Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থা, গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে এনবিএফআই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২০, ৩:০৯ পিএম

মালিকদের লুটপাট আর বিভিন্ন অব্যবস্থাপনায় দুরবস্থায় দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)। অনিয়ম, দুর্নীতি আর ঋণ বিতরণের নামে চলছে লুটপাট। বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ফেরত দিতে পারছে না গ্রাহকের আমানত। এতে অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

পিপলস লিজিং অবসায়নের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আমানতকারীরা। আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যক্তি নয়, অনেক প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীও অর্থ তুলে নিচ্ছে। এতে অনেকটা চাপে পড়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বিকেলে ৩টায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ)।

এর আগে সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের প্রতিনিধিরা। তাদের চলমান দুরবস্থা কাটাতে ১০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল, নগদ জমা সংরক্ষণ সিআরআর এবং এসএলআর এর অনুপাত পরিবর্তন, এনবিএফআইয়ে থাকা তফসিলি ব্যাংকের আমানত আগামী দুই বছর প্রত্যাহার না করা এবং সুদের হার সর্বোচ্চ সাত শতাংশ বেধে দেয়াসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানান তারা।

এসময় অর্থমন্ত্রী বিএলএফসিএ’র দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে তিনি জানান।

এদিকে নানা অনিয়মের কারণে আমানতকারীদের আস্থা হারিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরা তাদের আমানত তুলে নিচ্ছে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের পরিমাণ কমছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের মার্চে প্রান্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে প্রান্তিকে তা নেমে এসেছে ৪৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকায়।

দেশে ব্যাংকবহির্ভূত ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টির চেয়ারম্যান-এমডিদের অনিয়মের কারণে একেবারে সর্বস্বান্ত। পিপলস লিজিংয়ের বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বিআইএফসি, এফএএস ফাইন্যান্স, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ফার্স্ট ফাইন্যান্স বন্ধের উপক্রম। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এমডি হিসেবে দায়িত্বপালন করে দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রশান্ত কুমার হালদার।

২০১৯ সালের সর্বশেষ সেপ্টেম্বরের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ খাতের ১০ প্রতিষ্ঠান এখন সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে বা ‘রেড জোনে’ রয়েছে। চাপ সহনশীল (স্ট্রেস টেস্টিং) প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই জোনে ফেলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশে ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান ভালো অবস্থানে রয়েছে। বাকি ২৯টি প্রতিষ্ঠানের অবস্থাই নাজুক।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা জানার জন্য কয়েকটি সূচকের ওপর বিশেষ পদ্ধতিতে নিরীক্ষা চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদহার বৃদ্ধিজনিত ঝুঁকি, ঋণঝুঁকি, সম্পত্তির (ইক্যুইটি) মূল্যজনিত ঝুঁকি ও তারল্য অভিঘাত এ চার ঝুঁকি বিবেচনায় নেয়া হয়। নিরীক্ষার ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। ভালোগুলোকে গ্রিন জোন, ভালোর চেয়ে একটু খারাপ অবস্থায় থাকা ইয়েলো জোন এবং চরম খারাপ অবস্থায় থাকাগুলোকে রেড জোনে ভাগ করা হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ ব্যাংক

২৫ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ