Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৭ মার্চকে জাতীয় দিবসের দাবি যথার্থ

সেমিনারে সৈয়দ আনোয়ার হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

৭ই মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালনের দাবি যথার্থ মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের ভাষা ছিলো ২টি। দৈনিক ও কথক। এতে তিনি ৩ বার মুক্তি ও ১ বার স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি মুক্তির কথা বলেছেন তবে স্বাধীনতার কথায় জোর দিয়েছেন। এটা ছিলো অলিখিত ভাষণ, যেটা মনে এসেছে তিনি সেটা বলেছেন। তার সারাজীবনের আন্দোলন ছিলো এ ভাষণের ব্যাকগ্রাউন্ড। সেখানে তিনি যদি স্বাধীনতা ঘোষণা করতেন তাহলে সারা বিশে^র কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত হতেন। তিনি ভাষণে সারা বিশে^র কাছে করণীয় কি সেটা বলেছেন। ৭ই মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা যুক্তিযুক্ত ও যথার্থ।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বাধীনতা আন্দোলন’ শীর্ষক সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করার সময় এ কথা বলেন তিনি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে কবি ও জনপ্রিয় কলাম লেখক, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেছেন, গণতন্ত্রের আকাঙ্খা পাকিস্তানিরা পদদলিত করতে চেয়েছিল বলেই এই ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বিদ্রোহ করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন সেই গণতন্ত্র আজ কোথায়।
সোহরার হাসান বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণের প্রধান তাৎপর্য হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এ ভাষণের তাৎপর্য বুঝতে আমাদের এত দেরি হলো কেন। এ ভাষণ কোন ব্যক্তি বা দলের ভাষণ নয়, বরং এরসাথে ৭ কোটি বাঙালীর আবেগ, অনুভূতি জড়িত।

বিশিষ্ট কলামিস্ট ও সাংবাদিক আবুল মকসুদ বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ যতবার বাজানো হয়েছে আমার ধারণা পৃথিবীর আর কোনো ভাষণ এতবার বাজানো হয়নি। বঙ্গবন্ধু সেদিন যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার ভাষণে চেতনা ছিল, তিনি একজন গণতান্ত্রিক নেতা। ১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান কী কী করেছিল এ দেশের মানুষের সঙ্গে তিনি এই ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফিগার বলেছিলেন তার ভাষণে। তার ভাষণে একটি অস¤প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার ছিল।

শুধু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ ভাষণ নিয়ে আলোচনা হবে এমনটি নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও এই ভাষণ বাজানো হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ৮ মার্চ থেকে পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সমস্ত বিশ্বজনমত বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ছিল। বঙ্গবন্ধু তার দুই শত্রæ ভুট্টো ও ইয়াহিয়াকে নিয়ে সংযত ভাষায় কথা বলেছেন। তার সংযম আর পরিমিতিবোধ প্রকাশ করেছে এই ভাষণে।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেছেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পরে বঙ্গবন্ধু যখন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন সেই এক বছরের মধ্যেই তার লক্ষ্য স্থির হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে মুসলিম আওয়ামী লীগ, যুক্তফ্রন্ট; তারপরে ১৯৬২ সালের আন্দোলন, সমস্ত সংগ্রামের লক্ষ্য এক জায়গায় ছিল। যা ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবির মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্তের সঞ্চলনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, মুক্তিযুদ্ধ সেক্টর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হারুণ হাবীব, সাংবাদিক ও কলামিস্ট মনজুরুল আহসান বুলবুল, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, আজিজুল ইসলাম ভূইয়া প্রমূখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবন্ধু

৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ