বাংলাদেশের জনজীবন ও অর্থনীতিতে ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার ওপর নির্মিত ভারতের ফারাক্কা বাঁধের প্রতিক্রিয়া যেমন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
মীর আব্দুল আলীম
এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকা- নিয়ে দেশবাসীকে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কয়েকজন আসামি গ্রেফতার হলেও গডফাদাররা রহস্যের জালে আটেকে আছে এখনও। মিতুর স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তার চাকরি থেকে ইস্তেফা নেয়ার গুঞ্জন নানা প্রশ্নর জন্ম দিচ্ছে। পত্রিকাগুলোতে বাবুল আক্তারকে রক্ষা করতে পুলিশের এমন আচরন বলে মন্তব্য করছে। আবার কেউ কেউ বলছেন বাবুল আক্তারকে ফাঁসাতেই এমনটা করা হচ্ছে। কেন এত লোকচুরি? পুলিশ প্রশাসন এসপি বাবুল আক্তাকে তার স্বপদ থেকে সরিয়ে দিতেই-বা চাইছে কেন? পুলিশবাহিনীর ভাবমর্যাদা অক্ষুণœ থাকে এ জন্য? বাবুল আক্তার যদি খুনের সাথে জড়িতই থাকেন তাহলে তাকে রক্ষা কিসের স্বার্থে রক্ষা করতে হবে? নাকি এসপি বাবুল আক্তারকে অন্য কোনো স্বার্থের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে। বাবুল আক্তারের শ্বশুরতো বলছেন তার মেয়ে মিতুর সাথে বাবুল আক্তারের বেশ বনিবনা ছিল। কখনই দাম্পত্য কলহ ছিল না। তাহলে বিষটি কী দাঁড়ায়? বাবুল আক্তার দোষী না নিরপরাধী? এর কোনটাই দেশবাসী বুঝতে পারছে না। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের আচরণ নানা রহস্যের জন্ম দিচ্ছে। আমরা চাই মিতু হত্যার প্রকৃত সত্য এখনই আলোর মুখ দেখুক। একজন পুলিশ অফিসার তার স্ত্রীকে হারিয়েছেন। তার দুসন্তান আজ বড়ই অসহায়। এমন অবস্থায় বাবুল আক্তার মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন এটাই স্বাভাবিক। তিনি যদি অপরাধী না হন তাকে নিয়ে টানা হেঁচড়া আর চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়ার বিষয়টি তার জন্য অনেক বেদনার হতে। সহসাই এ রহস্যের জাল ভেদ করে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান চায় দেশবাসী। এতে করে এ বিয়য়ে বিতর্কে থাকা বাহিনীও উপকৃত হবে। আর যত দ্রুত সব তথ্য সামনে আসবে, ততই গুঞ্জন ও গুজবের ডালপালা কাটা পড়বে।
সব কিছুই যেন কেমন রহস্য ঘেরা। বাবুল আক্তার যে বাসায় থাকেন তার শ্বশুরবাড়ি সেখানে পুলিশ প্রহরা ছিল। বাসার কাউকে না বলেই বাসার সামনে থেকে হঠাৎ করে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া সম্পর্কে বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, বাসায় কোনো মেহমান এলে স্বাভাবিকভাবে যাওয়ার সময় বাসার লোকজনকে বলে যায়। ঘটনার পর আমাদের বাসার সামনে পুলিশের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু আবার তারা কাউকে কিছু না বলেই চলে গেছে। তবে শুনেছি, বাসার সামনের সড়কে সাদা পোশাকে পুলিশ নজর রাখছে। একে একে ধরা পড়ছে হত্যাকা-ে অংশ নেয়া খুনিরা। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও। হত্যাকা-ে শুধু মোটরসাইকেল আরোহী ওই তিনজনই নয়, আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত। পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার রহস্যের জট খুলতে শুরু করলেও সংশ্লিষ্টদের রহস্য ঘেরা আচরণে নানা প্রশ্ন জন্ম দিচ্ছে। শুরু থেকে হত্যার সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা বলা হলেও গেস্খফতারকৃতদের কাছ থেকে এ ধরনের কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ।
পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার চাকরি ছেড়েছেন; তিনি বিদেশে চলে যেতে পারেনÑএমন খবর এখন চাউড় হচ্ছে। এই খবরে নতুন করে অনেক প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে জনমনে। কারণ মাহমুদা খানম মিতু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতার নাম এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। এছাড়া এসপি বাবুলকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি নিয়েও ধোঁয়াশা কাটেনি এখন পর্যন্ত। বিষয়টিকে আরও ঘনীভূত করেছে বাবুল আক্তারের স্বেচ্ছায় গৃহবন্দিত্ব। তিনি অফিসও করছেন না, আবার শ্বশুরবাড়ি থেকেও বেরুচ্ছেন না। কী হচ্ছে এসব বুঝে উঠতে পারছে না দেশবাসী। গত ২৪ জুন রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে এসপি বাবুলকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে। সেখানে তাকে দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই সময় সেখানে উপস্থিত একাধিক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মিতু হত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়। এ কারণে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে শাস্তি হিসেবে সাময়িক বরখাস্তের কথা বলেন। তখন বাবুল আক্তার স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার প্রস্তাব দেন। পত্রিকার সংবাদে জানা যায়, বাবুল আক্তারকে স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার সুযোগ দেওয়ার পেছনে পুলিশের কয়েকটি যুক্তি কাজ করেছে। পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে পুরো পুলিশ বাহিনীতে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এ বিষয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাবুল আক্তার পুলিশ বিভাগে একজন ‘আইকন’। তাই তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা খুবই সতর্ক। এছাড়া মিতুর দুই শিশুসন্তানের দেখভালের বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হয়। কারণ মায়ের মৃত্যুর পর এখন দুই সন্তান সার্বক্ষণিক বাবা বাবুল আক্তারের কাছে আছে। তিনি কোনোভাবে শাস্তির আওতায় এলে সন্তান দুটির ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পত্রিকায় দেখেছি, ডিবি কার্যালয়ের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাবুল আক্তার চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। পরে পুলিশ তাকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেয়। আর সেদিনই তার জন্য দেওয়া পুলিশি পাহারা প্রত্যাহার করা হয়। এসব কথা কতটা সত্য? সত্য হলে বাবুল আক্তারকে রক্ষা করার কতটা যৌক্তিক? আর যদি সত্য না হয়? স্ত্রীর হারা একজন স্বামী এতিম সন্তানদের নিয়ে কতটা কষ্টে থাকতে পারেন তা সহজেই অনুমেয়। ববুল আক্তার যদি ষড়যন্ত্রের শিকার হন এটা তার জন্যে অনেক কষ্টের বটে। তাই রহস্য উদ্ঘাটন করে সব প্রশ্নে জবাব দেয়া খুবই জরুরি।
চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের পতœী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় কারা কারা অংশ নিয়েছে, কে প্রথমে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা মেরে মিতুকে ফেলে দিয়েছে, কে ছুরিকাঘাত করেছে এবং সর্বশেষ কে শ্যুট করে তাকে হত্যা করেছে সবই উদ্ঘাটিত হয়েছে। কিন্তু অনুদ্ঘাটিত রয়েছে এ হত্যাকা-ের নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা রয়েছে এবং কেনইবা একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার পর্দানসীন পতœীকে প্রকাশ্য দিবালোকে এভাবে নৃশংস কায়দায় হত্যা করা হলো। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া দুই সদস্য গ্রেফতার এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের পরও গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খাচ্ছে ফিল্মি স্টাইলের মতো এ হত্যাকা- নিয়ে। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া প্রায় সকলেই ধরা পড়েছে। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়েছে হত্যাকা-ে অংশ নেয়া দু’জনকে। অবশিষ্ট ছয়জন পুলিশ হেফাজতেই রয়েছে বলে কোনো কোনো গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু আটক বা গ্রেফতার কোনকিছু স্বীকার করছে না পুলিশ। এ ঘটনা নিয়ে কেন এত লুকোছাপা তা নিয়ে তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া অন্যরা এবং এর পাশাপাশি উৎসুক মহল নানা বিভ্রান্তির গ্যাঁড়াকলে নিপতিত হয়ে আছে।
মাহমুদা আক্তার মিতু এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রীর খুনিচক্রকে চিহ্নিত করে এরইমধ্যে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও কে এই খুনের মূল নির্দেশদাতা তা নিয়ে পুলিশ এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। বরং গ্রেফতারকৃত খুনিদের দেয়া নানামুখী তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে কখনো কখনো তারা স্পর্শকাতর এ তদন্তের খেই হারিয়ে ফেলছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এসপি বাবুল আক্তারকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যা নিয়ে দেশজুড়ে নানা বিভ্রান্তির পাশাপাশি খোদ পুলিশ প্রশাসনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রেফতারকৃত খুনিদের মধ্যে দুজন এসপি বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ঠ সোর্স হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্যকর এ খুনের ঘটনায় সন্দেহের তীর তার দিকে ছুটে যায়। তদন্তে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকা-কে পুঁজি করে স্বার্থান্বেষী একটি মহল তৎপর হয়ে ওঠে। তারা নানা অপকৌশলে এর তদন্তের ধারা ভিন্ন খাতে প্রভাবের চেষ্টা চালায়। এমনকি এ নিয়ে রাজনৈতিক কূটচাল চালানোর অপচেষ্টাও চালানো হয়। কেউ কেউ তাদের ব্যক্তিগত শত্রুতাকেও এ খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ফন্দি আঁটে। এতে মামলার তদন্ত বারবার হোঁচট খেয়েছে। এছাড়াও এসপি বাবুলের ঘনিষ্ঠ সোর্স ওয়াসিম ও আনোয়ার এ হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নেয়ায় গোটা বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে তালগোল পাকিয়ে যায়।
সব হত্যারই ন্যাচারাল একটি বিচার আছে। মিতু হত্যার বিচার নিয়ে এখনো আমরা হতাশ নই। প্রকৃত খুনিরা ধরা পড়বে। তাদের বিচার হবেই। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এছাড়া নিরপরাধ কাউকে যেন হয়রানি বা গ্রেফতার করা না হয়, কোনো আসামিকে ক্রসফায়ারে দেয়া না হয় এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাই। মূল গডফাদার কে তা দ্বিতীয় ব্যক্তি জানে না। দ্বিতীয় ব্যক্তির পরিচয় জানে না কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী সন্ত্রাসীরা। এছাড়া কেন তাকে এভাবে হত্যা করা হলো তাও রহস্যের বেড়াজালে আটকা আছে। তবে সিএমপি সূত্রে বলা হয়েছে, সহসা আরও কয়েকজন কিলিং মিশনের সদস্যকে তারা আটক করতে সক্ষম হবেন। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সব আসামি পুলিশের আওতায় চলে এলে তদন্ত কার্যক্রম যেমন শেষ হবে, তেমনি অপরদিকে হত্যার রহস্যও উদ্ঘাটিত হবে। কিন্তু পুলিশী কার্যক্রম নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, ঘটনার ধারাবাহিকতা তা বলছে না। সিসিটিভির ফুটেজে মোটরসাইকেলযোগে আসা তিন কিলার ধরা পড়েছে। পাশাপাশি আরও যে পাঁচজন রেকিতে ছিল তারাও পুলিশের আওতায় এসেছে। এদের কাছ থেকে হত্যাকা- এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কে তা কি কিলার গ্রুপের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়নি? অবশ্যই পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং তা বিভিন্নভাবে ইতোমধ্যে চাউরও হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়ায় ইনিয়ে-বিনিয়ে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার তদন্তের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা এবং মনিটরিংয়ের কাজে জড়িতরা এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
স্ত্রী হত্যার মতো অপরাধের সঙ্গে বাবুল আক্তার জড়িত থাকলে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সমস্যা থাকার কথা নয়। আইন শুধু নিরীহ জনগণের জন্য নয়? পুুলিশের এসপি বাবুল আক্তার স্ত্রী হত্যার সাথে জড়িত থাকলে তাকে রক্ষা করা মোটেও সমীচীন হবে না। আর তিনি যদি নির্দোষ হন তাহলে তাকে নিয়ে আর অহেতুক টানাহেঁচড়া করে যাতনা দেওয়াও ঠিক না। আমরা চাই, মিতু হত্যা নিয়ে সকল নাটকীয়তা বন্ধ হউক। এ হত্যার মূল রহস্য উন্মোচন হউক। অপরাধী যেই হউক তার যেন বিচার হয়, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
হবংিংঃড়ৎব১৩@মসধরষ.পড়স
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।