পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাসব্যাপী বাঙালী জাতী ও সংস্কৃতির গোড়ায় মিশে থাকা প্রাণের আয়োজন অমর একুশে গ্রন্থমেলা আজ থেকে শুরু হচ্ছে। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমি ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সূচনা ঘটবে ইতিহাসের এই বড় আয়োজনের। লাখো বইপ্রেমিকে বরণ করতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনের কাছাকাছি সময়ে এসে ছোটবড় স্টল সাজাতে ব্যস্ত বিক্রেতা ও প্রকাশকরা।
গতকাল বাংলা একাডেমি ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা যায় বইমেলার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। অধিকাংশ স্টলের সাজসজ্জার কাজ শেষ। কেউ কেউ স্টলে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত নতুন বই ও গত বছরের বই সাজাতে ব্যস্ত। লোহা আর হাতুড়ির শব্দে কর্মমুখর একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত। আয়োজনের মহাযাজ্ঞে কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সবাই। এরই মধ্যে প্রস্তুতির ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তবে মেলা শুরুর দু’একদিন পরও বাকি স্টলগুলো সাজানোর কাজ চলতে পারে বলে জানা গেছে।
২০২০ মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বই মেলা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। সে জন্য এবার স্টল ও প্যাভিলিয়নের সাজ-সজ্জায় আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। মেলার উদ্যান অংশে বাঁশ, কাঠ আর বাহারি রংয়ের কৌটায় আকর্শনীয় আকৃতি গড়ে উঠছে। বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবারের বইমেলা তার নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক যেন বইমেলার বিভিন্ন অঙ্গসজ্জায় ফুটে ওঠে সেভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রখ্যাত স্থপতি এনামুল কবির নির্ঝর সেই পরিকল্পনাটি করেছেন। বইমেলায় শিখর, সংগ্রাম, মুক্তি ও অর্জন- এ চার ধাপে ফুটে উঠবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী। সাহিত্যপ্রেমীদের মনের খোরাক জোগানোর পাশাপাশি মেলা শ্রমজীবী মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থাও করেছে। তাইতো শেষ মূহুর্তে কাঠমিস্ত্রি রমজান আলী, এনাম, মুহসীনরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রূপায়ন করছেন স্বপ্নের।
এবারের বইমেলায় ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩ ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৯ ইউনিট ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৪ ইউনিটের স্টল ও ৩৪টি প্যাভিলিয়ান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমিতে ৮৬টি ও উদ্যানে ২০৬টিসহ এক ইউনিটের ২৯৪টি স্টল, বাংলা একাডেমিতে ৬০টি ও উদ্যানে ২৩০টিসহ দুই ইউনিটের ২৯০টি স্টল, বাংলা একাডেমিতে ২১টি ও উদ্যানে ১৫৬টিসহ তিন ইউনিটের ১৭৭টি স্টল এবং বাংলা একাডেমিতে ১২টি ও উদ্যানে ১০০টিসহ চার ইউনিটের ১১২টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি নির্বাচনের ভোট থাকায় আজ ২ ফেব্রুয়ারি বইমেলা উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনার মেলা উদ্বোধনের পর তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এদিকে বিগত বছরের চেয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে মেলার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এ কারণ জানতে চাইলে আয়োজকরা জানান, আগের চেয়ে স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। তাই মেলার জায়গাও বাড়াতে হয়েছে। মেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে মেলা কমিটি ২০২০ এর সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, রোববার বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এদিকে এবার মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরোপ করা হয়েছে কড়াকড়ি। মেলার ৬টি প্রবেশ ও বাহির পথে পর্যাপ্ত সংখ্যাক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে বাংলা দেশে পুলিশ র্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের নিরাপত্তাকর্মীরা। নিñিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা ও এর আশেপাশের এলাকাজুড়ে ৩ শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার (সিসি) ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও পুরো এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। আজ উদ্বোধন হয়ে গ্রন্থমেলা ২৯শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।