Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাটিরাঙ্গায় সহিংসতায় ৫জন নিহতের ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা

রামগড় (খাগড়াছড়ি) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২০, ১০:০৭ পিএম

মাটিরাঙ্গায় গত ৩ মার্চের সহিংসতার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের করা গঠিত কমিটি বুধবার (১১ মার্চ) রাত প্রায় ১২ টার দিকে এ প্রতিবেদন জমা দেন। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে হয়েছে দাবি করেছেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার রিজাউল করিম সাংবাদিকদের জানান। তবে এর বাইরে প্রতিবেদনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি।

তবে নাম প্রকাশে অনচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজিবি সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ভিডিও চিত্র এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনার পেছনের ৫ টি তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে মন্তব্যসহ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বিজিবি’র পক্ষ থেকে গ্রামবাসীকে জড়িয়ে হামলা, সরকারি কাজে বাঁধা ও হত্যার অভিযোগ থাকলেও নিহত গ্রামবাসীরা নিরস্ত্র ছিল বলে জানানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। বিজিবির ওপর গ্রামবাসী ও নিহতদের হামলার অভিযোগটির সত্যতা পায়নি কমিটি। নতুন বিদ্যুৎ লাইনের কাজের জন্য বাড়ির পাশের কাঠাল গাছ কেটে ৫ টুকরো গাছ ট্রাক্টরে(ট্রলি) করে স’মিলে নেয়ার পথে বাধা দিয়েছিল বিজিবি সদস্যরা।

এ সময় বাকবিতন্ডতা হয় নিহত শাহাব মিয়া ও মফিজ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। এতে গ্রামের অন্য কেউ ছিল না। তদন্ত কমিটির কাছে গত ১০ মার্চ ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক বিজিবি সদস্যের বক্তব্যে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ার কথা স্বীকার করেছে। নিহত বিজিবি সদস্য মো. শাওন খানের মৃত্যেুর রহস্য উদঘাটন হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোঁড়ার কিছু সময় আগে ধারণ করা কয়েক সেকেন্ডের এক ভিডিও চিত্রে দেখা যায় নিহত বিজিবি সদস্য শাওন খানের কাছে কোন অস্ত্র ছিল না। ভিডিওতে শাওনকে স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। আর নিহত এক ব্যক্তি বিজিবি সদস্যের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালানোর কথা বিজিবির পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও একজন প্রশিক্ষিত বিজিবি জোয়ান থেকে পঞ্চাশ বয়সী এক ব্যক্তির পক্ষে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে উক্ত প্রতিবেদনে। গাছ কাটা ও পরিবহনে বিজিবির বাধা দেয়ার কাজ তাদের দায়িত্বে ছিল না বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ঘটনার দিন বিজিবি সদস্যরা যদি পেশাদার ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করত তাহলে এতো বড় ঘটনা এড়ানো যেত বলেও মন্তব্য করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার রিজাউল করিম ছাড়াও তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মেহেদী হাসান ও সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ হোসেন।

উল্লেখ্য যে, গত ৩ মার্চ মাটিরাঙ্গার গাজীনগরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে করে বিজিবির সাথে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত ও ১ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। এ ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ৬ কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এ ঘটনায় বিজিবি ও নিহতদের পরিবার পাল্টাপাল্টি মামলা করে মাটিরাঙ্গা থানায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ