পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ইসলামী চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটছে। পীর-মাশায়েখ অধ্যাত্মিক ব্যক্তিদের দোয়া ও মেহনতের মাধ্যমেই এদেশে ইসলাম এসেছে। কোনো ষড়যন্ত্রে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের ৯৬ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। এ কারণে মাদরাসা শিক্ষার দিকে মানুষ দিনদিন বেশি ঝুঁকছে। মাদরাসা শিক্ষায় ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ইসলামপুর দরবার শরিফের ৭৬তম ইছালে ছাওয়াব মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জ্ঞানহীন ধর্ম উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে। কিন্তু আলেমসমাজ এদেশের উন্নয়নে মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলছে। আলেমগণ ওয়াজ-নসিয়তের মাধ্যমে মানুষকে সু-পথে পরিচালনা করছে। কাজীগণ পারিবারিক বন্ধন সৃষ্টি করে সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখছে। দেশের ওলামা-মাশায়েখ আলোকিত মানুষ তৈরি করছে বলেই সমাজ দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এ এম এম বাহাউদ্দীন আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাবিক সহযোগিতায় সারাদেশে মাদরাসা শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। মাদরাসায় লেখাপড়া করে কেউ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়ে না। মাদরাসা থেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সরকারি চাকরীতে যোগদানে এখন আর কোন সমস্যা নেই। দু’ এক জায়গায় যে সমস্যা রয়েছে তা সহসাই কেটে যাচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে অপপ্রচারের সুযোগ নেই। বাংলাদেশে আলিয়া ও কওমি মাদরাসায় ৭০ লাখ ছাত্র-ছাত্রী পড়ছে। তাদের মধ্যে ৩০ লাখ নারী। তারা মাদরাসায় পড়ে জ্ঞানী হচ্ছে, কম্পিউটার চালনায় পারদর্শী হচ্ছে। ইসলামপুর শাহ্ ইয়াছিন (রহ.) ফাজিল মাদরাসা ময়দানে বৃহস্পতিবার মাহফিলের ১ম দিনে ওয়াজ করেন, রাজধানীর ডেমরার দারুন্নাজাত ছিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ আজাদ হোসাইন ছালেহী। ইসলামপুর শাহ্ ইয়াছিন ফাজিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ আমীর হোছাইন, মাওলানা মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
২য় দিন গতকাল ফুরফুরা শরিফের পীরে কামেল মাওলানা আব্দুল্লাহিল মারুফ ছিদ্দিকী আল কোরাইশী প্রধান মেহমান ছিলেন। ওয়াজ করেন, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ডা. মুফতি কাফিল উদ্দীন সরকার ছালেহী। ঢাকা দারুন্নাজাত ছিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আ. খ. ম. আবু বকর সিদ্দিক। চাঁদপুর মান্দারি সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নেছার আহমদ, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ উবায়দুর রহমান খান নদভী, কুমিল্লা শাসনগাছা ওয়াপদা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ বেলাল হোছাইন চিশতী। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্বারী হাফেজ রাকিবুল ইসলাম, ঢাকা। এছাড়াও আরো অনেক ওলামায়ে কেরাম তাশরিফ আনেন।
এন্তেজামিয়া কমিটির পক্ষে মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন, সফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী, মো. জোবায়ের হোসাইন, আবুজাফর মো. ছালেহ, আলহাজ মো. আবুল খায়ের প্রমুখ।
দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসায় বার্ষিক সবক প্রদান ও মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সেই সাথে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা একে এক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি এ এইচ এম আনোয়ার মোল্লা, গভর্নিং বডির সদস্য সফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী, হেড মোহাদ্দেস মাওলানা মমিনুল হকসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।
দুপুরে ফরিদগঞ্জ কেরোয়া হোসনে আরা বেগম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশে আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন বক্তব্য রাখেন এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীলিপ কুমার রাউতের সভাপতিত্বে অভিভাবক সমাবেশে দোয়া পরিচালনা করেন, ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা একে এক মাহবুবুর রহমান। কুরআন তেলাওয়াত করেন ছাত্রী ফারজানা আক্তার, মানপত্র পাঠ করেন তানজিনা আক্তার। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী, তোফায়েল আহম্মদ, মো. শাহজালাল, দৈনিক ইনকিলাবের আইটি প্রধান সৈয়দ এ রহমান, সহকারী শিক্ষক রাজিব কুমার মজুমদারসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।