পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নতুন আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। চীন থেকে এ ভাইরাস ছড়ালেও এর উৎপত্তি আসলে কোথায়, তা এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যেহেতু এটি ফ্লু জাতীয় রোগ তাই হাঁচি-কাশি থেকে সাবধান হতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি হাত পরিষ্কারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আর হাঁচি-কাশি থেকে সাবধানতা থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে মাস্ক।
বিশ্বের সব দেশেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে মাস্ক ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। নাগরিকরাই বেশি সচেতন হয়ে ছুটছেন মাস্ক কেনার দিকে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, ৫ টাকার মাস্ক কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। অর্থাৎ চার গুণ পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। একদিকে হঠাৎ করে বাজারে চাহিদা তৈরি হওয়ায় যেমন সংকট তৈরি হয়েছে, তেমনি এতদিন চীন থেকে যে পরিমাণ মাস্ক আমদানি করা হতো তা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতারা জানান, করোনাভাইরাসের বিষয়টি ছড়ানোর খবরেই বাজারে মাস্ক বিক্রি হয়েছে দ্বিগুণ দামে। এরপর কোথাও কোথাও তা বিক্রি হচ্ছে চারগুণ দামে। আর এজন্য বাজার মনিটরিংয়ের অভাবকে দায়ী করছেন তারা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বিপরীত পাশের এ কে এস ফার্মেসিতে মাস্ক কিনতে এসেছিলেন জাহিদুল ইসলাম। কিন্তু দামের ঊর্ধ্বগতিতে মাস্ক কেনার আশা ছেড়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন দোকান থেকে। চলে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, প্রায় দশটা ফার্মেসিতে গেলাম মাস্ক কিনতে। কিন্তু দুইটা দোকানে পেলাম। তাও আবার দাম বেশি। দাম শুধু বেশি না, ঠিক যেন পকেট কেটে টাকা নেওয়ার অবস্থা।
তিনি বলেন, গত সপ্তাহেই ৫ টাকা করে মাস্ক কিনেছি। নতুন করে আবার কিনতে এসে দেখি একেক পিসের দাম চায় ২০ টাকা। এগুলো তো ওয়ানটাইম মাস্ক। আর বেশিদিন ব্যবহারের উপযোগী যেগুলো, সেগুলোর দাম আজ হাঁকা হচ্ছে ৮০ টাকা। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও এর দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এখন এত দাম দিয়ে মাস্ক কিনব নাকি পেটের জন্য খাবার কিনব— প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি।
এ কে এস ফার্মার বিক্রয়কর্মী মো. কাউসার বলেন, দাম বাড়ানো-কমানোয় আমাদের কোনো হাত নেই। আমাদের কেনা রেট যা পড়ে, সে হিসাবেই আমরা লাভের অংশটা যোগ করে বিক্রি করি।
এদিকে, মাস্কের বিষয়ে জানতে বেশ কিছু সুপার ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অধিকাংশ সুপার ফার্মেসিতেই সপ্তাহখানেক ধরে মাস্কের সরবরাহ নেই। তাই চাহিদা থাকলেও তারা বিক্রি করতে পারছেন না। চানখাঁরপুরল এলাকার আরেক ফার্মেসির কর্মী রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের ফার্মার জন্য আমরা চীন থেকে মাস্ক আমদানি করে থাকি। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মাস্ক আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে আমাদের স্টকও শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে আর মাস্ক আনা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, যারা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত নন, তাদের মাস্ক পরার দরকার নেই। সর্দি-কাশি বা ভাইরাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হলেই কেবল মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তাতেও মাস্কের চাহিদায় ভাটা পড়েনি।
অবশ্য কেবল বাংলাদেশে নয়, করোনা আতঙ্কে মাস্কের চাহিদা বেড়েছে বিভিন্ন দেশেই। তবে এই বাড়তি চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা যেন বাড়তি টাকা না নিতে পারে, সে বিষয়েও এসব দেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত তো বটেই, করোনার উৎপত্তিস্থল বেইজিংও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরই ভারত নিজেদের চাহিদা মেটাতে আপাতত মাস্ক রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যে দেশ থেকে উৎপত্তি, সেই দেশের রাজধানী খোদ বেইজিংয়ে মাস্কের চাহিদা মেটাতে ২৪ ঘণ্টা উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। আর মাস্কের দাম বাড়ানোর দায়ে একটি ফার্মেসিকে চার লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।