দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : বালা-মুসীবত আল্লাহর সাথে বান্দার দুরত্ব কমিয়ে আনে। কারণ বালা-মুসীবত এলে বান্দা আল্লাহর ষ্মরণকে বাড়িয়ে দেয়। আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে থাকে। তাই বান্দা যখন আল্লাহর ষ্মরণ বিচ্যুত হয়ে দূরে চলে যায়। আল্লাহতায়ালা তখন ঐ বান্দাকে কাছে নেয়ার জন্য বালা-মুসীবত দিয়ে থাকেন। আল্লাহতায়ালা চান, তাঁর পছন্দীয় বান্দারা, তাঁর নিকটে থাকুক। তাঁর জাতে পাকের সিফাতের সাথে মিশে থাকুক। তাঁর জিকির ও ইবাদতের মধ্যে মশগুল থাকুক। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যে যতো বেশি মর্যাদাবান, তার পরীক্ষাও ততো বেশি। নবী-রাসূল, অলি-আবদাল, গাউস-কুতুব, পীর-ফকির থেকে শুরু করে সকল মানুষকে জীবনের কোন না কোন সময়ে বালা-মুসীবতের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এক্ষেত্রে নবী-রাসূলগণ সবচেয়ে বেশি মুসীবতের সম্মুখীন হয়েছেন। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে।’ (সূরা বাকারা:১৫৫)। ‘আর ভালো এবং মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি।’ (সূরা আম্বিয়া:৩৫)।
আল্লাহর চাইতে বড় কোনো কল্যাণ দানকারী দ্বিতীয় কেউ নেই। একমাত্র মুসীবতে পতিত হওয়া ছাড়া বান্দার পক্ষে আল্লাহর কল্যাণের মহত্ব বোঝা অসম্ভব। মুসীবতে না পড়লে কখনো আপন-পর, ভালো-মন্দ চেনা যায় না। তাই ইনসানের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বালা-মুসীবত অপরিহার্য। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোনো দুর্দশা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা দূরকারী কেউ নেই। আর যদি কোনো কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন তবে তিনিই তো সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আর তিনিই তাঁর বান্দাদের উপর ক্ষমতাবান।’ (সূরা আনআ’ম:১৭-১৮)। ‘কে আছে অসহায় ও বিপন্নের ডাকে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে এবং কষ্ট ও বিপদ দূরীভ‚ত করে দেয়?’ (সূরা নামল:৬২)। হযরত আবূ হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে. হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন,‘আল্লাহতায়ালা কারো কল্যাণ চাইলে তাকে মুসীবতে লিপ্ত করেন।’(বোখারি:৫২৪২)।
প্রত্যেকটি বালা-মুসীবত অসুখ-বিসুখ, দুঃখ-দুর্দশা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদিতে পতিত হওয়ার পিছনে কোন না কোন উদ্দেশ্যে থাকে। যা সধারণ একজন মানুষের চর্ম চুক্ষুদ্বারা উপলদ্ধি করা অসম্ভব। মুসীবত এলে মানুষ হা-হুতাশ করতে থাকে, অথচ মুসীবত বান্দার জন্য গোনাহের কাফফারা হিসেবে কাজ করে। গোনাহ ছাড়া যেমন বান্দাকে মাফ করার কোন সুযোগ নেই। তেমনি মুসীবত ছাড়া কল্যাণ দানের কোনো সুযোগ নেই। হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলমানের উপর কোনো মুসীবত আপতিত হলে তার বিনিময়ে গোনাহের কাফফারা হয়ে যায়; এমনকি ক্ষুদ্র কোনো কাঁটা বিধলেও।’ (মুসলিম:৬৬৩১)। অপর একটি হাদিসে হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ঈমানদার ব্যক্তির শরীরের একটি কাঁটার আঘাত কিংবা তার চেয়ে অধিক কোনো আঘাত লাগলে আল্লাহ তায়ালা তার একটি মাকাম বুুলুন্দ করে দেন কিংবা একটি গোনাহ মাফ করে দেন।’ (মুসলিম:৬৩২৮)।
আল্লাহতায়ালার পছন্দনীয় বান্দাদের তালিকায় নাম লিপিবদ্ধ করতে হলে, যে কোন ধরনের রোগ-শোক ও বালা-মুসীবতের সময় ধৈর্য্যধারন করতে হবে। সব সময় পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আর মুসীবতের সময় বেশি বেশি ইস্তেসফার পড়তে হবে। এবং আল্লাহতায়ালার নিকট দোয়া করতে হবে। তাহলে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে কল্যাণ লাভ করা সম্ভব। আল্লাহ সকলকে বোঝার তৌফিক দান করুক। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।