পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ২০২১ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর পূর্বাচলে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন। আগারগাঁও থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা স্থায়ীভাবে পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেখানে বাণিজ্য মেলার নিজস্ব কমপ্লেক্স করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে বলেছেন, আগামী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হবে পূর্বাচলের নিজস্ব কমপ্লেক্সে। সেটা নতুন জায়গা। প্রথম দিকে একটু সমস্যা হবে।
তিনি বলেন, তবে সেখানে যাতে লোকজন যেতে পারে, সে বিষয়ে সবরকম ব্যবস্থা আমরা নেব। সেখানে আন্তর্জাতিক মানের একটা সেন্টার করা হয়েছে। আমরা সবরকমভাবে চেষ্টা করব, আগামী বছর শিফট করার জন্য। গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সময় আরও দুদিন বাড়ানো হয়েছে। এই হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে মেলা। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে বাণিজ্য মেলা আরও দু’দিন বাড়ানো হয়েছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন। এবার বাণিজ্য মেলা ১০ ও ৩১ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি বন্ধ ছিল। ব্যবসায়ীরা দাবি করে আসছেন, বাণিজ্য মেলার সময় বাড়ানোর জন্য। এর আগেও চারদিন বাড়ানো হয়েছিল মেলায় সময়। সে হিসেবে ৪ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে দুদিন সময় বাড়ানোর পর এখন আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে।
শেষ সময়ে মেলায় নানা পণ্যে ছাড় আর লোভনীয় অফার দিচ্ছে স্টল বা প্যাভিলিয়নগুলো। আর এসব লুফে নিচ্ছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। প্রতিটি স্টলেই ক্রেতার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তবে মেলার সৌন্দর্য্য মলিন করছেন ভ্রাম্যমাণ হকারেরা। শেষ মুহূর্তে অস্বাভাবিক বেড়েছে ভ্রাম্যমাণ হকারের দৌরাত্ম্য। বেড়েছে ভিক্ষুকদের আনাগোনাও। গতকাল সরেজমিনে মেলার ভেতরের প্রায় প্রতিটি রাস্তায় দেখা মিলছে হকারের। পণ্যের পসরা সাজিয়ে অবাধে বিক্রি করছেন হরেক রকমের পণ্য। তবে আন্তর্জাতিক মেলা হওয়ায় এখানে হকার-ভিক্ষুকের প্রবেশে দেশের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। অন্যদিকে মেলা কর্তৃপক্ষও হকার প্রবেশ বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ হকাররা যেনো ভ্রুক্ষেপই করছেন না।
দেখা যায়, মেলার ভিআইপ গেট সংলগ্ন ফুড জোন ও শিশুপার্কের আশেপাশ, চন্দ্রিমা উদ্যোনের কোলঘেঁষে বেশি চোখে পড়েছে হকার। রয়েছে মেইন ফটকের আশপাশে কিংবা স্টল বা প্যাভিলিয়নের সামনের ফাঁকা রাস্তায়। পাশাপাশি ভিক্ষুকদের কারণে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। অনেকে এমন পরিস্থিতিতে পড়ছেন। হকার ও ভিক্ষুকের এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ বেশিরভাগ ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। তাদের মতে, মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মেলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের সুযোগ থাকে। মেলার সঙ্গে দেশের সম্মান জড়িত, হকারের অবাধ প্রবেশ দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে না। বিদেশি অনেক দর্শনার্থীরা প্রতিদিন আসছেন এখানে। এ অবস্থার হকার-ভিক্ষুকের উপস্থিতি সম্মানের না।
মেলা বাস্তবায়ন কমিটি বলছেন, মেলাকে সফল করার জন্য মেলা কমিটি প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থানে আছে, শেষ দিন পর্যন্ত থাকবে। হকার প্রবেশ বন্ধ করতে প্রয়োজনে আরও কঠোর হবো।
এ বিষয়ে মেলা বাস্তবায়ন কিমিটির সচিব আব্দুর রউফ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। মেলার পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। দর্শনার্থী সেজে হয়তো অনেকেই (হকার) মেলায় প্রবেশ করছে। তবে যারা প্রবেশ করছে বা তাদের প্রবেশে কেউ যদি উৎসাহ দেয়, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে এটা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা, এখানে দেশি-বিদেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীর মিলনমেলা।
উল্লেখ্য, বরাবরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি শুরু হয় ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মাসব্যাপী এ বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। টিকিটের দাম এ বছর প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এবারের মেলায় মোট স্টল/প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১২৮টি এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টলের সংখ্যা ২৪৩টি। এর মধ্যে বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়ার স্টলের সংখ্যা ১৭টি। মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি ও তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।