Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শৈলকুপায় মানুষ এখন হাসপাতালমুখী

বদলে গেছে স্বাস্থ্যসেবা

শিহাব মল্লিক, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। শিক্ষা সংস্কৃতির পাশাপাশি বদলে গেছে উপজেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান। থানা সদরের সাথে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সড়ক যোগাযোগ ভালো হওয়ার বছরের শুরুতেই হাওয়া লেগেছে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সাধারণ মানুষ এখন হাসপাতালমুখি, সেবাও পাচ্ছে ভালো এমনটাই জানা গেছে সরেজমিন ঘুরে।
বর্তমানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট শৈলকুপা হাসপাতালের চিকিৎসক ২২ জন, নার্স সংখ্যা ২৩ জন, অন্যান্য শাখায় কর্মরত কর্মচারিও সন্তোষজনক। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে এক্সে, ইসিজি, আল্ট্রাসনো ও নিয়মিত অপারেশন। একঝাঁক মেধাবী চিকিৎসক সেবার ব্রত নিয়ে সর্বপ্রথম যোগদান করেছেন শৈলকুপা হাসপাতালে। তাদেরই একজন ডা. এসএম আসাদুল্লাহ জানান, মানবসেবার ব্রত নিয়ে এ হাসপাতালে তিনি যোগদান করেছেন। ইনডোর আউটডোরসহ বিভিন্ন সময় অসময়ে ডাক পড়লেই রোগী দেখে থাকেন। ডা. একেএম সুজায়েত হোসেন, ডা. আকাশ আহম্মেদ আলীফ, ডা. নুসরাত আহম্মেদ রুমানা জানান, চাকরি জীবনের প্রথম পোস্টিংয়ে আসা এ হাসপাতাল ঘিরে তাদের অনেক স্বপ্ন। বেশিরভাগ উদ্যোমী আর প্রগতিশীল চিন্তা থেকে তারা নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছাড়াও সময় পেলে রোগী দেখার কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করছেন। ডা. তৌকির আহম্মেদ জানান, অনেক সময় একাধিক ডাক্তার ইমারজেন্সীতে রোগীর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে গোটা আউটডোর, এখন আর আগের মতো রোগীদের অভিযোগ নেই, চিকিৎসাও পাচ্ছেন তুলনামূলক ভালো। তিনি বলেন, হাসপাতালের নামে অনলাইনে একটি ফেইসবুক পেজ খোলা হয়েছে, যেখানে রোগীদের সুবিধা অসুবিধা ও বিভিন্ন মতামত গ্রহণ ছাড়াও প্রয়োজন বুঝে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা চালানো হয়। আরএমও রাকিবুদ্দিন রনি জানান, প্রধান ফটক থেকে গোটা হাসপাতাল আঙিনা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকে। হাসপাতাল দালাল মুক্ত করে সময়পোযোগী করে তোলা হয়েছে। আউটডোরে গড়ে প্রতিদিন ৩ শতাধিক রোগী তাদের বিভিন্ন সমস্যার সেবা পাচ্ছেন।
বন্ধেখালী গ্রাম থেকে মেয়ে, নাতনী ও স্বামীকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসা নূরী খাতুন জানান, হাসপাতাল বিমুখ ছিলেন বহুদিন এক প্রতিবেশির কথামতো গতকাল হাসপাতালে এসে তিনি হতবাক। সবাই তাৎক্ষণিক ডাক্তার দেখিয়ে কিছু ওষুধ পেয়ে বেজায় খুশি। হাটফাজিলপুর গ্রামের আবু সাইদ জানান, তার স্ত্রীকে এনেছিলেন আল্ট্রাসনো করতে যা বাইরের ক্লিনিক থেকে সাড়ে ৩ থেকে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত খরচ হত এখনো ১১০ টাকায় খুব সহজেই করতে পেরেছেন। শীতালী গ্রামের সেলিনা খাতুন জানান, হাসপাতালে আগের মতো হৈচৈ নেই লাইন ধরে দালাল ছাড়াই ভালো সেবা পাচ্ছেন। শুধু উপজেলা সদরেই নয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠান গুলোতেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। নিয়ম করে সেখানেও যাচ্ছেন ডাক্তারগণ, ভালভাবে বিতরণ হচ্ছে সরকারি ঔষুধপত্র।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্যসেবার এ প্রতিষ্ঠান (টিএইচও) প্রধান ডা. রাশেদ আল মামুন জানান, তিনি যোগদানের পর থেকেই সেবার মানবৃদ্ধিতে সর্বাত্বক চেষ্টা করছেন। তার মতে হাসপাতালের স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করা এবং বর্তমান রান্নাঘরটি স্থানান্তর অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। ডাক্তারের পাশাপাশি রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, হাসপাতালে আরো একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন। বাংলাদেশের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় ১৯ নম্বর র‌্যাংকিং এর থাকা শৈলকুপা হাসপাতালের অটোক্লেভ মেশিনটি অচল পড়ে আছে, বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জাতীয় প্রসূতি সেবায় পুরুস্কারপ্রাপ্ত শৈলকুপা হাসপাতালের বর্তামান ডাক্তার অনুযায়ী তীব্র আবাসন সঙ্কট দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ