Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘ভাসা ভাসা’ গাইডলাইন

চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ভারতের ট্রানজিট-করিডোর ট্রায়াল রানের তারিখ চূড়ান্ত হয়নি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায়

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় মালামাল পরিবহনের জন্য ট্রানজিট-করিডোর সুবিধা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রয়ে গেছে পদে পদে অস্পষ্টতা। ট্রানজিট ও করিডোর ‘সেবা’র বিনিময়ে ন্যুনতম মাশুল, শুল্ক-কর বা রাজস্ব, ট্যারিফ, বন্দর চার্জ-ফি, সার্ভিস চার্জ ইত্যাদি কী হারে আরোপ বা আদায়যোগ্য হবে? এই প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রই স্বীকার করেছে, এসব অপরিহার্য আর্থ-স্বার্থগত বিষয়ের অনেক কিছুই বলতে গেলে এখনও ‘ভাসা ভাসা’ রয়েই গেছে। কিছু ক্ষেত্রে কাটেনি জটিলতাও।

গতকাল উভয় সমুদ্র বন্দর দিয়ে ভারতের পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট-করিডোর সুবিধা কার্যকর করতে গাইড লাইন নির্ধারণের লক্ষ্যে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম, মংলা ও স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ, সড়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), শিপিং মহাপরিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সভায় কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর থেকে ভারতীয় পণ্যভর্তি কন্টেইনার নিয়ে ট্রায়াল রানের জাহাজ কবে আসবে তার তারিখ চূড়ান্ত করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ট্রানজিট চালুর লক্ষ্যে চলতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি অথবা তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ কলকাতা থেকে প্রথম জাহাজটি আসার কথা ছিল। এরআগে গত জানুয়ারির শেষ ও ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ট্রায়াল রানের একাধিক ভারতীয় জাহাজ কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর থেকে আগমনের কথা জানানো হয়েছিল।

তবে একজন কর্মকর্তা জানান, কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম কিংবা মংলা বন্দরে জাহাজ আসার জন্য দু’তিন দিন সময়ই যথেষ্ট। কাজেই যে কোনো সময় জাহাজ আসার সিডিউল হতে পারে।

এদিকে গতকালের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা সূত্রে আরও জানা গেছে, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর দু’টি থেকে ভারতীয় পণ্যভর্তি জাহাজ চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের কোন জেটি-বার্থে ভিড়বে, সম্ভাব্য জাহাজ কী ধরনের হতে পারে (ক্রেনযুক্ত নাকি গিয়ারলেস, খোলা বাল্ক-জাহাজ অথবা কন্টেইনার ফিডার জাহাজ কিনা), আনীত কন্টেইনার বিশেষভাবে নির্দিষ্ট কোন ইয়ার্ডে ই-লক অবস্থায় খালাস করা হবে ইত্যাদি বিষয় স্পষ্ট ও চূড়ান্ত করা যায়নি।
তবে উভয় সমুদ্র বন্দরে আনীত কন্টেইনার কাস্টম হাউসের মাধ্যমে ছাড়করণ, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে সড়ক মহাসড়ক পথে আখাউড়া হয়ে ভারতীয় সীমান্ত পাড়ি দেয়া, মাঝপথে নিরাপত্তা পাহারাদান সম্পর্কে প্রয়োজনীয় করণীয় ও দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা সভায় বলেছেন, প্রচলিত হালে সিডিউল অব বন্দর চার্জসমূহ আদায় করা হবে। ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের ক্ষেত্রে বাড়তি কোনো মাশুল থাকবে না।

চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে আনীত ভারতের পণ্য সড়ক-নৌ-রেলপথে ভারতে পরিবহনের লক্ষ্যে গত অক্টোবর-২০১৯ সালে দিল্লিতে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকে স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি এবং তার বাস্তবায়ন সম্পর্কিত এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) অনুসারে প্রথমদিকে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর থেকে ট্রায়াল রানে মালামাল কন্টেইনারে আনা হবে। এই প্রক্রিয়ায় ভুল-ত্রুটি ধরা পড়লে তা শুধরিয়ে পুরোদমে ট্রানজিট ও করিডোর ব্যবস্থা চালু হবে। ভারতের পণ্য সরাসরি পরিবহন করা হবে শুরুর দিকে ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসামে। এরপর উত্তর-পূর্ব ভারতের বাদবাকি রাজ্য মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল ও সিকিমে।

এছাড়া ভারত নিজ স্বার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা ব্যবহার করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এলপিজি গ্যাস পাঠানোর নতুন উদ্যোগ নিয়েও আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরজন্য দিল্লির এখন টার্গেট চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্দর

২৪ নভেম্বর, ২০২২
১৪ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ