পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের মতোই অচল চট্টগ্রামের বিশাল এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য। মালামাল পরিবহনেও চলছে স্থবিরতা। নিত্য যানজটে দিনে রাতে অচল আশপাশের প্রায় সবকটি সড়ক। দীর্ঘ চার বছরেও মাত্র ২.৩৮ কিলোমিটার এই সড়কটি সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। নগরীর বৃহত্তর আগ্রাবাদ, হালিশহর ও আশপাশের লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগের শেষ হবে কবে তাও অনিশ্চিত। ব্যবসা-বাণিজ্য আর পণ্য পরিবহনের অপার সম্ভাবনার এই সড়কটি লাখো মানুষের কাছে এখনো দুঃস্বপ্ন।
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার সাথে পোর্ট কানেকটিং রোড হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ ঘটেছে এই সড়কটির মাধ্যমে। চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রীক আমদানি-রফতানি মালামাল পরিবহনও হয় এই সড়ক হয়ে। বছরে পর বছর সড়কটি অচল থাকায় মালামাল পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে ওই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য। বিকল্প পথে ভারী যানবাহন চলাচল করায় নগরীর অন্য এলাকায়ও তীব্র যানজট হচ্ছে। অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে জোয়ার আর খোঁড়াখুঁড়ির দুর্ভোগে অনেকে ওই এলাকা থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে পানিবদ্ধতার কবল থেকে সড়ক উঁচু করার কাজ শুরু হলেও এই এলাকার দুঃখ হিসাবে পরিচিত মহেষখালের সংস্কারে ধীরগতিতে এলাকায় এখনও জোয়ারের পানি উঠছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এর দায় এড়াতে পারে না চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ। পানিবদ্ধতা নিরসণে সিডিএর উদ্যোগে নগরীতে চলমান ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে অগ্রগতি মাত্র ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৭শ’ কোটি টাকার প্রকল্প নিলেও কাজই এখনও শুরু হয়নি। ফলে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড ও পোর্ট কানেকটিং রোড সংস্কার হলেও তা কতটুকু টেকসহ হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
মহানগরীর মূল অংশের সাথে হালিশহর ও আশপাশের এলাকার সহজ যোগাযোগের জন্য ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সিটি মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর উদ্যোগে এই সড়কটি নির্মাণ করা হয়। চার লেনের এই সড়কটি নির্মাণের পর নগরীর আগ্রাবাদ বেপারিপাড়া, মুহুরিপাড়া, রঙ্গিপাড়া, শান্তিবাগ, গুলবাগ, বড়পুল, ছোটপুল থেকে শুরু করে বৃহত্তর হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়। এসব এলাকায় শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে উঠে বহু আবাসিক এলাকা, বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, শপিংমল, মার্কেট। বিশেষ করে সড়কটির দুপাশে বড় বড় শোরুম, কনভেনশান সেন্টার, হাসপাতাল, ক্লিনিক ছাড়াও বিভিন্ন রকমের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে।
সড়কটি নির্মাণের কয়েক বছর পর থেকে সড়কের দুপাশে জোয়ারের পানি উঠতে থাকে। গত কয়েক বছরে তা রের্কড ছাড়িয়ে যায়। দিনে রাতে দুই বার নিয়মিত জোয়ারের পানিতে ভাসে ওই সড়ক সহ আশপাশের এলাকা। জোয়ারের পানি থকে রক্ষায় সড়কটির উচ্চতা বাড়িয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিগত ২০১৭ সালে কাজ শুরু হয়। জাইকার অর্থায়নে সরকারের এলজিইডি দপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। আর কাজের সমন্বয় করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বিগত ২০১৮সালের ১৯ মে। এখনও তা শেষ হয়নি।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের একপাশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশে এখনও কাজ চলছে। একপাশে যানবাহন চলাচলের কারণে যানজট আর জটলা স্থায়ীরূপ নিয়েছে। সড়কে বড় বড় খানাখন্দে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। যানবাহনের চাকায় উড়ছে ধুলা বালু। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, জোয়ার আর খোঁড়াখুঁড়ি মিলিয়ে প্রায় অর্ধযুগ এই সড়কে অচলাবস্থা চলছে। এই দীর্ঘসময়ে ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে ক্রেতারা ওই সড়ক এড়িয়ে চলছেন।
চিটাগাং চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের সংস্কার চার বছরেও শেষ না হওয়া দুঃখজনক। সড়কটি ছোট হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওই সড়কে দুই পাশে শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লোকশানের মুখে পড়েছে। নগরীর মূল অংশ বিশেষ করে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার সাথে বৃহত্তর হালিশহর ও পাহাড়তলীর সহজ যোগাযোগের এই সড়কটি অচল থাকায় নগরীর সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) তারেক আহমেদ বলেন, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড এবং একই সাথে পিসি রোড অচল থাকায় নগরীর পাহাড়তলী, দেওয়ান হাট, কদমতলী হয়ে পণ্যবাহী যানবাহন বন্দরের সদরঘাট ও মাঝির ঘাট এলাকায় যাতায়েত করছে। যানজট কমাতে বন্দর এলাকা ছাড়া নগরীর অন্য সড়কে দিনের বেলায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু মালামাল পরিবহন সচল রাখতে বিকল্প পথে যানবাহন চলাচল করায় নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় যানজট হচ্ছে। কিছু যানবাহন পাহাড়তলী, আমবাগান ও টাইগারপাস হয়ে নগরীতে প্রবেশ করে। এই কারণে ওই এলাকায়ও যানজট নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের প্রকল্প ম্যানেজার সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েল অ্যাসোসিয়েটস ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৮৫ ভাগ কাজ শেষ করেছে। তবে প্রকল্পে ছিলো না এমন একটি কালভার্ট হঠাৎ ভেঙ্গে যাওয়ায় সেটি নতুন করে নির্মাণ করতে সময় কিছুটা বেশি লেগে যাচ্ছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে সর্বশেষ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার সময় দেওয়া হয়েছিলো জানিয়ে তিনি বলেন, তারা এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী মার্চের শেষ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এসময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।