Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাভাইরাসে সীমান্ত পারাপারে সতর্কতা

তথ্য দিয়েই ঢুকতে হচ্ছে ভারতীদের

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাস সম্পর্কে তথ্য দিয়েই বাংলাদেশে ঢুকছেন ভারতীয়রা। বাংলাদেশের প্রতিটি সীমান্তে করোনাভাইরাস শনাক্তে কাজ করছেন মেডিক্যাল টিম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সতর্কবার্তা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর দেশের স্থলবন্দরগুলোতে যাত্রী পারাপারে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের যে কোনো স্থলসীমান্ত, এয়ারপোর্ট ও বন্দরে করোনাভাইরাসের জন্য বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলোতে সব যাত্রীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে মেডিক্যাল টিম কাজ করে যাচ্ছেন। স্থলবন্দরের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের প্রশ্নের মাধ্যমে, সেই সঙ্গে জ্বর, সর্দি-কাশি, মাথাব্যাথা ও করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষণ আছে কিনা তা নিশ্চিত হচ্ছি। পাশাপাশি এই রোগ প্রতিরোধে ও সচেতনতা বাড়াতে যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে হেলথ ডেস্ক বসানো হয়েছে। একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডরের মাধ্যমে সেখানে এই হেলথ ডেস্কের কার্যক্রম চলছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম জানান, স্বাস্থ্য দফতর থেকে এ সম্পর্কিত নির্দেশনা পাওয়ার পর পরই করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমরা সীমান্তে সতর্কতা অবলম্বন করছি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে আমাদের হেলথ ডেস্ক বসানো হয়েছে। মূলত স¤প্রতি চীন ভ্রমণ করেছে এমন যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদসহ প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হচ্ছে। ভারত থেকে বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই ব্যবসায়ী ফিরে আসার পর আমরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : বিশেষ মেডিকেল টিমের দায়িত্ব প্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. কামিয়াবী দৃষ্টি জানান, তিন জনের মেডিকেল টিমে একজন মেডিকেল অফিসার ও ২ জন স্বাস্থ্য সহকারি কর্মরত আছি। এখানে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। তিনি আরো জানান, আমরা নিজেরাই প্রয়োজনীয় পোষাক না থাকায় ভয়ের মাঝে আছি ।

পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান জানান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। দুই শিফটে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বলতে ওখানে শুধু জ¦র মাপা যন্ত্র থাকবে, পোষাক সেরকম এখনও সরবরাহ করা হয়নি। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ মানসম্মত ঘর না দেয়ায় ঝুপড়ি ঘরে আমাদের সেবা দিতে হচ্ছে যেহেতু এটি একটা জাতীয় সমস্যা। বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে।

বেনাপোল অফিস জানায় : বেনাপোাল ইমিগ্রেশন মেডিকেল টিমের ইনচার্জ হাসানুজ্জামান বলেন, স্ক্যানারটি অত্যন্ত আধুনিক। এটা বাইরে থেকে প্রতিটি যাত্রীর তাপমাত্রা অটোমেটিক নির্ণয় করতে পারে। এছাড়া যার তাপমাত্রা যত বেশি সেখানে তার শরীরের উপর হাই লেখা দেখায় এই স্ক্যানারটি। তিনি আরো বলেন যার তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রির উপর তাকে আমরা আমাদের এমবিবিএস ডাক্তার আজিম উদ্দিন এর নিকট নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গতকাল চেকপোস্টে ট্রাক চালকদের পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য কোন স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের পরীক্ষার জন্য বসানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। ভোমরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সহিদ বলেন, প্যারামেডিক্যাল চিকিৎসকদের সমন্বয়ে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। ভারত থেকে আসা রোগীদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বিশেষ করে গায়ে জ্বর জ্বর ভাব, সর্দি, কাশি থাকলে তাদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

দিনাজপুর : দিনাজপুরের হিলি ও বিরল স্থলবন্দরে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে দিনাজপুর স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবদুল কুদ্দুছ জানান, ভারত থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে করোনোভাইরাস সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বার্তা পৌঁছানো হচ্ছে এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানিয়েছেন, ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছেন সতর্কতা জারির এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল ক্যাম্প গঠনের। তাই কনফারেন্স শেষে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। তবে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ফেরত একাধিক যাত্রী দৈনিক ইনকিলাবের কাছে অভিযোগ করে বলেন, সীমান্তে যে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে তাদের কাছে কোনও অত্যাধুনিক স্ক্যানার নেই বরং থার্মোমিটারের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকারী প্রতিজনের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ