পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দু’জন সম্পূর্ণ সুস্থ, যে কোনো সময় ছেড়ে দেওয়া হবে : বিদেশ থেকে আসলেই ‘সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের’ অনুরোধ করছি : স্বাস্থ্যমন্ত্রী : সামিট গ্রুপের পাঁচটি থার্মাল স্ক্যানার প্রদান
করোনায় আক্রান্ত তিনজনই সুস্থ আছেন। এদের মধ্যে দু’জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের যে কোনো দিন ছেড়ে দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দুই মাস আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। একই সঙ্গে যারা বিদেশ থেকে আসছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। তাদের নিজ উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিচ্ছি, অনুরোধ জানাচ্ছি। গতকাল জাতীয় হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনাভাইরাসের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এর আগে সামিট গ্রæপ বিদেশফেরত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সরকারকে পাঁচটি থার্মাল স্ক্যানার উপহার দেয়। এ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণারয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান সামিট গ্রæপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. লতিফ খান, সামিট গ্রæপের পরিচালক আজিজা আজিজ খান প্রমুখ। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর হার খুবই কম বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক। তাই এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, এই করোনা ভাইরাস পরিবারের অন্যতম সদস্য সার্স ভাইরাসে মারা গেছে ৩৫ শতাংশ, মার্সে ১২ শতাংশ। সে তুলনায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর হার খুবই কম, শতকরা এক থেকে তিন শতাংশ। সেটাও শুধু ৬০ বছরের ওপরে যাদের বয়স এবং যাদের অন্য জটিলতা রয়েছে। আমরা যদি এভারেজ ধরি তাহলে সেটা ১০০ জনে একজন উল্লেখ করেন ডা. মোজাহেরুল হক। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা শনাক্ত ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিদেশ থেকে আসা সবাইকেই থার্মাল স্ক্যানারের মধ্য দিয়ে আসতে হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা বিদেশ থেকে আসছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। তাদের নিজ উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিচ্ছি, অনুরোধ জানাচ্ছি। মানুষ এখন অনেক সচেতন। বিদেশ থেকে কেউ আসলে তারা, তাদের আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরাও আমাদের হটলাইনে ফোন করে পরামর্শ চাচ্ছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডাক্তারের সংখ্যা ছিল ১০ জন, এখন ৩০ জন। ডেস্ক ছিল দুটি। এখন চারটা। কাজেই জনবল স্বল্পতার অভিযোগ করা সমীচীন হবে না। তবে এরপরও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজ করছে। তিনি জানান, সামিট গগ্রæপ পাঁচটি থার্মাল স্ক্যানার অনুদান হিসেবে দিয়েছে, এগুলো বিভিন্ন বন্দরে পাঠানো হচ্ছে। দেশে নতুন কোনও রোগী শনাক্ত হয়নি বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে তিন জনের দেহে করোনা পাওয়া গিয়েছিল তাদের মধ্যে দুই জন এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। সর্বশেষ পরীক্ষায়ও তাদের দেহে কোনও ভাইরাস পাওয়া যায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) দেওয়া নির্দেশনা বাংলাদেশে মানা হয়েছে কিনাএমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দুই মাস আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। কারণ থার্মাল স্ক্যানারগুলো অর্ডার করা হয়েছে আগেই। এগুলো এখন আসছে, লাগানো হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণভাবে সব নির্দেশনা ফলো করছি। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় সরকার স্কুলসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কথা ভাবছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে জাহিদ মালেক বলেন, শুধু স্কুলগুলো নয়, দেশের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানাগুলোয় যে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক কাজ করে তাদের বিষয়েও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভাবছে। স্কুলসহ সব জায়গায় হ্যান্ড সেনিটেশন করার জন্য বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় নিয়ে বৈঠক করে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে সাবান দিয়ে হাত ধুলেও হ্যান্ড সেনিটেশন হয়।
রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাসংস্থার (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা গতকাল জানান, তিনজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাস আক্রান্তের মধ্যে দুইজন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছেন। দ্বিতীয়বার পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে তারা দু’জনই এখন বাড়ি ফিরতে পারবেন। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, দ্বিতীয় পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ দেখানোর অর্থ তারা হাসপাতাল থেকে চলে যেতে পারবেন। অন্যদিকে, আইইডিসিআর এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টেফিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় আমরা দ্বিতীয় পরীক্ষাটি করি আর ফলাফল দেখে নিশ্চিত হই যে তারা এখন সম্পূর্ণ ভাইরাসমুক্ত। এমনকী তারা চাইলে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। এর আগে গত বুধবার আইইডিসিআর জানিয়েছিলো, নতুন পরীক্ষার ফলাফলে প্রথমে দুইজনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ‘পজিটিভ’ দেখালেও পরে তা ‘নেগেটিভ’ ফল দেখায়। এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও আক্রান্ত রোগীদের বিষয়ে মনিটরিংয়ের জন্য দেশের আট বিভাগে উপসচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার আট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রয়েছেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া, সারাবিশ্বে ৫জন সিঙ্গাপুর আর দুইজন ইতালি ও আরব আমিরাতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত বাংলাদেশির খোঁজ মিলে। এরমধ্যে, সিঙ্গাপুরের ৫জনের মধ্যে ৪জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এবং অপরজন গুরুতর অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।