পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদক, অস্ত্র, চোরাচালান, জমি দখল, চাঁদাবাজি ও যৌন ব্যবসাসহ অপকর্মের সাথে জড়িতদের সম্পর্কে নতুন করে তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন সরকারের হাই কমান্ড। ওই নির্দেশ পাওয়ার পর একটি সংস্থা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক (পরে বহিস্কৃত) শামীমা নুর পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতারের পর আইন-শৃংখলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে কতিপয় প্রভাশালী রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসন ও ব্যবসায়ীসহ অনেকের নানা অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত থাকার বেরিয়ে আসে। এছাড়া ক্যাসিনোকান্ডে সম্রাটসহ অনেকের সম্পৃক্ততা নিয়েও সরকারের হাই কমান্ড বিব্রত হন। এ জন্য নতুন করে তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে একটি সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। টাকা ও নারীর লোভ দেখিয়ে স্বার্থ হাসিল করা, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ভুটান ও রাশিয়া থেকে মেয়েদের নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যারা তাকে সাহায্য করেছে এ ব্যাপারেও তথ্য প্রকাশ করেছে পাপিয়া ও তার স্বামীসহ অন্যান্যরা। এছাড়া মাদক ব্যবসা ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়ার দুই সহযোগীকে ফের ৫দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদার হোসাইন এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন-সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা নূর।
পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন একটি সংস্থার এমন একজন কর্মকর্তা গতকাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, পাপিয়াকে আটকের পর একে একে অপরাধ জগতের চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য বের হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে দেহব্যবসা, অস্ত্র-মাদ’ক ব্যবসা করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। ক্ষমতার শীর্ষে না থেকেও দাপট দেখিয়েছেন। মনোরঞ্জণ করে মন যুগিয়েছেন ওপরওয়ালাদের। পাপিয়ার প্রধান ব্যবসাই ছিল এসকর্ট সার্ভিস। চাকরি দেবার প্রলোভন দেখিয়ে সে দেশের বিভিন্ন স্থানের নারীদের ঢাকায় নিয়ে আসতো। তাদের কখনও তার বাসায় আবার কখনও ৫ তারকা হোটেলে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন। এছাড়া সার্বক্ষণিক পাপিয়ার সঙ্গে থাকা তরুণীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, পাপিয়ার রংমহলে অনেক উচ্চ পর্যায়ের মানুষ আসতেন।
সূত্র জানায়, পাপিয়া গ্রেফতারের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপম ভুঁইয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে র্যাব নগদ ২৭ কোটি টাকা ও এক কেজি সোনা উদ্ধার করে। এতে করে নড়ে চড়ে বসে সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা। গ্রেফতার হওয়া যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়া এতদিন কাদের ছত্র ছায়ায় এত দাপট দেখিয়েছে বা কাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলো তাদের বিষয়েও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গেন্ডারিয়ার এনু ও রূপমকে কারা প্রশ্রয় দিয়েছে বা কাদের যোগাযোগ ছিলো তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র আরো জানায়, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে দুনীতি অপকর্মের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে আইন-শৃংখলা বাহিনী। ওই সময় অভিযানে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর গত কয়েক মাস হলো এই অভিযান দৃশ্যমান থাকেনি। তবে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, অভিযান দৃশ্যমান না হলেও আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বিভিন্নভাবে তথ্য অনুসদ্ধান অব্যাহত রয়েছে।
ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, টানা ততৃীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ইতোমধ্যেই ক্ষমতার ১১ বছর পার হয়েছে। দীর্ঘ দিন দল ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের অনেকেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আসছে। দলের ও সংগঠনের পদে থেকে অনেকেই বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে অপকর্ম ও দুনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে। আবার অনেকেই দলকে ব্যবহার করে প্রভাব খাটানোর চেষ্টায় রয়েছে। অপকর্মের সঙ্গে জড়িত এ সব নেতাদের ব্যাপারে আইন-শৃংখলা বাহিনী তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রেখেছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে পাপিয়াকে গ্রেফতার এবং গেন্ডারিয়ার অভিযান চালানো হয়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে এবং যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়েও তদন্ত চলছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন সরকারের হাই কমান্ড।
সূত্র জানিয়েছে, ডিবিতে জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী অনেক তথ্য দিচ্ছেন। তাদের কখনও আলাদাভাবে, কখনও দু’জনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিমান্ডে তাদের দুই সহযোগী সাব্বির ও তায়্যিবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
পাপিয়া ও সুমন চৌধুরীর অপরাধ জগত সম্পর্কে তায়্যিবা ডিবিকে জানিয়েছেন, অনেক সময় চাহিদামতো থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ভুটান ও রাশিয়া থেকে মেয়েদের নিয়ে আসা হতো। এদিকে শামিমা নূর পাপিয়া ওয়েস্টিন হোটেলে অবস্থানকালে কারা কারা তার কাছে যেতেন, তাদের নাম হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
পাপিয়ার ২ সহযোগী ফের রিমান্ডে
মাদক ব্যবসা ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়ার দুই সহযোগীকে ফের ৫দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদার হোসাইন এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা নূর।
এর আগে, ওই দুই আসামি ৫দিনের রিমান্ডে ছিলেন। রিমান্ড শেষে রোববার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিমের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. সাইফুল ইসলাম আসামিদের আরও ১০ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তাদের ৫দিন করে রিমান্ডে পাঠান। এ সময় আসামিদের পক্ষে আইনজীবী মীর মো. শাখাওয়াত হোসেনসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। বিচারক শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে দুইজনের ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৪ফেব্রুয়ারি শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীসহ এ দুই আসামির এ মামলায় ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি অর্থপাচার, বিদেশি জাল মুদ্রা সংরক্ষণ ও মাদক ব্যবসার অভিযোগে র্যাব-১ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে পাপিয়া, তার স্বামী ও দুই সহযোগীকে। পরে তাদের নিয়ে ফার্মগেটের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ৫৮ লাখ টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও পিস্তল, গুলি ও মদ উদ্ধার করে র্যাব। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি এবং শেরেবাংলা নগর থানায় দুটি মামলা করে র্যাব। তিন মামলায় পাপিয়াসহ চারজন ১৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। মামলাটি এখন ডিবিতে রয়েছে। এছাড়া পাপিয়াসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে র্যাব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।