Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

স্লােগানে প্রকম্পিত চট্টগ্রাম

প্রতীক নিয়ে মিছিল

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রতীক পাওয়ার পরই ভোটারদের কাছে ছুটছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মিছিল স্লােগানে প্রকম্পিত হচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। গতকাল সোমবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
মার্কা পাওয়ার পর নৌকার প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী হযরত শাহ ছুফি আমানত খান মাজার জিয়ারত করে গণসংযোগ শুরু করেন। ধানের শীষের প্রার্থী নগর বিএনপি সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনও প্রতীক পাওয়ার পর দলের নেতাদের সাথে নিয়ে আমানত খান মাজার জিয়ারত করেন। সেখানে দেখা হয় দুই প্রার্থীর। তারা কোলাকুলি করে একে অপরের দোয়া চান। তার আগে প্রতীক বরাদ্দের সময়ও দুই মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম ও ডা. শাহাদাত হোসেন কুশল বিনিময় করেন। তারা দুজনেই ভোটের প্রচারের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবেন বলে জানিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ৬ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী পেয়েছেন নৌকা প্রতীক এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম হাতপাখা, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের এম এ মতিন মোমবাতি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর আম ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহেদ মুরাদ পেয়েছেন চেয়ার প্রতীক। ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরসহ ৫৫টি কাউন্সিলর পদে ২১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক পেয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা একযোগে মাঠে নেমে পড়ায় নগরীতে প্রথম দিনেই ভোটের প্রচার বেশ জমে ওঠে।
প্রতীক পাওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন রেজাউল করিম চৌধুরী। সুন্দর, নান্দনিক ও পরিবেশবান্ধব চট্টগ্রাম গড়তে কাজ করবেন বলে জানান তিনি। ভোটের প্রচারে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জন্য সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষের সঙ্গে শতভাগ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে। তাছাড়া কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কা আমি দেখছি না। বিএনপি প্রার্থীর দাবি- আ জ ম নাছির উদ্দীন হলে কঠিন হতো, কিন্তু এখন একটু সহজ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রেজাউল করিম বলেন, আমি বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। কার জন্য কি কঠিন হবে সেটা সময় বলে দেবে। আমি প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে সবাইকে সমানভাবে দেখছি। মাজার জিয়ারত করে গণসংযোগে নামেন তিনি। এ সময় ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। নির্বাচনে জয়ী হলে চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলবো। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। তার সাথে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ সালাম প্রমুখ।
অন্যদিকে ধানের শীষ প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগরপিতা নয়, নগর সেবক হতে চাই- এটিই আমার স্লােগান। এই একটি লাইন দিয়েই আমার সব বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। তিনি বলেন, কোন প্রতিদ্ব›দ্বীকে ছোট করে দেখছি না। স্মার্ট এবং সুন্দর নগরী গড়ার প্রত্যাশা করছি। আমি চিকিৎসক এবং একজন সমাজকর্মী হিসেবে আমাদের প্রচারণার একটি অংশ থাকবে জনগণকে করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন করা। এছাড়া আমাদের প্রচারণার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাবো। তিনি বলেন, নগরীতে যদি সত্যিকারের কোন উন্নয়ন হত তাহলে বর্তমান মেয়রকে পরিবর্তন করতো না। কাজেই সরকার তার অবস্থান থেকে সরে গিয়ে প্রমাণ করেছে, চট্টগ্রামে বাস্তবে কোন উন্নয়ন হয়নি। তিনি বলেন, আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়েছি। তাদেরকে সমান সুযোগ তৈরি করার জন্য অনুরোধ করেছি। উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করার জন্য বলেছি। আমরা চট্টগ্রামের ২০ লাখ ভোটারকে স্বাগত জানাচ্ছি, তারা যেন উৎসব করে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম, নগর বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ। গণসংযোগ চলাকালে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ধানের শীষ হাতে মিছিল স্লােগানে এলাকা মুখরিত করে তোলে।
ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ভোটের প্রচার শুরু করেন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনেকেই ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছেন।
বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় প্রচারে সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, আচরণবিধি মেনেই ভোটের প্রচার চালাতে হবে। কেউ বিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। আগামী ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ