Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ইভিএমে ভোট নিয়ে সুজনের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ নিয়ে বেসরকারি সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) দুটি সুনির্দিষ্ট শঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে। এছাড়া নাগরিকদের প্রতি ভোটকেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ‘উপযুক্ত’ প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে ‘বিতর্কিত নির্বাচন’-এর সংস্কৃতি থেকে উত্তরণের আহŸান জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিওবার্তায় সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন।

ভিডিওবার্তায় সুজন সম্পাদক বলেন, ১ ফেব্রæয়ারি আমাদের দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে আগামী পাঁচ বছর নাগরিকদের স্বার্থে ও কল্যাণে এই দুটি প্রতিষ্ঠান কারা পরিচালনা করবে সেটা নির্ধারিত হবে। তাই এখানে নাগরিক হিসেবে আমাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই নির্বাচনের সঙ্গে নাগরিকের সুখ-সাচ্ছন্দ, নাগরিকের অধিকার সম্পৃক্ত।

ইভিএম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি জানি ভোট নিয়ে অনেকের মনে অনেক অস্বস্তি আছে, শঙ্কা আছে। একটা উদ্বেগের কারণ হলো, নির্বাচন কমিশনের অতীতের ভ‚মিকা। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আমাদের জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভ‚মিকা ছিল পক্ষপাতদুষ্ট। এর সঙ্গে আরেকটি সমস্যা হলো, সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হবে। ইভিএমের কিছু দুর্বলতা রয়েছে। একটি দুর্বলতা হলো, ভোটার ভেরিফাইয়েবল পেপার লোডেড ট্রেইল নেই। যেটা ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেখানকার ইভিএমে সংযুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি কাকে ভোট দিলেন সেটা নির্ধারণ করা যায় এবং একই সঙ্গে ভোটের শেষে ভোট নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ভোট পুনর্গণনা করা যায়। বর্তমানে যে ইভিএম আমরা ব্যবহার করছি সেই ইভিএমে নির্বাচন কমিশন যা বলবে তাই আমাদের গ্রহণ করতে হবে।

ইভিএমের দ্বিতীয় দুর্বলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরেকটি দুর্বলতা হলো, আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ভোটারদের শনাক্ত করা হয়। অনেকের আঙুলের ছাপ ইভিএম পড়তে পারে না। তাই কর্মকর্তাদের এই ইভিএমকে ওভাররাইট করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তার মানে ভোটারের পরিচিতি যদি নির্বাচনি কর্মকর্তা আপলোড করতে পারে, ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রার্থী অনুপস্থিত থাকলে নির্বাচনি কর্মকর্তা তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। এটা একটা ভয়াবহ বিষয়। ইভিএমের দুর্বলতা নিয়ে আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, গত নির্বাচনে যে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে তাতে ত্রæটি ছিল। কী ত্রæটি ছিল তিনি তা বলেননি। এই ত্রæটি দূর করার জন্য আসন্ন সিটি নির্বাচনে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তাও তিনি আমাদের জানাননি। তার একটা ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, ইভিএম হচ্ছে একটা যন্ত্র, আমার-আপনার ফোনের মতোই। আমরা এই যন্ত্রকে যে নির্দেশ দেবো সেই কমান্ড অনুযায়ী এটা কাজ করবে। ইভিএমের কমান্ডে থাকবে আমাদের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যের কোঠায়।

নির্বাচন কমিশনের নির্বিকার আচরণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, অনেক আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু কমিশন নির্বিকার ছিল। কিন্তু নাগরিকদের নির্বিকার করার সুযোগ নেই। দেশের মালিক হিসেবে নাগরিকের দায়িত্ব ভোটাধিকার প্রয়োগ করা। কারণ ভোটাধিকার হলো নাগরিকের মালিকানার প্রতীক। সাবধান থাকতে হবে সেসব ব্যক্তিদের কাছ থেকে যারা হতাশ, নিরাশ, নির্বিকার। কারণ যুগে যুগে হত্যা বিশ্বাসঘাতকতা টিকে আছে এই নির্বিকার ব্যক্তিদের কারণে। তাই নাগরিকদের নির্বিকার হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। আসন্ন নির্বাচনে আমাদের সোচ্চার হওয়ার একটাই পন্থা, সেটা হলো ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এ সময় দলমত নির্বিশেষে সঠিক এবং উপযুক্ত ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার আহŸান জানান তিনি। তিনি সবার উদ্দেশে বলেন, শতরকম আশঙ্কা, বিপত্তি থাকলেও আপনারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হোন। এর মাধ্যমে আমরা পাতানো নির্বাচনের সংস্কৃতি, বিতর্কিত নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারবো।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি নির্বাচন

১৭ জানুয়ারি, ২০২২
১৭ জানুয়ারি, ২০২২
১২ জানুয়ারি, ২০২২
২২ জানুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ