পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে মংলা বন্দর। চীনা নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের নাবিকদের অবাধ যাতায়াত এ বন্দরে। জাহাজে আসা নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নেই যথাযথ ব্যবস্থা। ফলে পণ্য খালাস-বোঝাই করতে গিয়ে নাবিকদের সংস্পর্শে যাওয়া স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে প্রাণঘাতি এ ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ ভাইরাস প্রতিরোধে জেটিতে নেয়া হয়েছে প্রাথমিক প্রস্তুতি। যদিও এ প্রস্তুতি পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।
বন্দর সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ আসছে। আর প্রতিটি জাহাজের নাবিকের সংখ্যা থাকে ৩০ থেকে ৪০ জন। সেই হিসেবে এ বন্দরে গড়ে নতুন করে দেড় শতাধিক বিদেশী নাগরিকের আগমন ঘটে। অপরদিকে পণ্য খালাস বোঝাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫দিন। বর্তমানে এ বন্দরে ১৮টি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এ সকল জাহাজে চীনসহ রয়েছে বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এ ছাড়া মংলা ইপিজেড ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্পে কাজ করছেন অসংখ্য চীনা নাগরিক।
মংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও শিপিং ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল জানান, বন্দরে জাহাজ আসার পণ্য খালাসের কাজে যেতে হতে হচ্ছে এজেন্ট, কাস্টম, ইমেগ্রেশন পুলিশ, ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় শ্রমিকদের। এছাড়া বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশী নাবিকদের সংস্পর্শে যেতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বন্দরে আসা বিদেশী নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম থাকলে তা করা হয় না। এ ক্ষেত্রে বিদেশী নাবিকদের মাধ্যমে দেশীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। তিনি এ বিষয় স্বাস্থ্য বিভাগের আরও আধুনিকায়নসহ প্রয়োনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেন।
শুধু মাত্র বন্দরে জেটিতে আসা জাহাজে যাতায়াতকারী শ্রমিক ও বিদেশী নাবিকদের স্বাস্থ্য স্ক্যান করা হয়। কিন্তু বহিঃনোঙ্গরে থাকা জাহাজের নাবিক ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। এক্ষেত্রে রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল সঙ্কট। ফলে বিদেশী নাবিকদের সংস্পর্শে যাওয়া শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ যাতায়াতকারীদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে।
এছাড়াও অহরহ বিভিন্ন প্রয়োজনে চীনাসহ বিভিন্ন দেশের নাবিকরা প্রয়োজনীয় কাজে লোকালয়ের হাট বাজারে আসছে। বিশেষ করে স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চীনা নাগরিকদের হাট-বাজারে যাতায়াতে তেমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এ কারণে স্থানীয়দের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনাভাইরাস আলোচনায় আসায় এখন নামমাত্র নড়েচড়ে বসেছে ডিজি শিপিংয়ের অধীনস্ত স্বাস্থ্য বিভাগ। শুধু মাত্র বন্দর জেটিতে বসানো হয়েছে লেজার ডিটেক্টেট স্কানার।
এ প্রসঙ্গে মংলা পোর্ট হেলথ (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) মেডিকেল অফিসার সুফিয়া খাতন জানান, তাদের কাছে দুটি লেজার ডিটেক্টেট স্ক্যানার রয়েছে। একটি জেটিতে অপরটি জাহাজে পাঠানো হয়। তবে বহিঃনোঙ্গরে আসা জাহাজে স্বাস্থ্য কর্মীরা পৌঁছাতে পারে না। এ দপ্তরে জনবল সঙ্কটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, স্বল্প জনবল নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তাই স্থানীয় শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহারসহ বিদেশী নাবিকদের সংস্পর্শে না যাওয়ার জন্য। তবে এ ভাইরাসের সংক্রামণ ছাড়ানোর ঝুঁকি ও শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় প্রাণঘাতি এ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুকির শংকা প্রকাশ করে সচেতনতার বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।
মংলা বন্দর হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আব্দুল হামিদ জানান, বন্দর হাসপাতাল ও মংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৃথক দুটি আইসিলেটেট রুম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বহন বা আক্রান্ত ব্যক্তিকে যাতে দ্রæত খুলনা মেডেকেল কলেজে স্থানান্তর ও সরিয়ে নেয়া যায় সেই লক্ষ্যে সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি বিভাগের একটি এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। তবে এ সংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রম বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরশেনের আওতাধীন মংলা পোর্ট হেলথ বিভাগ পরিচালনা করছে। তবে বন্দর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই সকল কার্যক্রম তদারকি করছে মাত্র।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দীন জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মানুষের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে, পণ্য থেকে নয়’। তাই প্রাথমিকভাবে এ বন্দরে আসা চীনাসহ বিদেশী নাবিক এবং নাবিকদের সংস্পর্শে যাওয়া শ্রমিক কর্মচারীদের বন্দর জেটিতে স্ক্যান করার ব্যবস্থা আছে। বন্দরের উন্নয়নমুখী ড্রেজিং প্রকল্পে কর্মরত রয়েছে প্রায় অর্ধশত চীনা নাগরিক। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হলে তারা নিজ দেশে পৌঁছাবেন। তাই এ সময়ের মধ্যে তাদের চীনে যাতায়াতের সম্ভবনা খুবই কম।
মংলা কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মাদ সেলিম শেখ জানান, মংলা ইপিজেডে একাধিক চীনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে অসংখ্য চীনা নারী-পুরুষ কর্মরত রয়েছে। তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাগজপত্রের সার্বিক কাজ করে থাকেন দোভাষীরা। তাই কাস্টমসের সঙ্গে চীনা নাগরিকসহ বিদেশী নাবিকদের খুব বেশি সম্পৃক্ততা নেই। তবে বাণিজ্যিক জাহাজ সম‚হে যাতায়াতকারী কাস্টমস পিওসহ নিজেদের স্টাফ ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সতর্কতা প্রস্তুতিসহ নানাভাবে সচেতন করা হচ্ছে।
মংলা ইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার মাহবুবু আহম্মেদ সিদ্দিক জানান, ইপিজেডের অভ্যন্তরে ৮ থেকে ১০টি চীনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে কাজ করছেন অন্তত ৪০ থকে ৪৫ জন চীনা নাগরিক। আর তাদের এ সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে প্রায় সহ¯্রাধিক দেশীয় শ্রমিক। তিনি জানান, এখানে অবস্থানকারী চীনা নাগরিকরা নিজেরাই নিয়মিত তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। তবে নতুন করে তাদের নিজ দেশে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া চীনা প্রতিষ্ঠান সমূহে কর্মরত শ্রমিকরা সচেতনতার সঙ্গে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
ক্যাপশন : মংলা বন্দর জেটিকে করোনা ভাইরাস সতর্ককরণ প্রস্তুতি ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।