Inqilab Logo

রোববার ১৩ অক্টােবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল বিদা মাহে রমজান

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী
সর্বশেষ রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা
একথা সুস্পষ্ট যে, লাইলাতুল কদর শেষ দশকে, এর মধ্যে অধিক সম্ভাব্য হচ্ছে বেজোড় রাতগুলো। তবে অবশিষ্ট রাতের বিবেচনায় জোড় রাতেও লাইলাতুল কদর হতে পারে। যদি মাস ত্রিশ দিনের হয়। এ জন্য সব মুসলমানের উচিত শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা। বিশেষ করে ত্রিশের রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা একান্ত দরকার। এ জন্য তাতে রাত জাগার আগ্রহকে পরিবর্ধিত করা প্রয়োজন। কখনো কখনো রমজানের সর্বশেষ রাতে লাইলাতুল কদর হতে পারে। যেমন বিভিন্ন হাদিস তার স্থানান্তর হওয়ার প্রমাণ বহন করে। ঊনত্রিশে রমজান, অথবা ইমামের কুরআন খতমের পর সালাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত ও রাত জাগরণে অলসতা না করা চাই। কারণ, এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে লাইলাতুল কদর তালাশ করা যা ঊনত্রিশে অথবা সর্বশেষ রাতেও হতে পারে।
হযরত উবাইদাহ ইবনে আবদুর রহমান (রা.) বলেন, আমার পিতা আবদুর রহমান আমাকে বলেছেন, হযরত আবু বকর (রা.)-এর নিকট লাইলাতুল কদর উল্লেখ করা হলো। তিনি বললেন, আমি যা রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে শুনেছি, তা কখনো আমি শেষ দশ দিন ব্যতীত তালাশ করি না। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, লাইলাতুল কদর তোমরা রমজানের অবশিষ্ট নয়দিনে তালাশ কর। অথবা সর্বশেষ রাতে তালাশ কর। তিনি বলেন, হযরত আবু বাকারাহ (রা.) রমজানের বিশদিন সারা বছরের ন্যায় স্বাভাবিকভাবে সালাত আদায় করতেন। যখন শেষ দশক পদার্পণ করত, তখন তিনি খুব বেশি ইবাদত করতেন। (জামে তিরমিজী ঃ হাদিস নং ৭৯৪; মুসনাদে আহমাদ ঃ খ--৫, পৃষ্ঠা-৩৯, নাসাঈ ফিল কুবরা ঃ হাদিস নং-৩৪০৩; বাযযার ঃ হাদিস নং-৩৬৮১; তায়ালিমি ঃ হাদিস নং-৮৮১; তাবরানী ঃ মুসনাদিশ শামিয়্যিন; হাদিস নং-১১১৯।)
হযরত মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন ঃ তোমরা লাইলাতুল কদর সর্বশেষ রাতে তালাশ কর। ইবনে খুজাইমাহ স্বীয় সহীহ গ্রন্থে এ সম্পর্কে একটি অধ্যায় রচনা করেছেন : রমজানের শেষ রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করার নির্দেশ প্রসঙ্গে অধ্যায়। যদিও তা বছরের যে কোনো সময় হতে পারে। (আহাদীসে সহীহাহ্্ সংকলন ঃ হাদিস নং-১৪৭১; সহীস ইবনে খুজাইমাহ ঃ হাদিস নং-২১৮৯)।
প্রসঙ্গত, লাইলাতুল কদরের আলামত সম্পর্কে অবগতি লাভ করা একান্ত দরকার। এ প্রসঙ্গে হযরত উবাদাহ ইবনে সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই লাইলাতুল কদরের আলামত হচ্ছে এই যে, উক্ত রাত হবে সাদা উজ্জ্বল যেন তাতে আলোকিত চাঁদ রয়েছে। সে রাত হবে স্থির, তাতে ঠা-া বা গরম থাকবে না। তাতে সকাল পর্যন্ত কোনো তারকা দ্বারা ঢিল ছোঁড়া হবে না। তার আরও আলামত হচ্ছে এই যে, সেদিন সূর্য উদিত হবে সমানভাবে। চৌদ্দ তারিখের চাঁদের ন্যায়, তার কোনো কিরণ থাকবে না। সেদিন শয়তানের পক্ষে সূর্যের সাথে বের হওয়া সম্ভব হবে না। (মুসনাদে আহমাদ ঃ খ--৫, পৃষ্ঠা-৩২৪; তাবরানী ঃ মুসনাদিস শামিয়্যিন ঃ হাদিস নং-১১১৯; হায়সানী ঃ আস যাওয়ায়েদ; খ--৩, পৃষ্ঠা-১৭৫; আল মুখতারাহ ঃ হাদিস নং-৩৪২)
হযরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন ঃ আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছিল। অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তা হচ্ছে শেষ দশকে। সে রাত হবে সাদা উজ্জ্বল। না-গরম, না ঠা-া, যেন আলোকিত চাঁদ নক্ষত্রগুলোকে আড়াল করে আছে। ফজর উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সে রাতে শয়তান বের হতে পারে না। (ইবনে খুযাইমাহ ঃ হাদিস নং-২১৯০; ইবনে হিব্বান ঃ হাদিস নং-৩৬৮৮)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল বিদা মাহে রমজান

৫ জুলাই, ২০১৬
৪ জুলাই, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ