পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে দেবে' ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের উন্নয়নের কথিত শ্লোগানের আড়ালে গত একদশকে বাংলাদেশ হারিয়েছে তার সকল অর্জন আর মর্যাদা। গুম খুন অপহরণের ফলে উদ্ভুত ভয়ে জনগণকে পরিণত করা হয়েছে একটি আত্মমর্যাদাহীন জাতিতে। গত ৯ ফেব্রুয়ারী ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি বলেছেন, 'ভারতের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে দেবে'। ভারতীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঔদ্ধত্বপূর্ণ ও কান্ডজ্ঞানহীন যা, বাংলাদেশের জনগণের জন্য লজ্জাকর ও অপমানজনক।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে, অসংখ্য মা বোনের সম্মান- সম্ভ্রমের বিনিময়ে ৭১ সালে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় নয়। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে দেশের দামাল ছেলেরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, স্বাধীন ও মর্যাদাবান রাষ্ট্র ও নাগরিক হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য। অথচ, আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের জনগণ সম্পর্কে ভারত সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এমন উদ্ভট মন্তব্যের পরও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এতোদিনেও কোনরকমের প্রতিবাদ জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে মাথা এতটাই নত করেছে যে এখন আর বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, বাংলাদেশের জনগণের সম্মান ও মর্যাদার পক্ষে যা হয়েছে তা মর্যাদাহানীকর। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কথিত স্বামী-স্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতির কারণে আজ তাই বাংলাদেশের জনগণ হেয় হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ'। এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন, তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কিংবা সরকার গঠনের জন্য দেশের জনগণ কিংবা জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয়না। প্রয়োজন হয় নিশিরাত আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জনগণের প্রতি, জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি এমন অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ মন্তব্য একমাত্র সরকার প্রধান এবং তার দল আওয়ামী লীগের পক্ষেই সম্ভব। কারণ সুষ্ঠু ভোট তাদের জন্য আতঙ্ক, তাদের মসনদ উল্টে যাওয়ার ভয়ে তারা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ করছে। এই কারণেই আমরা বলি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের জনগণ ক্ষমতাহীন হয়ে যায়। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনগণ দেশে অনিরাপদ আর বিদেশে আত্মমর্যাদাহীন হয়ে যায়।
ক্ষমতাসীন সরকার জনগণকে নিজ দেশেই পরাধীন করে ফেলেছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ঔপনেবেশিক আমলে জনগণের যতটুকু অধিকার ছিলো সেটাও আওয়ামী লীগ কেড়ে নিয়েছে। দেশের জনগণের এখন কোনো অধিকার ও মর্যাদা অবশিষ্ট নেই। নেই ভোটাধিকার। জনগণ বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, তাদের ভোটাধিকার হরণের জন্য জনম্যান্ডেটহীন সরকার খোদ নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের পুতুল করে রেখেছে। একবার বিনাভোটে এমপি ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠন, আবার নিশিরাতে ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠনের পর জনগণের সামনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতালোভী কদাকার চরিত্র স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার ভোটাধিকার হরণের নতুন যন্ত্র ইভিএম নিয়ে মাঠে নেমেছেন সিইসি নুরুল হুদা।
তিনি বলেন, বিতর্কিত এবং ক্রুটিপূর্ন হওয়ার কারণে সারাবিশ্বে নিষিদ্ধ ইভিএম বাংলাদেশে আমদানি করতে রাষ্ট্রের খরচ হয়েছে শত-শত কোটি টাকা। এবারের ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আবারো প্রমাণিত হয়েছে, ইভিএম হলো মহা ভোট চুরির শান্তিপূর্নভাবে-নিরাপদে-ঝামেলামুক্ত যন্ত্র। অথচ, এই ভোট চুরির মেশিনের পক্ষে সাফাই গেয়েই চলছেন সিইসি। কারণ, তাদের ভোটের দরকার নেই, তাদের দরকার ইভিএমের নামে মানুষের ভোটাধিকারের সঙ্গে রঙ্গ তামাশা করা আর ইভিএম কেনার নামে রাষ্ট্রের শতশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করা। একটি সভ্য দেশ হলে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল, নির্বাচন কমিশনের প্রতি, নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। সেটি না কোরে সিইসি এখন রাজনৈতিক নেতাদের মতো বক্তৃতা দিচ্ছেন। গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ে ইটিআই ভবনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই সরকারের বেশরম সিইসি নরুল হুদা বলেছেন, ‘সিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটারের কাছে না গিয়ে রাস্তায় শোডাউন করেছে। আর সে কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ শোডাউন ভোটের প্রচার কার্যক্রমেরই অংশ। ভোটাররা শোডাউনে অংশ নেয় কিন্তু ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়না এটার দায় নির্বাচন কমিশনের বেশি। কারণ আওয়ামীলীগের শোডাউন হচ্ছে সন্ত্রাসী শোডাউন। তারা বিরোধী পক্ষকে ভোট কেন্দ্রে যেতে ভয় দেখানোর জন্য স্বশস্ত্র শোডাউন দেয়। কিন্তু ঐতিহ্যগতভাবে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের শোডাউনে অংশ নিয়ে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রতি তাদের আকাঙ্খার জানান দেয়। আবার জনগণ যখন দেখে, ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ভোটাধিকার হরণের অভিভাবক হিসেবে কাজ করেছে সিইসি নুরুল হুদার নেতৃত্তাধীন নির্বাচন কমিশন। জনগণ যখন দেখে ইভিএমের জনক খোদ সিইসির আঙুলেই সমস্যা, জনগণ যখন দেখে, কেন্দ্র দখল করে আগেই বুথের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষমতাসীন দলের লোক কর্তৃক ইভিএমে'র মাধ্যমেই একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেয়, তখন আর জনগণ ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরাপদ মনে করেনা। এই সরকারের আমলে জাতীয় কিংবা স্থানীয় সকল নির্বাচনেই ভোটাররা দেখছে, ভোট কেন্দ্রে যাওয়াটা তাদের পক্ষে বিপদজণক। কারণ অনেক ভোট কেন্দ্রের ভোটাররা রক্তাক্ত হয়ে বাসায় ফিরেছে। তারা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিক বা না দিক, নির্বাচন কমিশন এবং ইভিএম এ-দুটিই ব্যবহৃত হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।