Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাংলাদেশি কর্মচারীদের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ

দূতাবাসগুলো আইন ভঙ্গ করেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

দূতাবাসের বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ বানিয়ে বিদেশি মিশনগুলো আইন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ অবস্থায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনুমতি পাওয়া দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তাদের ভোট কেন্দ্রে না পাঠানোর আহবান জানিয়েছেন মন্ত্রী। গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ বিষয়ক এক বৈঠক শেষে মন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, যদিও পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে। তারপরও এখানে মিশনগুলোর দায়-দায়িত্ব রয়েছে। তারা বাংলাদেশের আইন জানেন। সরকারের তরফেও তাদের বিদ্যমান আইনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং এখন তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। তারা তাদের যেসব বাংলাদেশি কর্মচারীকে ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ বানিয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই সেন্টারে পাঠানো উচিত হবে না।
বাংলাদেশে থাকা ক‚টনীতিকদের সর্বাবস্থায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং দায়বদ্ধতা থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দূতাবাসগুলোর পর্যবেক্ষণ টিমে থাকা ৪৬ বিদেশির সঙ্গে তাদের সহায়ক হিসাবে ২৮ জন বাংলাদেশির (প্রত্যেকের) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কার্ড ইস্যু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই সময়ে তাদের থামানো যায় কি-না? এমন প্রশ্নেও আসে। তবে সব প্রশ্নকে ছাড়িয়ে যে বিষয়টি প্রধান্য পায় তা হলোÑ আইনী বাধা সত্তে¡ও বাংলাদেশিদের কীভাবে ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ হিসাবে নিয়োগ হলো? জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটি আমি জানি না। তবে আমরা মনে করি এখানে যেসব বিদেশি সংস্থা বা দূতাবাস আছে তারা তাদের কোড অফ কনডাক্ট জানে। আইন মতে, আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক যারা হন তারা কেউ বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারেন না। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষককে অবশ্যই অ-বাংলাদেশি হতে হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখানে বিদেশি দূতাবাসগুলো তাদের বাংলাদেশি কর্মচারীদের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে। এতে আইন ভঙ্গ হয়েছে। আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হওয়ার শর্ত অবশ্যই ‘বিদেশি নাগরিক’ হতে হবে- এমনটা পূনর্ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, দূতাবাসগুলো বিদেশি নাগরিককে এনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বানাক, এতে কারও কোন আপত্তি নেই। অথবা বাংলাদেশিদের তারা ‘আভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক’ বলুক, এতেও কোনো সমস্যা নেই। দূতাবাস প্রতিনিধি বা রাষ্ট্রদূতরা বড় রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সঙ্গে আলাপেও কোন বাধা নেই। কিন্তু তারা কোন অবস্থাতেই আমাদের সিস্টেম, আইন এবং নিয়ম-নীতিমালা ভঙ্গ করতে পারে না।

জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ ১ হাজার ৮৭ জন দুই সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এদের মধ্যে ২২টি দেশি সংস্থার মাধ্যমে ১ হাজার ১৩ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক রয়েছেন।
অন্যদিকে ১০ দূতাবাসের মাধ্যমে ৭৪ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এদের মধ্যে ৪৬ জন সরাসরি বিদেশি নাগরিক এবং ২৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। এই ২৮ জন বাংলাদেশি ১০টি দেশের দ‚তাবাসে বিভিন্ন পদে কর্মরত।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, ১০টি দ‚তাবাসের মধ্যে ইউএস দূতাবাসের মাধ্যমে ২৭ জন পর্যবেক্ষক দুই সিটি নির্বাচন পরিদর্শন করবেন। এ ২৭ জনের মধ্যে ১৮ জন বিদেশি এবং ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। এ ছাড়াও ব্রিটেনের দূতাবাসের মাধ্যমে ১২ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন বিদেশি নাগরিক এবং সাতজন বাংলাদেশি কর্মকর্তা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচজন পর্যবেক্ষকের সবাই ইউরোপের নাগরিক। নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের রয়েছেন ৬ জন, এদের মধ্যে ৫ জন বিদেশি। সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ৬ জন পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন বিদেশি নাগরিক। জাপান দূতাবাসের মাধ্যমে পাঁচজন, যাদের মধ্যে তিনজন বিদেশি নাগরিক, ডেনমার্ক দূতাবাসের মাধ্যমে তিনজন, যাদের দুইজন বিদেশি নাগরিক, নরওয়ে দূতাবাসের চারজন, এদের মধ্যে আরও দুইজন বিদেশি, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন থেকে দুইজন বিদেশি নাগরিক, কানাডা হাইকমিশন থেকে চারজন, এদের মধ্যে দুইজন কানাডিয়ান নাগরিক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি নির্বাচন

১৭ জানুয়ারি, ২০২২
১৭ জানুয়ারি, ২০২২
১২ জানুয়ারি, ২০২২
২২ জানুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ