Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অকার্যকারিতার কারণেই গুলশান হামলা : হিন্দুস্তান টাইমস

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অকার্যকারিতার কারণেই গুলশানের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ভারতের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে। গত রোববার ‘বাংলা সিজ : ব্লেম ডিপ ডিসফাংশন ইন পলিটিক্স অ্যান্ড স্টেট ইনস্টিটিউশন্স’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি এই মন্তব্য করেছে। গত শুক্রবার রাতের হামলার পর শেখ হাসিনা সরকারের সন্ত্রাসদমন নীতি আরো বেশি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়বেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামির ওপর সরকারের নিপীড়নমূলক কার্যক্রমের বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে এতে। এই সঙ্কট থেকে উত্তরণে নতুন ধরনের রাজনীতির প্রয়োজন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশানে বাংলাদেশ মুম্বাই-ধরনের আত্মঘাতী হামলার শিকার হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায় তাণ্ডব চালানো ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গ্রুপটির দাবির সত্যতা কয়েক দিনের মধ্যেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে রাষ্ট্রীয় ‘এস্টাবলিশমেন্ট’ এবং চরমপন্থী বাহিনীর মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে যে তিক্ত ও রক্তাক্ত যুদ্ধ চলছে, যেটা সুস্পষ্ট করার জন্যই দৃশ্যত সচেতনভাবে বিদেশীদের টার্গেট করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হামলার পর শেখ হাসিনা সরকারের সন্ত্রাসদমন নীতি আরো বেশি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়বে। এ ধরনের ব্যবস্থা মাঝে মাঝে সহায়ক হয়, যেমন হয়েছিল মুম্বাই হামলার পর পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ লস্কর-ই-তৈয়বার লাগাম টানতে বাধ্য হওয়ায়।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেখ হাসিনা সরকারের এই ধরনের কোনো সুবিধা নেই। ইসলামি গ্রুপগুলো গত বছরজুড়ে ব্লগার, নাস্তিক, প্রকাশক, হিন্দু, শিয়া ও বিদেশীদের ওপর বেশ কয়েকটি নির্মম, প্রায়ই অবর্ণনীয় সহিংস হামলা চালিয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, বাংলাদেশে চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা প্রায় অসম্ভব বলেই প্রমাণিত হয়েছে, কারণ এগুলো নিজেরাই বাংলাদেশের রাজনীতি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে গভীর অকার্যকারিতার ফসল। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং সরকার উভয়ই ওই অকার্যকারিতার ফসলও চালক। বাংলাদেশে মারাত্মক সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবেশ রয়েছে এবং অচলাবস্থাররাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে বিবদমান দুটি দল। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) মতে, এটা চরমভাবে দলীয় রাষ্ট্র কাঠামো, এখানে সিভিল সার্ভিস, পুলিশ ও বিচার বিভাগ রাজনৈতিক আনুগত্যের মাধ্যমে নিয়োগ করা হয় কিংবা ফায়দা তোলা হয়। শেখ হাসিনার সরকার সহিংস ইসলামপন্থীদের বিরোধী, কিন্তু তারাও বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মতো বিরোধী দলগুলোর ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে। এটা এবং দলীয় প্রকৃতির ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা বিচ্ছিন্নতার জন্ম দিয়েছে, চরমপন্থী সংস্থা এবং সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর আবেদন বাড়িয়ে দিয়েছে। অধিকন্তু, রাজনীতি-চালিত আমলাতন্ত্রকেও একটি সরকারকে অব্যাহত রাখা এবং সেদিকে যাওয়ার কাজে নিয়োজিত রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার মিডিয়া এবং নাগরিক সমাজের অংশগুলোর ওপরও দমন চালিয়ে তার নিজের বৈধতা ক্ষুন্ন করেছে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্কটে ভুগছে, যেখানে সন্ত্রাসবাদ কেবল একটি রূপ। এখন ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার দিকে নজর দেয়া হবে, কিন্তু দেশটির প্রয়োজন নতুন ধরনের রাজনীতি এবং ধারাবাহিক পদক্ষেপ যা সামাজিক উত্তেজনা নিরসন করবে।ঠিক এখন এটা কল্যাণকামী চিন্তার মতো শোনায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ