ধে তাদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠে। যার প্রভাব তাদের শিক্ষা জীবনে পড়ে। তাই, একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষার বিকাশ তথা সামগ্রিক বিকাশের স্বার্থে তার আচরণ অনুধাবনের জন্য পরিবারের ভূমিকা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। সুতরাং অভিভাবক এবং পিতা-মাতার এ কথা মনে রাখা উচিত যে, পরিবার থেকে শিশু যে শিক্ষা পায় তা তাকে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে। পরিবারের শিক্ষা যদি ভঙ্গুর হয় তা হলে শিশুর পরবর্তী জীবনে নানা বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হয়।
লেখক : শিক্ষক ও প্রবন্ধিক
কোটবাড়ি, কুমিল্লা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।