পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানের হলি আটিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে মানুষ এবং যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিত বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশিদের যাতায়াত আছে এমন স্থানে পুলিশি তৎপরতা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে।
চট্টগ্রামে নিরাপত্তা জোরদার
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বাড়তি এ নিরাপত্তা ঈদের ছুটিতেও বহাল থাকবে। চেকপোস্ট বাড়ানোর পাশাপাশি নিয়মিত টহল জোরদার এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোসহ বিদেশিদের যাতায়াত আছে এমন স্থানে পুলিশি নিরাপত্তা আগের চেয়ে এখন বেশি দেখা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্টো পলিটন পুলিশের (সিএমপি) কর্মকর্তারা বলেছেন, ঈদে এমনিতেই নগরীর আবাসিক এলাকা, বাস ও রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। কিন্তু রাজধানীর গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর সিএমপি’র পক্ষ থেকে আবাসিক হোটেল, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) এলাকায় পুলিশি টহলের পাশাপাশি তল্লাশি জোরদার হয়েছে।
সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক হোটেল ও খুলশীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকা যেখানে বিদেশিরা বসবাস করেন সেখানে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।
নগরীতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৭টি (কেপিআই) গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, এছাড়া ছয়টি আবাসিক হোটেলে নিরাপত্তা বাড়ানোর সাথে পুলিশ ফোর্সের তদারকিও বেড়েছে বলে কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এর বাইরে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনাতেও নিরাপত্তা টহল অব্যাহত রয়েছে। পোশাকের পুলিশের বাইরে সাদা পোশাকের সদস্যরাও নগরজুড়ে টহল দিচ্ছেন। টানা ৯ দিনের ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে দুইদিন আগে। মহানগরীর প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা ঈদ উদযাপনে গ্রামে যাচ্ছে। ফাঁকা নগরীতে চুরি, ডাকাতি, দস্যুতা রোধে সতর্ক থাকবে পুলিশ।
বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর থেকে জানান,
গুলশান হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর দক্ষিণ-পশ্চিমের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একই সাথে যশোরের বেনাপোল, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। গোয়েন্দা, পুলিশ ও র্যাবের একাধিক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। যশোরের পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান জানান, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসারবাহিনীর সদস্য। থানা, ফাঁড়ি ও আইসিতে লোকবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, প্রত্যক্ষভাবে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন কেউ যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ইমিগ্রেশনে সব যাত্রীর কাগজপত্র নিখুঁতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সেজন্য ছাড়পত্র দিতে ইমিগ্রেশনগুলোতে অতিরিক্ত সময় লেগে যাচ্ছে পাসপোর্ট যাত্রীদের। সন্দেহভাজন লোকদের বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশনের এক কর্মকর্তা জানালেন, অত্যন্ত সতর্কতার সাথে যাত্রীদের পাসপোর্ট দেখা হচ্ছে। ইমিগ্রেশনে যেসব দালাল থাকে তাদের মাধ্যমে বৈধ ও অবৈধভাবে কোনো সন্ত্রাসী জঙ্গি যাতে সীমান্ত পার না হতে পারে সে ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনে বাড়তি সতর্কতা আরোপ
বেনাপোল অফিস জানায়, ঢাকার গুলশান এলাকায় জিম্মি উদ্ধার ও গোলাগুলির প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনে। বাড়তি সতর্কতা আরোপ করা হয়েছে যাত্রীদের পাসপোর্ট নাম-ঠিকানা ও কাগজপত্র পরীক্ষার ক্ষেত্রে।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, দেশ থেকে যাতে কোনো জঙ্গি, সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী পালাতে না পারে, সে জন্য বাড়তি সতকর্তা অবলম্বন করা হচ্ছে। যারা ভারত যাচ্ছে তাদের পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনলাইনে যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্টের নাম ঠিকানা নিশ্চিত হয়ে পাসপোর্টে এক্সিট সিল দেয়া হচ্ছে।
রোববার বিকেলে ইমিগ্রেশন অফিসে দেখা গেছে, কর্তব্যরত অফিসাররা প্রতিটি পাসপোর্ট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিল মারছেন। সন্দেহ হলেই যাত্রীদের নানা প্রশ্ন করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশনের অধিকাংশ কম্পিউটারের সামনে সাঁটিয়ে দেয়া হয়েছে পুলিশের বেশকিছু তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর নাম-ঠিকানা।
চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইকবাল হোসেন জানান, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাত্রীদের পাসপোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এক্সিট দেয়া হচ্ছে। বহিরাগত পাসপোর্ট দালালরা যাতে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে ইমিগ্রেশন গেটে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যার পাসপোর্ট তিনি ছাড়া কোনো অবস্থাতেই অন্য কারো কাছ থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।