পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় এই মহামারীতে চীনের বাইরে ১১২টি দেশে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত এবং প্রায় ১ হাজার ৫ শ’ জনের মৃত্যু ঘটেছে। বর্তমান রাজনৈতিক নেতাদের বেশিরভাগই এমন মহামারী এবং এর ফলে ঘটা অর্থনৈতিক পতনের মুখোমুখি হননি। যদিও অনেকেই ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠছেন, তারা অনেক দেরীতে বুঝেছেন যে, তাদের স্বাস্থ্যসেবা হিমশিম খাবে এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। এতে নেতারা শেষ পর্যন্ত একমত হয়েছেন যে, এই ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তারা কীভাবে এটি মোকাবেলা করবেন, তা নির্ধারণ করবে ৩টি বিষয়: অনিশ্চয়তার প্রতি তাদের মনোভাব; তাদের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো ও দক্ষতা এবং সর্বোপরি তারা বিশ্বাসযোগ্য কিনা।
করোনার সমাধান হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের অনুসরণ করা নির্দয় কোয়ারেন্টাইন বা সঙ্গনিরোধ, গণ-পরীক্ষা এবং সংস্পর্শ অনুসরণ প্রক্রিয়া চাপিয়ে দিয়েছে। এর জন্য চীনকে চড়া মানবিক এবং অর্থনৈতিক মূল্য দিতে হয়েছে। তবে নতুন সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে। এই সপ্তাহে করোনার বিরুদ্ধে বিজয়ের পদক্ষেপ হিসেবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মহামারীটির উৎসস্থল হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান পরিদর্শন করেন। তবুও চীনে অনিশ্চয়তা বজায় রয়েছে, কারণ সঙ্গনিরোধ প্রক্রিয়া শিথীল করায় কেউ জানে না যে, সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা আসবে কিনা।
রাজনীতিবিদরা সত্য গোপন করছেন, এই সন্দেহের চেয়ে গুজব ও ভয়ের আর কিছুই নেই। তারা যখন মহামারীর আতঙ্ক দমন করতে ভুল পদক্ষেপ নেন, নিজেরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন এবং এর ফলে বহু প্রাণ ঝরে যায়। এখনো নেতারা মহামারী এবং এটি সম্পর্কে কীভাবে কথা বলতে হয় সেই বিষয়ে খাবি খাচ্ছেন। বিশেষতঃ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শত্রুদের আক্রমণ করার জন্য ভিত্তিহীন আশাবাদ থেকে আপাতত বিরত রয়েছেন। চলতি সপ্তাহে তিনি ইউরোপের বেশিরভাগ অংশের ওপর ৩০ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার জারি করেছেন যা আমেরিকাতে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়া রোগটিকে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনবে। মানুষ যখন একে একে স্বজন এবং আত্মীয়দের মৃত্যু চাক্ষুষ করবে, তখন বুঝতে পারবে যে, মহামারীটিকে বিদেশী, ডেমোক্র্যাটস এবং সিএনএনের ষড়যন্ত্র হিসাবে নির্মূল করা সম্ভব নয়।
অনিশ্চয়তা মানুষের বিশ্বাসের উপর প্রভাব ফেলবে। বিশ্বাস নেতাদের স্কুল বন্ধসহ সঙ্গনিরোধ এবং সামাজিক দূরত্ব তৈরি করার বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুমতি দেয়। ইরান সরকার, যারা দীর্ঘকাল ধরে জনগণের কাছে অপ্রিয়, করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর বিষয় আড়াল করা নিয়ে তাদের ওপর ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে। বিদ্রোহী আলেমরা সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়া সত্তে¡ও মাজারগুলি বন্ধ করতে অস্বীকার করতে পারে, এটি একটি কারণ হতে পারে। রাজনীতিবিদদের কী করা উচিত? প্রতিটি দেশকে অবশ্যই রোগ প্রতিরোধের সুবিধা এবং গোপনীয়তা দু’টোর মধ্যে তার নিজস্ব ভারসাম্য তৈরি করতে হবে। তবে দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন সংক্রমণ সনাক্তকরণ এবং তার বিস্তারকে সীমাবদ্ধ করার উপায় হিসাবে তাদের বিশাল তথ্যভান্ডার এবং গণপরীক্ষার ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। নেতৃবৃন্দের উচিত আগেই মহামারীটির আভাস দেয়া, কারণ এর বিস্তার রোধ করতে জনসমাগমের উপর পূর্বেই নিষেধাজ্ঞা জারি করলে তা আরও কার্যকর হয়।
কীভাবে এই ধরনের বিষয়গুলো সামলাতে হবে, তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হলো সিঙ্গাপুর, যেখানে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম সংক্রমণ ঘটেছে। সিঙ্গাপুরের মতো একটি একক ক্ষুদ্র অঞ্চলের দক্ষ আমলাতন্ত্র এবং দেশটির বিশ্বমানের সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাকে ধন্যবাদ। দেশটি ২০০৩ সালের সার্স ভাইরাসের মহামারী থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিয়েছে এবং করোনার বিরুদ্ধে পূর্ব প্রস্ততি গ্রহণ করেছে। সিঙ্গাপুর জনসাধারণের কঠিন সম্মতি আদায়ে সক্ষম হয়েছে, কারণ এ বিষয়ে তার বার্তাটি ছিল ধারাবাহিক, বিজ্ঞান-ভিত্তিক এবং বিশাসযোগ্য।
মহামারীটি চিকিৎসক, বিজ্ঞানী এবং নীতি বিশেষজ্ঞদেরও সরকারের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে নিয়ে এসেছে। মহামারী সম্পূর্ণই বিশ্বজনীন বিষয়। এটি নিরোধে চিকিৎসার নিয়মনীতি, প্রয়োগবিদ্যা এবং প্রতিষেধকের ওপর রাষ্ট্রগুলির একযোগে কাজ করা উচিত। চিন্তিত ভোটারদের পক্ষপাতদুষ্ট রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের খেলা দেখার রুচি খুব একটা নাও থাকতে পারে। তাদের আসল সমস্যাগুলি মোকাবিলার জন্য সরকারকে তাদের পাশে প্রয়োজন যা সত্যিকারের রাজনীতির মূলমন্ত্র। সূত্র : দ্য ইকোনমিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।