পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিম্ন আদালতে কোনো আসামির জামিন আটকে গেলে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতো একটি চক্র। মামলার এজাহার-অভিযোগপত্র এবং আদালতের কাগজপত্র জালিয়াতি করে উচ্চ আদালত থেকে জামিনের ব্যবস্থা করতো তারা। কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে আসামির জামিনের ব্যবস্থা করে দেয়া এ চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেফতারকৃত সবাই কোনো একসময় উচ্চ আদালতে বিভিন্ন উকিলের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। পরে জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন আদালত থেকে অন্তত ৫০ জন আসামির জামিনের ব্যবস্থা করে দেন। গ্রেফতাররা হলো- হারুন-রশিদ ওরফে হারুন, দেলোয়ার হোসেন, এবিএম রায়হান ও শামীম রেজা।
ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ২০১৪ সালে রাজবাড়ী থেকে চরমপন্থি দলের আঞ্চলিক কমান্ডার ইয়ার আলীকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর এ বছরেরই নভেম্বরে মামলার একমাত্র আসামি হিসেবে তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এ মামলায় আসামি ইয়ার আলীকে নিম্ন আদালতে জামিন নাকচ করে দিলে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়। ২০১৭ সালে উকিল মুসরোজ ঝর্ণা সাথির মাধ্যমে একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ইয়ার আলীর ছয় মাসের জামিন দেন। চরমপন্থি দলের আঞ্চলিক কমান্ডারের জামিন পাওয়ার বিষয়টি খটকা লাগলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহম্মেদ রাজবাড়ীর আদালত থেকে মামলার মূল কাগজপত্র তলব করেন। এরপর সেসব কাগজপত্র এবং উচ্চ আদালতের কাগজপত্র মিলিয়ে দেখলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। পরবর্তীতে তিনি এসব কাগজপত্র পেশ করলে আসামির জামিন বাতিলসহ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
তিনি আরো বলেন, জামিন আবেদনে মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র নকল করে পাল্টে ফেলেন চক্রের সদস্যরা। ওই মামলায় আসামি একজন থাকলেও নকল কপিতে দুইজন আসামি দেখানো হয় এবং প্রধান আসামি ইয়ার আলীকে দুই নম্বর আসামি দেখানো হয়। পরে ২০১৬ সালে জামিন আবেদনের আইনজীবী ঝর্ণা সাথি ও তার সহযোগী শাহিনুর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় দুইজনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র দিলে ২০১৭ সালে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠানো হয়। ধারাবাহিক তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ৯ জানুয়ারি উকিল ঝর্ণা সাথির সহযোগী হারুনকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে তার দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ৩ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে চক্রের মূলহোতা দেলোয়ারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন আদালতের বিচারক, আইনজীবীদের বিপুল পরিমাণ নকল সিল ও বিভিন্ন নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
জালিয়াতির প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আসামিদের জামিনের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকায় চুক্তিবদ্ধ হতেন চক্রের সদস্যরা। এ হিসেবে ইয়ার আলীর জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। এরপর মামলার কাগজপত্র পাঠানো হতো রংপুরে চক্রের সদস্যদের কাছে। সেখানে বসে নকল কাগজপত্র তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হতো। এরপর ঢাকায় অবস্থান করা চক্রের সদস্যরা উচ্চ আদালতের উকিলের মাধ্যমে আদালতে জামিন আবেদন করাতেন।
সিআইডির ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি ইতোমধ্যে কাগজপত্র জালিয়াতি করে দেশের বিভিন্ন আদালত থেকে অন্তত ৫০ জন আসামির জামিনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গ্রেফতার সবাই বিভিন্ন সময় উচ্চ আদালতে বিভিন্ন আইনজীবীর সহকারী ছিলেন। এর সঙ্গে জড়িত আরও ৫ থেকে ৬জনের নাম আমরা পেয়েছি। খুব শিগগির তাদেরও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। আসামি ঝর্ণা সাথি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন এবং চরমপন্থি নেতা ইয়ার আলী ওই মামলায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে জেলে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।