Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তদন্ত কমিটি গঠন, ঘাতক নৌযানের চলাচল স্থগিত

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বরিশাল ব্যুরো : পিএস মাহসুদ-এর দুর্ঘটনায় ঘাতক নৌযান ‘এমভি সুরভী-৭’ এর চলাচল স্থগিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ঘটনা তদন্তে সমুদ্র পরিবহন অধিদফÍর চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছে। তদন্ত কমিটিতে সমুদ্র পরিবহন অধিদফÍর ছাড়াও বিআইডব্লিউটিএ এবং আইডব্লিউটিসি’র প্রতিনিধিও থাকবে বলে জানা গেছে। ঈদের ঘরমুখি বিপুলসংখ্যক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে বরিশাল আসার পথে বিআইডব্লিউটিসি’র রকেট স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ বিপরীত দিক থেকে আসা বেসরকারি নৌযান এমভি সুরভী-৭’র সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে এর ৬জন যাত্রী নিহত ও অন্তত ৫০জন আহত হয়েছে। আহতদের বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটিকে বিআইডব্লিউটিএ’র টাগ ‘এমটি দূর্বার’এর সাহায্যে সকাল ৯টার মধ্যে বরিশাল বন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের লাশে মর্গে পাঠান হয়েছে। এনিয়ে গত ছয় মাসে পিএস মাহসুদ ছোট বড় অন্তত ৮টি দুর্ঘটনার শিকার হলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের সাহস দেখাননি বিআইডব্লিউটিসি’র শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ। 

নিহতদের দুজনের বাড়ী ঝালকাঠী ও বরগেরহাটে। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর মোজামেম্মল হক বরিশালে পৌঁছেছেন। বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যানও দুপুরে দুর্ঘটনা কবলিত নৌযানটি পরিদর্শন করেন। তিনি ইনকিলাবকে জানান আমি আসার পরে চেষ্টা করছিলাম শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এসব নৌযান সংরক্ষন করতে। কিন্তু পিএস মাহসুদ-এর এতবড় দূর্ঘটনা আমাদের চরমভাবে হতাশ করেছে । তদন্ত সম্পন্ন করার পরেই দূর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি মেরামতে হাত দেয়া হবে বলে জানান তিনি। তবে ঠিক কবে নাগাদ নৌযানটি সচল করা সম্ভব হবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না বলে জানান চেয়ারম্যান। সংস্থাটির অপর প্যাডেল জাহাজ ‘পিএস টার্ণ’ও ভারী মেরামতে ডকইয়ার্ডে রয়েছে। গতকালের দুর্ঘটনার ফলে ৪টি প্যাডেল জাহাজের দুটিই বন্ধ হয়ে গেল। ফলে সংস্থার ঈদযাত্রী পরিবহন চরম সংকটে পড়ল।
রবিবার সন্ধায় ঢাকা থেকে নিয়মিত রকেট সার্ভিসের যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর-বরিশালের উদ্যেশ্যে যাত্রা করে পিএস মাহসুদ। গতকাল রাত সাড়ে ৩টার দিকে পিএস মাহসুদ বরিশাল বন্দরের অদুরে কির্তনখোলা নদী দিয়ে চরবাড়ীয়া ও পশুরীকাঠী এলাকা অতিক্রমকালে বরিশাল থেকে ঢাকামুখি ‘এমভি সুরভী-৭’ নৌযানটির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এদূর্ঘটনায় পিএস মাহসুদ-এর বাম পাসের মাধ্যবর্তি স্থান থেকে প্রায় ৬০ফুট এলাকা দুমড়ে মুচড়ে গেছে। দূর্ঘটনায় মাহসুদ-এর লোয়ার ডেকের বাম পাসের ৪-৫টি ক্রু-কেবিন সহ প্যাডেলের বেশীরভাগ এলাকাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নৌযানটির প্রথম শ্রেনীর বামে পাশের ৪ নম্বর কক্ষ থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত সবগুলোই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দূর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের প্রায় সকলেই লোয়ার ডেকের বাম পাশের ক্রু-কেবিনগুলোতে ভ্রমণ করছিল। আহতদেরও প্রায় সকলে লোয়ার ডেকের বাম পাশে যাত্রী ছিলেন। প্রথম শ্রেণীর কবিনগুলোর কয়েকজন যাত্রীও কম-বেশী আহত হয়েছেন।
দূর্ঘটনার খবর পাবার সাথেই বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল অঞ্চলের এজিএম দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে দ্রুত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হয়। সংস্থার অপর নৌযান এমভি মধুমতি’তে করে মাহসুদ-এর যাত্রীদের উদ্ধার করে বরিশাল হয়ে ঝালকাঠী-পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটের মোড়রলগঞ্জে পাঠান হয়েছে।
এব্যপারে গতকাল সকাল থেকে সংস্থা চেয়ারম্যানের সেল ফোনে বহু চেষ্টা করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ