Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘পদধারী ব্যক্তি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন না’

আরিফকে সাজা প্রদানের নথি হাইকোর্টে তলব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

পদধারী কোনো ব্যক্তি কখনোই রাষ্ট্র কিংবা সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করেন না। ওই পদধারী ব্যক্তি যদি কোনো অন্যায় করেন এবং রাষ্ট্র বা সরকার যদি সেই অন্যায়কে সমর্থন না দেয় সেটিই হচ্ছে আইনের শাসন। যদি সমর্থন দেয় বরং সেটি আইনের লঙ্ঘন। 

এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতন রিটের শুনানিকালে গতকাল সোমবার বিচারতি মো. আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ডিভিশন বেঞ্চ ওই মন্তব্য করেন। আদালত আরও বলেন, কুড়িগ্রামের ওই ঘটনার পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ডিসি যদি অপরাধ করেন তাহলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। আমরা ওনার বক্তব্যর প্রশংসা করছি। আমরা মনে করি, আমরা একজন ভালো মন্ত্রী পেতে যাচ্ছি।
রিটের পক্ষে শুনানি করে অ্যাডভোকেট এ এম আমিনউদ্দিন বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। তারাই সমাজের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা জেগে থাকলে সমাজে অন্যায় কম হয়। কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাসার দরজা ভেঙ্গে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে একজন সাংবাদিককে যেভাবে দন্ড দেয়া হয়েছে তা ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।
আদালত বলেন, সংবাদপত্র হচ্ছে সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ। এই চতুর্থ স্তম্ভ সাংবাদিকরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে রাষ্ট্রের বাকি তিন স্তম্ভ আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে।
শুনানি শেষে আদালত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে সাজা দেয়ার মামলার নথি তলব করেন। এছাড়া পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ মার্চ তারিখ ধার্য করেন। শুনানিতে রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানও শুনানি করেন। সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ রাতে অনলাইন নিউজ পোর্টালের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানের বাসার দরজা ভেঙ্গে তাকে তুলে নিয়ে যায় মোবাইল কোর্ট। জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের নির্দেশে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থ দন্ড দেয়া হয়। তাকে বিবস্ত্র করে চোখ বেধে নির্যাতন করা হয়। মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কারাগারে। এ ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
গত রোববার অনলাইন পোর্টালটির নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ বাদী হয়ে রিট করেন। রিটে টাস্কফোর্সের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থি হবে না, আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারির আবেদন জানানো হয়।
রিটে কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারি কমিশনার, সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত সাজা প্রদান সংক্রান্ত নথি তলব করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ