পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীতে পানি সঙ্কট কমেনি। ফাল্গুন মাসেই বিভিন্ন এলাকায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানিতে ময়লা-দুর্গন্ধ রয়েছে। মহানগরবাসীকে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না ওয়াসা। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসলেও সমস্যা সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করেই আরেক দফা পানির দাম বাড়াচ্ছে ঢাকা ওয়াসা। এর ফলে ভোক্তাদের ঘাড়ে চাপতে বসছে আরো একদফা বাড়তি খরচের বোঝা। পানির দাম বৃদ্ধিতে আবাসিক সংযোগে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির মূল্য ১৪ দশমিক ৪৬ টাকা এবং বাণিজ্যিক সংযোগে ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে ঢাকা ওয়াসা। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হবে।
এর আগে ওয়াসার পানির দাম তথা আবাসিকে ১ হাজার লিটার পানির দাম ছিল ১১ দশমিক ৫৭ টাকা, আর বাণিজ্যিক সংযোগে ছিল ৩৭ দশমিক ৪ টাকা ছিল। সে হিসাবে আবাসিকে বেড়েছে প্রতি হাজার লিটার পানিতে ২ দশমিক ৮৯ টাকা এবং বাণিজ্যিকে ২ দশমিক ৯৬ টাকা।
জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, পানির দাম যে হারে বাড়ানো হয়েছে সেটা যৌক্তিক না। এটার সঙ্গে এখন আবার বাড়ি ভাড়া বাড়বে। এদিকে বিদ্যুতের দামও বাড়ছে। ভোক্তাদের ওপর একপ্রকার বাড়তি চাপ ফেলবে। এর প্রভাবে অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বাড়বে। আমরা আশা করছি সরকার বিষয়টি বিবেচনা করে দাম কমাবে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পানির দাম বাড়ানোর চেয়ে বড় কথা সুপেয় পানি দেয়া। সেটা কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না। সেটা না করে বারবার দাম বাড়ানো যৌক্তিক নয়। আশা করি সরকার বিষয়টি দৃষ্টি দিয়ে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে দাম কমাবে।
ওয়াসার আইন অনুযায়ী ওয়াসার বোর্ড প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে পানির দাম বাড়াতে পারে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমোদন নিয়ে এবার পানির দাম ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। এর আগে গত বছরের জুলাইতে পানির দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন ইউনিটপ্রতি ৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছিল।
পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ওয়াসা বলছে, পানির উৎপাদন ও বিতরণ ব্যয়ের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের সামঞ্জস্য বিধান এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে ব্যয় সমন্বয় করতে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। মিটারবিহীন হোল্ডিং, গভীর নলক‚প, নির্মাণাধীন ভবন ও ন্যূনতম বিলসহ সব ধরনের (পানি ও পয়:) অভিকরের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে।
অথচ গত বছরের এপ্রিলে পানি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সেদ্ধ করে পান করেন।
ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ নিয়ে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তুলকালাম কান্ড ঘটে। তখন কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে পরিবার নিয়েই মানববন্ধন করেন জুরাইন নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান। তার ইচ্ছা ছিল ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার পানি দিয়ে বানানো এক গ্লাস শরবত খাওয়ানো। কিন্তু ওয়াসা এমডি ময়লা পানির শরবত খাননি।
ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য পানির দাম ৮০ শতাংশ বাড়াতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেয় ওয়াসা। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দেয়া চিঠিতে ওয়াসা আবাসিক ব্যবহারের জন্য প্রতি ইউনিট বা ১ হাজার লিটার পানির দাম ১১ দশমিক ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বর্তমান দাম ৩৪ টাকা ৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ঢাকা ওয়াসার পানির সংযোগ রয়েছে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৫১টি। এই সংযোগ থেকে ১ কোটির বেশি মানুষ পানি ব্যবহার করে। বর্তমানে ঢাকায় দৈনিক পানির উৎপাদন ২৪৫ কোটি লিটার। নগরবাসীর মোট চাহিদা ২৩০ থেকে ২৩৫ কোটি লিটার। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ৩টি পানি শোধনাগার এবং ৯৩০টি গভীর নলক‚প রয়েছে। তবে গভীর নলক‚প চালু রয়েছে ৮৭০টি। বর্তমানে ওয়াসার পানি উৎপাদনক্ষমতা ২৬০ কোটি লিটার। আর চাহিদা রয়েছে ২৩৫ কোটি থেকে ২৪০ কোটি লিটার। পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান বলেন, পানির দাম যা রয়েছে তা উৎপাদন খরচের তুলনায় অনেক কম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।