পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের অশেষ রহমতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ এর বাহিরে রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ইপিজেড নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে ৫টি শিল্পসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এখনও সচল রয়েছে।
দেশে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ থাকায় চীনা শ্রমিকদের মধ্যে কিছুটা হতাশার সৃষ্টি হওয়ায় কাজের গতি কিছুটা কমেছে। নিকট আত্মীয়দের কাছ থেকে দূরে থাকা চীনা শ্রমিকদের অবাধ চলাফেরায় বাংলাদেশিদের সহযোগিতা তাদের উৎসাহ জোগাচ্ছে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মুসলমানদের নামাজসহ ধর্মীয় আচার আচরণের প্রতি চীনাদের শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চীনা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন বাংলাদেশি শ্রমিক জানালেন আজান হলেই কাজ ছেড়ে নামাজে যেতে পারছেন তারা। ইশারা এবং আধো আধো বাংলায় তারা দোয়া করতে বলছেন। যা কিনা করোনাভাইরাসের আগে চিন্তাও করতে পারতো না বাংলাদেশি শ্রমিকরা।
সৈয়দপুর পাওয়ার মোড় থেকে নীলফামারী জেলা শহরের মাঝামাঝি স্থানে উত্তরা ইপিজেডের অবস্থান। অবহেলিত উত্তরাঞ্চলের চরম অবহেলিত জেলা নীলফামারীসহ আশপাশের এলাকার চেহারা পাল্টে দিয়েছে এই ইপিজেডটি। সকাল হলেই সারি সারি সাইকেল আর মোটরসাইকেলে চড়ে আসা শ্রমিকদের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা সকলের দৃষ্টি কাড়ে। বিকেল হলেই বাড়ি ফেরার একই দৃশ্য। আশপাশের হাট বাজারগুলোতে সকাল ও বিকেলে চীনাসহ বাংলাদেশিদের ভিড় লক্ষ্য করার মত।
ইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. এনামুল হক জানান, ২১৩ একরের বেশি জমিতে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শিল্পাঞ্চলে প্রায় ৩০টি ছোট বড় কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে বড় ৪টি ও ১টি মাঝারী কারখানা রয়েছে। যা কিনা সম্পূর্ণরূপে চীনারাই পরিচালনা করেন। এসব শিল্পে প্রায় সাড়ে ৪শ’ চীনা নাগরিক কাজ করছেন। চীনে করোনাভাইরাস দেখা দেয়ার পর থেকেই কর্তৃপক্ষ সাবধান হয়ে যায়। যারা ছুটিতে গেছেন তাদের কারখানায় আসার অনুমতি দেয়া হয়নি। অপরদিকে ছুটিতেও কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ভাইরাস আতঙ্কের পর বলা চলে একপ্রকার একঘরে হয়ে যাওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল চীনাদের মধ্যে। কিন্তু সেই অবস্থা চলতে দেয়নি ইপিজেড কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশি শ্রমিকেরা।
ইপিজেডের পাশেই দোরানী বাজার, কাজিরহাট ও বিজিবি ক্যাম্প বাজার অবস্থিত। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজিরহাট বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। চোখে পড়লো মুখে মাস্ক পরা কয়েকজন চীনা নাগরিক। কথা বলার চেষ্টা করেও লাভ হলো না। কারণ তারা বাংলা বা ইংরেজী খুব একটা বোঝেন না। এগিয়ে তাদের অধীনেই কাজ করা একজন বাংলাদেশি শ্রমিক। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও একটু ফাঁকা জায়গায় টেনে নিয়ে বললো খুব একটা বের হোন না চীনারা। আমরা চেষ্টা করছি তাদের সাথে ভাইয়ের মত আচরণ করে তাদের সাহস যোগাতে। সেই শ্রমিকই বললেন, চীনারা এখন মুসলমানদের খাদ্যাভাসকে ফলো করছে। নামাজের সময় হলেই তারাই ইশারায় নামাজে যেতে বলেন। তার মতে ভাই সব আল্লাহর রহমত। অবশ্য রফতানিযোগ্য কারখানায় মালামালের স্তুপ জমে গেছে। ফলে উৎপাদন যে কোন সময় কমাতে হতে পারে। এছাড়া কাঁচামালও শেষ হয়ে আসছে। করোনার প্রভাব দীর্ঘদিন থাকলে অধিকাংশ শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার অশঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত চীনা শ্রমিকেরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চীনা নাগরিকদের চলাফেরায় কিছুটা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে চীনারাই নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। কাজের এখন পর্যন্ত কোন ব্যাঘাত ঘটেনি বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।