পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় সর্বত্র মাস্ক ও স্যানিটাইজার সামগ্রী বিক্রির হিড়িক পড়েছে। আর এই সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে মাস্ক এবং অন্যান্য স্যানিটারি সামগ্রীর দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখ যায় ১০টাকার মাস্ক ৫০ টাকা এবং ৫০ টাকার মাস্ক ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ফার্মেসি ও পাড়া মহল্লার সুপার শপে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ ইত্যাদি বিক্রির ধুম পড়েছে। অনেক দোকানে, সেভলন হ্যান্ড ওয়াশ, হেক্সিসল এ সব শেষ হয়ে গেছে। দোকানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে এখানে সেভলন, হেক্সিসল নেই। দুপুরে শাহজাহানপুর একটি ফার্মেসিতে গেলে দোকানি জানান, হেক্সিসল গতকালই শেষ। জীবাণু রোধে ব্যবহার্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হেক্সিসল বাজার থেকে প্রায় নাই হয়ে গেছে। ফার্মেসি, সুপারশপ, পাড়ার দোকান সবখান থেকেই বলা হচ্ছে, পরে আসেন।
এর আগে বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির উত্তেজনায় মানুষ এগুলো বেশি করে কিনে জমিয়ে রেখেছে। দাম বাড়বে বলে গুজবে লবণের বেলায়ও এই মজুতের হিড়িক দেখা গেছে, যদিও তা প্রচুর পরিমানে ছিল। এবার করোনাভাইরাসের ভয়ে ওষুধের দোকান থেকে মাস্ক ও হেক্সিসলের মতো জীবাণুরোধী জিনিসের ওপর সাধারণ মানুষ যেন হামলে পড়েছে। এর মধ্যে মাস্কের দাম কয়েক গুণ বেড়ে গেছে এবং এ মুহ‚র্তে ওষুধের দোকানে মাস্ক বেশ দু®প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। গত বছর এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ হুমড়ি খেয়ে মশা মারার ও প্রতিরোধসামগ্রী কিনেছিল। সে সময়ও অসাধু ব্যবসায়ীরা ১৫০ টাকার জিনিস ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার বেশিতেও বিক্রি করেছে।
তবে এবার অবৈধ মজুতদারের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে সরকার। যারা মাস্ক এবং স্যানিটাইজার সামগ্রী বেশি দামে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। ভোক্তার অধিকার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ইতোমধ্যে বেশ কিছু দোকানে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে এবং দোকানে সিলগালা মেরে বন্ধ করে দিয়েছে।
এ ছাড়া দেশে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর কেউ যেন মাস্কসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের দাম বাড়াতে এবং অবৈধ মজুত করতে না পারে, সেজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। আদালতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা.মো.আমিনুল হাসানের দেয়া এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর আদালত বলেন, করোনা ভাইরাস ছড়ানোর পর মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। এখন মানুষের মধ্যে একটা সচেতনতাও তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগে এটা নিয়ে বাজারে কোনও ধরণের ব্যবসা হয় কিনা পেঁয়াজের মতো, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। কেউ যেন বেশি দাম না নিতে পারে, মজুত না করতে পারে।
এ সময় আদালতে থাকা সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, করোনার ব্যাপকতা যে কত, তা সরকারও অনুভব করেছেন। কিছু স্টেপ উনারা নিয়েছেন। ১০ টাকার মাস্ক ১২০ টাকা নিচ্ছে। এটা নিয়ে একটা নির্দেশনা দিন। সরকার ইচ্ছা করলে মাস্ক ফ্রি দিতে পারে।’ জবাবে আদালত বলেন, ‘১০ টাকার ১৬ কোটি মাস্ক দেয়ার মতো অবস্থা নেই। একটা হতে পারে, যারা কোনও রকমভাবে সন্দেহের মধ্যে বা আক্রান্ত হয়, বা হাসপাতালে যায়, তাদের জন্য ব্যবস্থা করা যায় কিনা, এটা হয়তো বাস্তব।
এরপর মওদুদ আহমদ বলেন, চিকিৎসক ও নার্সদের পোশাকের বিষয়টি দেখতে হবে। এটা সরকারের স্টকে কত আছে?’ তখন আদালত বলেন, প্রতিবেদনে বলা আছে রোগ প্রতিরোধকারী পোশাক পর্যাপ্ত পরিমাণ আছে।’ রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিদিনকার সংবাদ সম্মেলন নিয়ে আদালত বলেন, ‘আইইডিসিআর এর একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রেস ব্রিফিং করেন। উনার বক্তব্য আরও পজিটিভ হওয়া বাঞ্ছনীয়। তিনি সারা পৃথিবীর কথা বলেন। মনে হয় আমাদের দেশেও ধেয়ে আসছে। এটা যেন কোনোভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না করে। কারণ, মানুষ যথেষ্ট সচেতন। মানুষের কাছে মোবাইল আছে। মানুষের কাছে সব খবর যায়। এগুলো ওনাদের দরকার নেই। ওনারা কী করছেন, মানুষ কীভাবে সচেতন হবে এবং কী করা দরকার, সে বিষয়গুলো মানুষকে জানানো দরকার। আর সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা জানানো দরকার।’ গণমাধ্যমে সচেতনতা প্রচারের বিষয়ে আদালত বলেন, ‘প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে এমনভাবে সচেতনতামূলক বিষয়টি প্রচার করতে হবে, যেন মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়।’ দেশের মানুষ বিদেশে যাওয়া এবং দেশের নাগরিকসহ বিদেশিদের দেশে আগমনের বিষয়ে আদালত বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেকে বিদেশে থাকেন। শ্রমিকরা বিভিন্ন দেশে যায়। তাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার দরকার হলে যেন সমস্যা না হয়। সেটি খেয়াল রাখতে হবে। আর যারা বিদেশ থেকে আসবেন তাদের ক্ষেত্রেও সার্টিফিকেট আছে কিনা, সেটা দেখতে হবে এয়ারপোর্টগুলোকে।’ আদালত বলেন, বিষয়টি নজরে রাখলাম। বিষয়টি আগামী ৫ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য রাখা হলো।’ এর আগে গত ৫ মার্চ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।