Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

নির্বাচন নাকি জীবন!

করোনায় ভোট চান না চট্টগ্রামবাসী

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশে বন্ধ। মহান মুজিব জন্মশতবর্ষের রাষ্ট্রীয় মাহেন্দ্রক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি স্থগিত ও কাটছাঁট করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবরকম জনসমাগম এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেন স্বয়ং। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার রাষ্ট্রনেতাসুলভ বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সবার আগে দেশের জনগণকে সুরক্ষার স্বার্থেরই চিন্তা-চেতনা, দরদী মানসিকতার সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে। অথচ বন্ধের মধ্যেই আগামী ২৯ মার্চ দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দরনগরী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচন জগদ্ধল পাথরের মতো চেপে বসেছে ৭০ লাখ মানুষের ঘাড়ে। বৈশি^ক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে দিন দিন পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে। তবুও চসিক নির্বাচনের তারিখ পাল্টায়নি সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত। গতকালও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে মানুষের কথাবার্তায় ঘুরেফিরে একটি প্রশ্ন করোনা। পরিস্থিতি কোন্ দিকে যাচ্ছে? আশার বাণী কিছু আছে কিনা? চসিক ভোট নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই বিন্দুমাত্র। চট্টগ্রামে নির্বাচন কমিশনের অফিসে মাস্ক পরা অবস্থায় লোকজন যাতায়াত করছেন।
ভোটের ভাবনা জানতে চাইলে অনেকেই এ প্রতিনিধিকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এখনই কী এই নির্বাচন দরকার? নাকি দেশের মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা আগে? ঝুঁকি নিয়ে আপনি ভোটকেন্দ্রে যাবেন কিনা বলুনা’? তারা বললেন, ইসির ইচ্ছামাফিক নির্বাচন করতে গেলে জনগণকে বাদ দিয়ে হাওয়া থেকে পড়বে নাকি ভোট?
সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পরই নগরীবাসীর মাঝে একটা বদ্ধমূল ধারণা প্রকাশ পায়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মাথায় রেখে শেষ পর্যন্ত চসিক ভোটের তারিখ স্থগিত অথবা পিছিয়ে যাবে। চসিকের মেয়াদকালও রয়ে গেছে আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) জনস্বার্থে চাইলে তা পিছিয়ে দিলেই মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন।
জনমনে সজোরে নাড়া দিয়েছে করোনাভাইরাস। ছোঁয়াচে এ মহামারীর সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কিত ও সতর্ক সবাই। প্রতিদিনই বিদেশফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। খোলা হয়েছে বিশেষ আবাসস্থল। ধর্মপ্রাণ বারো আউলিয়ার মানুষ মহারোগ থেকে পানাহ চেয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে সবাই খুঁজছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপায়। অথচ ভোটের প্রচারে মাইকে বাজছে- ‘২৯ তারিখ শুভ দিন, ... মাকায় ভোট দিন’। সবার কথা, ‘দুঃসময়ে এ কীসের নির্বাচন!
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণার পরই ঘরমুখী নগরবাসী। ২৯ মার্চ চসিক ভোটের দিন যদি বহাল থাকে তাহলে ৪১টি ওয়ার্ডের ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৫২ জন ভোটারের বেশিরভাগই তখন থাকবেন গ্রামে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চসিক নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সম্পূর্ণ এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। গত শনিবার সিইসি মহোদয় চট্টগ্রামে প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং প্রার্থীদের সাথে পৃথক সভা করে গেছেন। তিনি বলেছেন নির্বাচনের তারিখ পেছাবে না। আমরা মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দেখা যাক।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ