Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধ্যরাতে মোবাইল কোর্টে কারাদণ্ড বেআইনি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে ঘর থেকে তুলে আনার পর মোবাইল কোর্টে বিচার করে কারাদণ্ড দেওয়ার পুরো ঘটনাকেই বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি দাবি করেছে যে, আইনের এমন যথেচ্ছ অপপ্রয়োগ আইনের শাসনের সাংবিধানিক অঙ্গীকারের পরিপন্থি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর নামান্তর। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় দ্রুত তদন্ত এবং জড়িতদের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে প্রশাসন তথা সরকারের ওপরই জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলবে বলেও মন্তব্য করা হয় টিআইবির বিবৃতিতে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। সে অনুযায়ী রাতের বেলা কোনো নাগরিককে ঘর থেকে তুলে এনে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অবৈধ। যে সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তিনি যদি সন্দেহের তালিকায় থাকতেন, তাহলে তাঁকে নজরদারিতে রাখা যেত। কিংবা ‘অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায়’ পুলিশ অভিযান চালাতে পারত। আরো গুরুতর মনে হলে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর বাসা সিলগালা করে দিয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মধ্যরাতে ‘দরজা ভেঙ্গে’ একজন নাগরিককে তুলে আনা এবং পরে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়াটা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা যতটুকু বুঝি, তাতে মোবাইল কোর্টের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা, কিন্তু তা না করে ঐ সাংবাদিককে তুলে আনার পর কোর্ট এর কার্যক্রম পরিচালনা থেকে পুরো ঘটনাটির পিছনেই যে অপরাধ দমন নয় বরং অন্য কোনো বিবেচনা কাজ করেছে তা স্পষ্ট।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আরিফুল ইসলাম জেলাপ্রশাসক ও তাঁর নেতৃত্বে জেলাপ্রশাসনের ‘নানা স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের’ বিষয়ে প্রতিবেদন করে আসছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করার জন্যই যদি তাঁকে এমন বেআইনিভাবে তুলে এনে বিচার করা হয়ে থাকে, তবে সেটা দেশের জন্য এক অশনি সংকেত। কারণ সেক্ষেত্রে এই পুরো ঘটনাপ্রবাহকে বিবেচনা করতে হবে গণমাধ্যমের জন্য একটি সতর্ক বার্তা হিসেবে, যার সরাসরি অর্থ- দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করা যাবে না। যেখানে দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার অঙ্গীকার করেছেন, সেখানে প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার এহেন আচরণ গুরুতর অসদাচারণ এবং সরকারকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার শামিল।

ঘটনার গুরুত বিবেচনায় যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত এই অভিযোগের সুরাহা করে, দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগতব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোবাইল

১৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ