দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে দগ্ধ তালার গৃহবধূ ফারহানা আক্তার রত্মা তেরো দিন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে মারা যান। গত বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের লাশ তালায় এসে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
রত্মা খুলনা জেলার পাইকগাছার মালোত গ্রমের রোকন সরদারের মেয়ে ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের হাসিবুর রহমান সবুজের স্ত্রী। তারা তালা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের অসীম সাধুর বাড়িতে ভাড়া থাকতো।
এ ঘটনায় নিহত রত্মার বাবা রোকন সরদার বাদী হয়ে সাবেক স্বামী মিজানুর রহমানসহ চার জনের নামে তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রোকন সরদার সাংবাদিকদের জানান, তার মেয়ে ফারহানা আক্তার রত্মার সাথে ২০০৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথমে খুলনা জেলার ভরতভায়না গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমানের সাথে বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সাথে যৌতুক নিয়ে বিরোধে সেখান থেকে রত্মা তালাকপ্রাপ্ত হয়। এরপর কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে হাসিবুর রহমানের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তারা সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সদরের ব্রিজ সংলগ্ন মোবারকপুরের অসীম সাধুর বাড়িতে তারা ভাড়া থাকতো। উভয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করা অবস্থায় গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে জামাই হাসিবুর দোকানে মশার কয়েল আনতে যায়। এসময় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাদের ঘরে পেট্রোল জ্বালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে রত্মার সারা শরীর পুড়ে যায়। রত্মার চিৎকারে বাড়ির মালিক ও মালিকের স্ত্রী মিলে তাকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় তালা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রথমে খুলনায় ও পরে ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রত্মা ১৩ দিন পর গত বুধবার মারা যায়। গত বৃহস্পতিবার তার লাশ প্রথমে তালায় ও পরে তার বাবার বাড়ি পাইকগাছার মালোত গ্রামে দাফন করা হয়।
তালা থানার ওসি মেহেদি রাসেল মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।