পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাসের মতো সিএনজি অটোরিকশাতেও নৈরাজ্য থামছে না। বেশিরভাগ অটোরিকশা মিটারে চলে না। যেগুলো চলে সেগুলোতে বাড়তি টাকা দাবি করা হয়। যাত্রীদের গন্তব্যে যেতেও নারাজ বেশিরভাগ চালক। এতে করে অতিরিক্ত ভাড়া গোনাসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
অন্যদিকে, মালিকরাও চালকদের কাছে থেকে বাড়তি জমার টাকা আদায় করে চলেছেন। সব মিলে অটোরিকশা সেক্টরের নৈরাজ্যে সীমা ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। বিআরটিএ-এর দাবি তারা এই নৈরাজ্য দুর করতে সচেষ্ট। বিআরটিএ-এর একজন কর্মকর্তা বলেন, সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে তা যাচাই করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ ছাড়া নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।
দেড় কোটিরও বেশি রাজধানী বাসীর নির্ভরযোগ্য যান সিএনজি অটোরিকশা। অথচ সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হননি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ ভাড়া করতে গেলেই অটোরিকশার চালকরা এমন ভাব করেন যেনো যাত্রীদেরকে তারা করুণা করছে। চালকরা প্রথমে সাফ জানিয়ে দেয় মিটারে যাবো না। পোষালে যাবেন, না পোষালে যাবেন না। আবার কোনো কোনো চালক ওদিকে যাবো না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।
বেসরকারি চাকররিজীবী সেকেন্দার আলী বলেন, কমলাপুর থেকে শনিরআখড়া যেতে চাইলে একজন ভাড়া হাঁকেন ৩৫০ টাকা। মিটারের কথা জানতে চাইলে ওই চালক বলেন, মিটারে যাবো না। তিনি বলেন, মিটারে গেলে শনিরআখড়ার ভাড়া দেড়শ’ টাকার বেশি হবে না। অথচ এরা দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে। চালকদের এই আচরণের কথা মালিক পক্ষের জানা। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেন না। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ঢাকায় কোনো অটোরিকশাই এখন আর মিটারে চলে না এ কথা সত্য। তিনি বলেন, দেড় কোটি রাজধানীবাসির জন্য ১৩ হাজার অটোরিকশা কোনোভাবেই যথেষ্ঠ নয়। এই সঙ্কটের সুযোগ নিচ্ছে মালিকপক্ষ। তারা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো চালাচ্ছে। এতে চালকরা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। জাকির হোসেন বলেন, এই অরাজকতা বন্ধ করার জন্য শিগগিরি চালকদের নামে বরাদ্দকৃত ৫ হাজার অটোরিকশা নামাছে। আশা করছি, তখন মালিক ও চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় অনিয়ম আর থাকবে না। ঢাকা মহানগর সিএনজি ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি বরকত উল্যাহ বুলু বলেন, এই সেক্টরে অরাজকতা বন্ধের জন্য চেষ্টা তো আর কম করলাম না। এজন্য মনিটরিং কমিটিও করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হলো না। তিনি বলেন, এখন তো প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা চলছে যেগুলোতে কোনো মিটার নাই। একই ধরণের গণপরিবহনে মিটারসহ এবং মিটারছাড়া চলতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের চালকরা প্রাইভেট অটোরিকশার চালকদের সাথে পেরে না উঠতে পেরে তারাও মিটারে যেতে চায় না। বরকত উল্যাহ বুলু বলেন, তারপরেও আমাদের অধিকাংশ চালকই অনেকটাই সহনশীল হয়ে মিটারেই চলছে বলে আমি জানি। তবে তারা ১০/২০ টাকা বেশি দাবি করে এটাও ঠিক।
ভুক্তভোগিদের মতে, মিটার কার্যকর করার অজুহাত দেখিয়ে গত কয়েক বছরে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া নিজে থেকেই বাড়িয়েছে চালকরা। কোনো নিয়ম মানছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে অটোরিকশা চালক খালেক বলেন, প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ৪০ টাকা এবং এর পরের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১২ টাকা সরকার নির্ধারিত। এই ভাড়ায় গেলে আমাদের পোষায় না। এর কারণ মালিকরা জমার টাকার ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি রাখে। ৯শ টাকার স্থলে দুই বেলা ১৪শ’ টাকা কোনো কোনো মালিক ১৭শ’ টাকাও নেন। বাড়তি এই টাকার জন্যই আমাদেরকে বাড়তি টাকা আয় করতে হয়। আরেক চালক বারিক বলেন, আমরা সারাদিন পরিশ্রম করে যে টাকা রোজগার করি তা যদি মালিককেই দিয়ে দেই তাহলে খাবো কী। মালিকতো কোনো নিয়মকানুন মানে না। ১৪শ’ টাকা জমা না দিলে আমাকে গাড়ি দিবে না। আমি না নিলে নেয়ার মানুষের অভাব নাই। বাধ্য হয়ে মালিকের অন্যায় আবদারকে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি। ওই চালক বলেন, যাত্রীদের সাথে আমরা অন্যায় করছি-এটা বুঝি। কিন্তু এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। এ প্রসঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্ট বলেন, আইন করেও সিএনজি অটোরিকশা সেক্টরকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যাচ্ছে না। এর মালিক শ্রমিকরাই এতোটাই বেপরোয়া যে কোনো আইনেই এদেরকে বশ করানো যাচ্ছে না।
এদিকে, ঢাকায় এখন সিএনজি অটোরিকশা চলছে প্রায় ১৫ হাজার। এর বাইরে প্রাইভেট অটোরিকশা চলছে প্রায় ২০ হাজার। এই দুইয়ে মিলে সিএনজি অটোরিকশা সেক্টরে চলছে বিশৃঙ্খলা। ঢাকায় চলাচলরত ১৫ হাজার অটোরিকশার চাহিদার তুলনায় কম বলে এই স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সাথে যোগ হয়ে প্রাইভেট অটোরিকশা। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে এই প্রাইভেট অটোরিকশার সেক্টর।
ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকায় চলাচলরত বহু অটোরিকশার মিটার এখন টেম্পারিং করা আছে। তবে বিআরটিএর এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন কোনো অটোরিকশাতেই আর পুরনো মিটার নেই। তবে কেউ নতুন করে টেম্পারিং করলে করতে পারে। টেম্পারিং ধরা পড়লে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে ওই কর্মকর্তা দাবি করেন। এ প্রসঙ্গে ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ খোকন বলেন, ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এরপর চার বার গ্যাসের দাম বাড়লেও সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এজন্যই যতো সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা চলছে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, সাংবাদিকদের স্টিকার দিয়ে। মিটার ছাড়াই চলছে এগুলো। এতে করে মিটারযুক্ত অটোরিকশার চালকরা নানাভাবে ধিকৃত হচ্ছে। লোকসান পোষাতে তারা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে বা মিটারে যেতে চায় না। এই বিশৃঙ্খলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে কোনোভাবে শৃঙ্খলা ফিরবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।