Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাণিজ্য ঘাটতি ৮২ হাজার কোটি টাকা

অর্থবছরের প্রথম সাত মাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯৬৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে বাংলাদেশের অবস্থাও ঋণাত্মক রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি আয় কমায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি। তবে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি থাকায় কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে বৈদেশিক লেনদেনে। 

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। বিশ্বের ১০৯টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখন্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১১৯ জনের। এতে চীনের সঙ্গে বিশ্বের বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশসহ অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়েছে। এতেও রফতানি বাণিজ্য বড় ক্ষতির মধ্যে পড়বে বাংলাদেশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে দুই হাজার ২৩৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে তিন হাজার ২০০ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেই হিসেবে জানুয়ারি শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯৬৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ৮১ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা (বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে)। ঘাটতির এ অংক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল ৯৮৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে আমদানি কমেছে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। রফতানি কমেছে ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। তবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে তা ঋণাত্মক হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।
কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে। জানুয়ারিতে এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি শেষে চলতি হিসাবে ১৫১ কোটি ৬০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঋণাত্মক ছিল ৪০৪ কোটি ১০ লাখ ডলার।
তবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে প্রথম সাত মাসে সামগ্রিক লেনদেনে বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ২০ লাখ ডলারে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেনে ৯৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঘাটতি ছিল।
আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বিদেশিদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৬৩৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৪২০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সাত মাসে সেবায় বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২১৯ কোটি ১০ লাখ ডলারে। যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ১৮৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৩২২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ১৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই বেড়েছে ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ ও নিট বেড়েছে ৩ দশমকি ৯৬ শতাংশ।
এদিকে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমে গত বছরের তুলনায় অর্ধেকের বেশি নেমে এসেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র তিন কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা তার আগের অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘাটতি

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ