Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানবজমিনের সম্পাদকের মামলা প্রত্যাহারের দাবি বিভিন্ন সংগঠনের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

মানবজমিন এর বিরুদ্ধে মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। গতকাল ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইইনটি (ডিআরইউ), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে এ দাবি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে ডিইউজে’র নবনির্বাচিত সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি নিবর্তনমূলক। এই আইন প্রণয়নের পর থেকেই সাংবাদিক সমাজ আইনটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে। স¤প্রতি দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও প্রতিবেদক আল আমীনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ গোটা সাংবাদিক সমাজ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মতিউর রহমান চৌধুরী ও আল আমীনের বিরুদ্ধে দায়ের করা নিবর্তনমূূূূূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই সঙ্গে সরকার কর্তৃক স্বীকৃত গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনও প্রতিবেদন দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা ক্ষুব্ধ হলে তাদের প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রতিকার গ্রহণের আহŸান জানান।

অপর এক বিবৃতিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সিনিয়র সদস্য ও দৈনিক মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং সংগঠনের সদস্য আল-আমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানিমূলক মামলায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী এক বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি নিবর্তনমূলক আইন হওয়ায় সাংবাদিক সমাজ শুরু থেকেই এটিকে প্রত্যাখান করেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রকাশিত কোনো সংবাদে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংক্ষুদ্ধ হলে তার জন্য বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। তা না করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নেতৃবৃন্দ দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও স্টাফ রিপোর্টার আল-আমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং তাদের হয়রানি না করার দাবি জানান। উল্লেখ্য, গত ২রা মার্চ দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় আল-আমিনের লেখা ‘পাপিয়ার মুখে আমলা-এমপি ব্যবসায়ীসহ ত্রিশ জনের নাম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের পরই মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর গত ৯ই মার্চ সোমবার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। অথচ রিপোর্টের কোথাও তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।

মানবজমিনের সম্পাদকসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আসক মনে করে, এ ধরণের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করে এবং সাংবাদিকেদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। গতকাল সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়। এতে বলা হয় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত ঘটনায় একটি সংবাদ প্রকাশের কারণে দৈনিক ‘মানবজমিন’-এর সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আসক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং মামলাটি দ্রæত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।

আসকের পক্ষ থেকে আরো বলা হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, গত ৯ মার্চ রাতে মাগুরা-১ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর মানহানির অভিযোগ করে নিজে বাদী হয়ে শেরেবাংলা থানায় এ মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকে মানবজমিনের সম্পাদক বলেছেন, তার পত্রিকার প্রতিবেদনে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তাই কারও মানহানি হওয়ারও সুযোগ নেই। অন্যদিকে এ মামলা করার পর থেকে অন্যতম অভিযুক্ত আলোকচিত্র সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে থানায় জিডি করেছে তার পরিবার। আসক কাজলকে দ্রæত খুঁজে বের করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানাচ্ছে।

আসক মনে করে, এ ধরণের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করে এবং সাংবাদিকেদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে শুরু থেকেই আসক উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে কেননা আইনটির বেশ কয়েকেটি ধারা জাতীয় ও আন্তজার্তিক মানবাধিকার মানদÐের সাথে অসামঞ্জস্য এবং মানুষকে হয়রানির উদ্দেশ্যে সহজে ব্যবহার করা যায়। আইনটি অনুমোদনের পর থেকে বেশ কয়েকটি ঘটনায় এ আশংকা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। আসক মনে করে, এ আইনটি গভীরভাবে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা অত্যাবশ্যকীয়।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সম্পাদক

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ