পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে পেঁয়াজের দাম নাগালের মধ্যে এসে গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বাজারগুলোতে এখন ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদনও হয়েছে প্রচুর। কিন্তু এর মধ্যে ভারত কাল (১৫ মার্চ) থেকে পেঁয়াজ রফতানি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না নিলেও কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়ে গেছে। কৃষকদের শঙ্কা ভারত কম দামে পেঁয়াজ রফতানি শুরু করলে বৈধ-অবৈধ পথে ভারতীয় পেঁয়াজে বাংলাদেশের বাজার ছয়লাব হয়ে যাবে। যে স্বপ্ন নিয়ে কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদন করছেন তা পাবেন না।
ভারত গত ২৬ ফেব্রæয়ারি পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়; যা কার্যকর হবে ১৫ মার্চ রোববার। এ ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশে পণ্যটির দাম কমতে থাকে।
গত বুধবার (১১ মার্চ) ভারতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়, দেশটির মহারাষ্ট্রের নাসিকে গ্রীষ্ম মৌসুমের পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। নাসিকের পেঁয়াজের বড় পাইকারি বাজার লাসালগাঁওয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ১০ রুপি ও সর্বোচ্চ ১৯ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য রাজ্যে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাপক। পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় ভারত রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকেরা দাম কমে যাওয়ার বিক্ষোভও করেছেন। এ অবস্থায় ভারত চায় দেশটির পেঁয়াজ বিদেশে রফতানি করতে। বিশেষ করে তাদের পেঁয়াজের রফতানির বড় বাজার বাংলাদেশে পাঠাতে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সীমান্ত বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের চালান বাংলাদেশে আসা দূরহ। তবুও কৃষকদের শঙ্কা ভারত পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠালে কৃষকদের পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ নিয়ে ঝুকির মুখে পড়তে হবে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেয়া।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার নিজেদের বাজার সামাল দিতে পেঁয়াজের রফতানিমূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। এতে করে ১৫ টাকা রুপির পেঁয়াজের দাম বেড়ে ৬৫-৭০ রুপি হয়। এরপর ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। আর তখন থেকেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে বিমানে করে আমদানি করা হলেও পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫০ টাকায় উন্নীত হয়।
এখন কার্যত পেঁয়াজের ভরা মৌসুুম। সেই সঙ্গে শুরু হয় ক্রেতাদের অস্বস্তি। কিন্তু ভারতের পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার খবরে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন বাংলাদেশের পেঁয়াজ চাষিরা। তারা বলছেন, এখন নতুন মৌসুমের হালি পেঁয়াজ (সংরক্ষণ করা যায়) উঠতে শুরু করেছে। এই সময়ে দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আসলে দাম একেবারেই পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। রাজশাহীর পবা উপজেলার এক চরের কৃষক বলেন, এবার দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে তা চাহিদা মেটাতে পারবে না ঠিকই। কিন্তু কৃষক যাতে পণ্যের মূল্য পায় সে জন্য সরকারের উচিত ভারতের পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা দেয়া। কারণ ভারত গত বছর হঠাৎ করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি করে যে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে তার উচিত জবাব হবে ভারতীয় পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ফরিদপুর জেলায়। জেলার একাধিক কৃষক জানান, এবার চাষিরা প্রচুর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। যখন তারা আবাদ শুরু করেন, দাম অনেক চড়া ছিল। এখন যখন পেঁয়াজ উঠছে, তখন দাম কমে গেছে। এ অবস্থায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করা হলে কৃষকদের দুর্দশা আরো বাড়বে।
অবশ্য ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি একাধিকবার কৃষককে সুরক্ষা দেয়ার কথা বলেছিলেন। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক কয়েকদিন আগে বলেছেন, কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সে দিকে লক্ষ্য রেখে পেঁয়াজ আমদানির বিপক্ষে সরকার।
দেশে পেঁয়াজ চাষ করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ধানের মতোই পেঁয়াজেও দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারেন সরকারি সহায়তা পেলে। ভারতীয় পেঁয়াজ বৈধ-অবৈধ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারকে কঠোর হওয়ার অনুরোধ জানান ওই চাষিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।