পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ হঠাৎ পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির রাজা ইয়াং ডি-পার্তুন আগোং আল সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতুদ্দিন আল মুস্তাফা বিল্লাহ শাহ। এই শিক্ষাব্রতী তার দল পিপিবিএম-এর চেয়ারপারসন হিসাবেও তার পদ ত্যাগ করেছেন। মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে ড. মাহাথিরের এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটল। মাহাথির মোহাম্মদ পদত্যাগ করে তার ডেপুটি ওয়ান আজিজাহকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব করেন। সে প্রস্তাব রাজা গ্রহণ করলে তিনিই হতে মালয়েশিয়ার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু রাজা ড. মাহাথিরকেই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানোয় সে সম্ভাবনা থাকলো না। গতকালই স্বামী আনোয়ার ইব্রাহিমসহ রাজার সঙ্গে দেখা করেছিলেন ওয়ান আজিজাহ। ঘণ্টারও কম সময়ের সে সাক্ষাতের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
মালয়েশিয়ায় কী ঘটছে তা সত্যিই বুঝতে ফিরে যেতে হবে ১৯৯৮ সালে যখন মাহাথির তার প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সেসময় সোডমির অভিযোগে কারাগারে পাঠানোর আগে আনোয়ার ইব্রাহিম ড. মাহাথিরের ডেপুটি ছিলেন।
তারপরে আনোয়ারকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার এক বছর আগে ২০০৩ সালে মাহাথির পদত্যাগ করেন। ২০০৪ থেকে ২০১৮ এর মধ্যে অনেক কিছু হয়েছিল। নাজিব রাজাক প্রধানমন্ত্রী হন এবং আনোয়ার একটি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যা তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট বারিশান নেশনাল তার ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে দেখেছে।
যাইহোক, মজার বিষয় হল, মাহাথির এবং আনোয়ার আবার ২০১৮ সালে নাজিবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মিত্র হয়ে ওঠেন, তাতে তারা সফল হন। বিনিময়ে আনোয়ারকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল (হ্যাঁ, তিনি নাজিবের রাজত্বকালে দ্বিতীয়বারের জন্য বন্দি হয়েছিলেন) এবং প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে, তাকে দেশটির অষ্টম প্রধানমন্ত্রী করা হবে।
কেন মাহাথির পদত্যাগ করলেন?
আনোয়ারের প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য বহু পক্ষ তার প্রতি আহ্বান জানানোর পর মাহাথির ২০২০ সালের নভেম্বরের মধ্যে এই পদ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
স্ট্রেইটস টাইমস অনুসারে, মাহাথির ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বলেছিলেন, ‘আমি ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম এবং আমি তা রক্ষা করব, আমি ভেবেছিলাম যে, ঠিক আগে পদত্যাগ করলে অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলন ব্যাহত হবে। আমি যতটা উদ্বিগ্ন, আমি পদত্যাগ করছি এবং আমি তার (আনোয়ার) হাতে লাঠি দিচ্ছি। লোকেরা যদি তাকে না চায়, তবে সেটি তাদের ব্যাপার, তবে আমি আমার প্রতিশ্রুতির অংশটি পালন করব। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমি আমার প্রতিশ্রুতি রাখব’।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন জোট, পাকাতান হরপানের প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলের উত্তাল বৈঠকে মাহাথির পদত্যাগের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। নেতৃত্বের জন্য কোনও পরিবর্তনের তারিখ নির্ধারিত না হওয়ায় জোটটি মাহাথিরকে নভেম্বর অবধি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে থাকতে দেয়ার বিষয়ে সম্মতি জানায়। তবে, সপ্তাহান্তে আনোয়ারের দল, পাকাতান হরপানের জোটভুক্ত পিপিবিএম এবং পিকেআর-সহ বেশ কয়েকজন বিভাজনের রাজনীতিবিদদের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে স্পষ্টতই বেশ কয়েকটি বিরোধী দল এবং মাহাথিরের পিপিবিএমের মধ্যে নতুন জোট গঠনের কথা ছিল।
গতকাল মাহাথিরের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পিপিবিএম পাকাতান হরপান জোট থেকে সরে যায়।
একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এর সভাপতি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন বলেছেন, ২৩ ফেব্রুয়ারির রাতে ঘটে যাওয়া জরুরি বৈঠকে দলটি তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘পিপিবিএমের সব সদস্য পাকাতান হরপান ছেড়ে দিয়েছেন। তারা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মাহাথিরকে সমর্থন দেয়ার জন্য বিধিবদ্ধ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন’।
অন্যদিকে অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী আজমিন আলী এবং আবাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জুরাইদা কামারউদ্দিনকে পিকেআর থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আজমিন পার্টিতে আনোয়ারের ডেপুটি ছিলেন।
বিশেষভাবে আজমিনের নাম না দেয়ার সময় আনোয়ার প্রকাশ করেছেন যে, তার দলের ভিতরে ও বাইরে বেশ কয়েকটি লোক নতুন জোট গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। ব্যর্থ অভ্যুত্থানে মাহাথির কোনও ভ‚মিকা পালন করেননি।
আনোয়ার বলেছিলেন, ‘তিনি (মাহাথির) নন, আমার দলের এবং বাইরের লোকেরা তার নাম ব্যবহার করেছিলেন এবং তিনি এর আগে যা বলেছিলেন তার পুনরাবৃত্তি করেছিলেন, তিনি এতে কোনও অংশ নেননি। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, অতীতের শাসনামলের সাথে যুক্তদের সাথে তিনি কখনই কাজ করবেন এমন কোনও উপায় নেই’।
এখন কি?
আনোয়ার ইব্রাহিমকে কি অষ্টম প্রধানমন্ত্রী করা হবে?
মাহাথির তার ডেপুটি, ডা. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইলকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। ওয়ান আজিজাহও আনোয়ারের স্ত্রী। যদি এমনটি হয়, মালয়েশিয়া তার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী পাবে। আনোয়ার এবং তার স্ত্রী উভয়েরই গতকাল মালয়েশিয়ার রাজা ইয়াং ডি-পের্তুয়ান আগং আল-সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতউদ্দিন আল-মুস্তফা বিল্লাহ শাহের সাথে এক ঘণ্টারও কম সময় বৈঠক করেন।
এর আগে, পাকাতান হারাপানের সংসদে ১৩৯টি আসন ছিল। মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে ২২২টি আসন রয়েছে যার মধ্যে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠনের জন্য ১১২টি দরকার। পিপিবিএমের ২৬ সংসদ সদস্য এবং অন্য উপদল ওয়ারিশানের ৯ জনকে নিয়ে পাকাতান হারাপান জোট থেকে বেরিয়ে গেলে তাদের থাকবে ১০৪টি আসন। আজমিন এবং তার সমর্থকরা যদি অন্য দিকে প্রত্যাশা করে, সংখ্যাগুলি সম্ভবত হ্রাস পেতে পারে।
এটির অর্থ হ’ল কোনও নতুন জোট ক্ষমতায় আসবে বা মালয়েশিয়ার ভোটগ্রহণ শুরু হবে।
এদিকে মাহাথির মোহাম্মদ সম্ভবত তৃতীয়বারের মতো ফিরে আসতে পারেন। পাকাতান হরপানের বেশ কয়েকটি সদস্য মাহাথিরকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অব্যাহত থাকার জন্য অনুরোধ শুরু করেছেন। ডিএপি মহাসচিব এবং মালয়েশিয়ার অর্থমন্ত্রী লিম গুয়ান ইঞ্জিনি জানিয়েছেন যে, মাহাথির বিরোধী দল উম্নোর সাথে একসঙ্গে কাজ করতে অস্বীকার করেছিলেন। লিম এবং জোটের আরও কয়েকজন আনুষ্ঠানিকভাবে মাহাথিরকে প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্য মনোনীত করবেন। এখন কেউ যদি মনে করে, মালয়েশিয়ার রাজনীতি বিভ্রান্তিকর, তবে সেটাই। সূত্র : মাশাবেল সাউথ এশিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।