Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাতক্ষীরায় কাফনের কাপড় পাঠিয়ে একই পরিবারের তিন ভাইকে মৃত্যুর হুমকি

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা : সাতক্ষীরায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হাতে লেখা চিঠি ও কাফনের কাপড় পাঠিয়ে তিন ভাইকে মৃত্যুর হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার ভোররাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে এই চিঠি পৌছে দেওয়া হয়। 

তিনি ব্রহ্মরাজপুর বড়খামার গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ গাজীর ছেলে মনিরুজ্জামান তুহিন। তিনি সাতক্ষীরা শহরের এবি ব্যাংকের নিচে অন্তর মাল্টিমিডিয়া এন্ড কম্পিউটারের পরিচালক। তুহিন ব্রহ্মরাজপুর বাজারের গাজী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করেন। এই বাড়িতেই সোমবার ভোর রাতের কোন এক সময়ে সিঁড়ি বেয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠে দরজার গ্রীলের মুখে দূর্বত্তরা একটি সাদা খামের মধ্যে এক টুকরা সাদা কাপড় ও হাতে লেখা একটি চিঠি রেখে যায়। সকালে তুহিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার মিষ্টি ঘরের দরজা খুলেই এটি দেখতে পান।
চিঠিতে লেখা : 'পৌঁছে দিবো শেষ ঠিকানায়, সময় তোর শেষ, নাস্তিকের বাচ্চা, নাস্তিকের দল, পুলিশের দালালি করিস, ২০০৮ সালে ৩০ শে ডিসেম্বর তুই পতাকা উড়ায়ে বলেছিলি আজ সাতক্ষীরা স্বাধীন হয়েছে, ৫ জুনুয়ারি তোরা সবাই ভোট দিছিস উপজেলা নির্বাচনে বাবুর পক্ষে, ঘর দিছিস (নির্বাচনী প্রচারণা করার জন্য), মানুষের নামে মামলা দিছিস, তোদের দিন শেষ তোদের মৃত্যু ঘোষনা করলাম।' চিঠির শেষাংশে তুহিন মিঠু ও বাবু ( তিন ভাই) এর নামের উপর ক্রস চিহ্ন দেওয়া।
এই চিঠি পাওয়ার পর থেকে তাদের পরিবারে চরম আতংক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। এ ঘটনায় মনিরুজ্জামান তুহিন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
চিঠির শেষাংশে তুহিন মিটু বাবু এর নামের উপর ক্রস চিহ্ন দেওয়া। তবে কারা এই চিঠি পাঠিয়েছে খামের মধ্যে কোন নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তবে চিঠির ধরন অনুযায়ী উগ্রপন্থী কোন গোষ্ঠী বা মৌলবাদ মতাদর্শে বিশ্বাসী কারো লেখা হতে পারে। চিঠির অধিকাংশ লেখার বানান ভুল ও অশুদ্ধ। মিঠু জানান, তুহিন ২০০৪ সালে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ব্যবসার কারনে দলের পেছনে আর সময় দেন না। তবে বরাবরই তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থক। এছাড়া ১৯৯৬ সালে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটিতে মনিরুজ্জামান তুহিন এর মা মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন। তুহিনের সেঝো ভাই রেজাউল করিম মিঠু সাতক্ষীরার স্থানীয় দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে কর্মরত। এছাড়া গত ২২ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড থেকে আ’লীগ মনোনীত হয়ে সদস্য পদে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়। অপরদিকে সে বর্তমানে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাংগঠনিকের দায়িত্বে রয়েছে। তুহিনের মেঝো ভাই আব্দুর রহিম বাবু ব্রহ্মরাজপুর বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তারা মোট ৪ ভাই ও ২ বোন। বড় ভাই আব্দুস সেলিমও ব্রহ্মরাজপুর বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। একটি সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনের সময় তাদের নিজেদের উদ্যোগে ব্রহ্মরাজপুর বাজারের নিজেদের গাজী মার্কেটে আওয়ামীলীগ মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবুর একটি নির্বাচনী অফিস করে। এই চিঠি পাওয়ার পর থেকে তাদের পরিবারে চরম আতংক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা এ বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করেছে।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ